Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
দু’দিনে সেনসেক্স পড়ল ৩৭৮

কর্মী বোনাস খাতে ২৬২৮ কোটি, ২৭% মুনাফা কমলো টিসিএসের

বাজারের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি প্রমাণিত হল। অন্তত টিসিএসের আর্থিক ফলাফলের ক্ষেত্রে তো বটেই। দেশের বৃহত্তম তথ্যযুক্তি সংস্থা টিসিএস বৃহস্পতিবার জানাল, তাদের মুনাফা চলতি আর্থিক বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে আগের বারের থেকে ২৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। এ বার বেশ কিছু শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার আর্থিক ফলাফল তেমন ভাল হবে না বলেই আশঙ্কা ছিল শেয়ার বাজার মহলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৫৩
Share: Save:

বাজারের আশঙ্কাই শেষ পর্যন্ত সত্যি প্রমাণিত হল। অন্তত টিসিএসের আর্থিক ফলাফলের ক্ষেত্রে তো বটেই। দেশের বৃহত্তম তথ্যযুক্তি সংস্থা টিসিএস বৃহস্পতিবার জানাল, তাদের মুনাফা চলতি আর্থিক বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে আগের বারের থেকে ২৭ শতাংশ কমে গিয়েছে। এ বার বেশ কিছু শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার আর্থিক ফলাফল তেমন ভাল হবে না বলেই আশঙ্কা ছিল শেয়ার বাজার মহলে।

মার্চ মাসে শেষ হওয়া চতুর্থ ত্রৈমাসিকে টিসিএসের মুনাফা হয়েছে ৩৮৫৮.২ কোটি টাকা। অবশ্য এ বার সংস্থা কর্তৃপক্ষ তাঁদের কর্মীদের বিশেষ বোনাস দিয়েছেন। বাজারে প্রথম শেয়ার ছাড়ার ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ওই বোনাস দেওয়া হয়েছে। এই বোনাস দেওয়ার জন্য তাদের খরচ গুনতে হয়েছে ২৬২৮ কোটি টাকা। সংস্থার দাবি, ওই বোনাস বাবদ খরচের জন্যই তাদের মুনাফা কমেছে।

তবে বৃহস্পতিবার টিসিএসের আর্থিক ফলাফল ঘোষিত হওয়ার আগেই শেয়ার বাজারে লেনদেন বন্ধ হয়ে যায়। যার ফলে এর প্রভাব শেয়ার বাজারে কতটা, কী পড়ে, তা বোঝা যায়নি। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, আজ শুক্রবার সপ্তাহের শেষ লেনদেনের দিনে তার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে শেয়ার দরে।

এ দিন অনিশ্চিত বাজারে সেনসেক্সের পতন হয়েছে ১৩৩.৬৫ অঙ্ক। এই নিয়ে টানা দু’দিন সূচক পড়ল। এবং ওই দু’দিনে সেনসেক্স সাকুল্যে পড়ল ৩৭৮.৪০ পয়েন্ট। বৃহস্পতিবার বাজার বন্ধের সময়ে সূচক দাঁড়ায় ২৮,৬৬৬.০৪ অঙ্কে।

এ দিকে, এ দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম অবশ্য আরও ৬ পয়সা বেড়ে গিয়েছে। বাজার বন্ধের সময়ে এক ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬২.৩০ টাকায়।

বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থা তাদের চলতি আর্থিক বছরের চতুর্থ ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশ করতে শুরু করেছে। এই সব ফলাফল সাধারণ ভাবে ভাল হবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে লগ্নিকারীদের মনে। ঝুঁকি এড়াতে তাঁদের মধ্যে অনেকেই মুনাফার টাকা ঘরে তুলে নিচ্ছেন। বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে, এর জন্যই শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়ে গিয়েছে, যার জেরে দ্রুত নামতে শুরু করেছে সূচক।

অনিশ্চিত বাজারের স্বাভাবিক নিয়ম অনুযায়ী এ দিনও সূচক দ্রুত ওঠা-নামা করেছে। দিনের শুরুতে সেনসেক্স বেশ খানিকটা উঁচুতেই ছিল। কিন্তু পরের দিকে মুনাফার টাকা তুলে নিতে লগ্নিকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির ধুম পড়ে যাওয়ার ফলে তা দ্রুত নেমে আসতে থাকে। দিনভর লেনদেনের পুরোটা সময় জুড়েই সেনসেক্স ওঠানামা করেছে প্রায় ৩০০ পয়েন্ট।

তবে এই পরিস্থিতিতেও ভারতের শেয়ার বাজার নিয়ে কিন্তু আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে এবং স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখের মতে, ‘‘সূচকের এই পতন সাময়িক। ভারতের আর্থিক বুনিয়াদ এখনও বিশ্বের অনেক অগ্রণী দেশের তুলনায় মজবুত। ফলে বিনিয়োগের ক্ষেত্র হিসাবে ভারত যে লগ্নিকারীদের আকৃষ্ট করবে, এতে কোনও সন্দেহ নেই।’’

ভারত যে এখনও বিশেষ করে বিদেশি লগ্নিকারীদের কাছে প্রিয় লগ্নির জায়গা, তা তাদের বিনিয়োগের বহর থেকেই খুব পরিষ্কার। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর অনুযায়ী, ওই সমস্ত সংস্থা গত বুধবারও ভারতের শেয়ার বাজারে ১০৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

একই সঙ্গে অবশ্য অজিতবাবু এটাও জানিয়ে দিয়েছেন যে, এখন লগ্নিকারীদের উচিত দীর্ঘ মেয়াদে বিনিয়োগ করা। তা হলে মুনাফা করার সম্ভাবনা অনেকটাই উজ্জ্বল হবে বলে মনে
করেন তিনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE