ফাইল চিত্র।
প্রতিটি গরিব পরিবারে রান্নার গ্যাস পৌঁছতেই প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা এনেছিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। বাড়ির মহিলাদের ধোঁয়ার দূষণজনিত রোগ থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি যার উদ্দেশ্য ছিল গাছ কাটা রোখা। কিন্তু কেন্দ্র গ্যাসে ভর্তুকি তুলতে প্রতি মাসে সিলিন্ডারের দাম ৪ টাকা করে বাড়ানোর কথা ঘোষণা করতেই প্রকল্পটিকে ঘিরে ধরেছে অনিশ্চয়তা।
অসন্তোষ ছড়িয়েছে উজ্জ্বলায় নতুন গ্যাস সংযোগ নেওয়া মানুষের মধ্যে। তা ছাড়তে চাইছেন অনেকেই। গ্যাস সরবরাহের বিভিন্ন অফিসে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। সব মিলিয়ে প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়ার আশঙ্কা দানা বাঁধছে গ্যাস ডিলারদের মনে।
উজ্জ্বলার আওতায় গ্যাস সংযোগ খাতে ১৬০০ টাকা লাগে না। পরে সিলিন্ডার নেওয়ার সময়ে ভর্তুকির টাকা থেকে ধাপে ধাপে মেটানো যায় প্রথম বার গ্যাস কেনার খরচ। এই প্রকল্পে দেশে মোট গ্রাহক এখন ২.৬৪ কোটি। এ রাজ্যে ৪১.১৯ লক্ষ। কিন্তু ভর্তুকি তোলার কথা ঘোষণার পর থেকেই সংযোগ ছাড়তে বিভিন্ন গ্যাসের দোকানে ভিড় করছেন উজ্জ্বলা গ্রাহকেরা। এলপিজি ডিস্ট্রিবিউটর্স অ্যাসোসিয়েশনের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক দেবব্রত পালের আশঙ্কা, ‘‘ভর্তুকি উঠলে উজ্জ্বলার গ্রাহকেরা বেশি সমস্যায় পড়বেন। নতুন সিলিন্ডার নেবেন না। প্রথম কেনা গ্যাসের টাকাও শোধ হবে না।’’
রাজ্যে আইওসি-র ৬১%, বিপিসিএল ১৭% ও এইচপিসিএলের ২২% গ্রাহক। হিসেব বলছে, রান্নার গ্যাসের দাম উত্তরোত্তর বাড়ায় ইতিমধ্যেই ধাক্কা খেতে শুরু করেছে উজ্জ্বলা। বছরে প্রাপ্য ১২টি ভর্তুকির সিলিন্ডারের জায়গায় ওই প্রকল্পে গড়ে ৬টি নিয়েছেন গ্রাহকেরা। এর মধ্যে ৩০% একটির পরে আর নেননি।
উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরের টুম্পা পাত্র যেমন বললেন, ‘‘কষ্ট হলেও, গাছের ডাল, পাটকাঠি দিয়ে রান্না করলে খরচ কম। সিলিন্ডারের অনেক দাম। শুধু বর্ষায় বাইরে যাওয়া, শুকনো ডাল পাওয়া সমস্যা বলে একটি সিলিন্ডার নিয়েছি।’’ বসিরহাটের নেহালপাড়ার জাবেদা বিবি-র বক্তব্য, ‘‘এখনই প্রায় ৫৫০ টাকা দিয়ে সিলিন্ডার নিতে কষ্ট হচ্ছে। ভর্তুকি উঠলে ছাড়তেই হবে।’’
আইওসি-র জিএম অমলেশ দত্ত বলেন, ‘‘উজ্জ্বলায় সিলিন্ডার নেওয়ার হার কম ঠিকই। তবে নতুন ব্যবস্থা বুঝতে সময় লাগে।’’ দমদমের এক ডিলারের ক্ষোভ, ‘‘ভর্তুকি তোলা নিয়ে সবাই মুষড়ে পড়েছেন। উজ্জ্বলার গরিবদের তো আরও খারাপ অবস্থা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy