খেলনা, আসবাব, বাসনপত্র থেকে শুরু করে সস্তার মোবাইল। ভারতের বাজার আক্ষরিক অর্থেই ছেয়ে গিয়েছে চিনা পণ্যে। অবস্থা এমনই যে, চিনা আলোর দাপটে দীপাবলীর সময় ব্যবসা লাটে ওঠার দশা সাবেকি প্রদীপ, মোমবাতির। এ বার রঙের উৎসব দোল বা হোলিতেও বাজার দাপিয়েছে চিনের রং আর পিচকারি। এতটাই যে, তার জেরে ৭৫% ব্যবসা হারাতে হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন দেশীয় রং ও পিচকারি নির্মাতারা।
সংশ্লিষ্ট নির্মাতাদের দাবি, চিনা পণ্য গুণমানের সঙ্গে আপোস করে যে ভাবে কম দামে তা বিক্রি করে, তার সঙ্গে এঁটে উঠতে পারছেন না তাঁরা। এ ভাবে চিনা পণ্যের কাছে বাজার হারালে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প কী ভাবে সফল হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে অ্যাসোচ্যামও।
বণিকসভাটির দাবি, প্রতি বছর ৫০০ টন আবির তৈরি করেন প্রায় ৫,০০০ নির্মাতা। এ বছর ‘চিনা আক্রমণের’ মুখে পড়ে মোটা লোকসান হয়েছে তাঁদের। অ্যাসোচ্যাম কর্তা ডি এস রাওয়াত বলেন, ‘‘দেশি রং ও পিচকারি নির্মাতারা ৭৫% ব্যবসা হারিয়েছেন। প্রতিযোগিতায় টিকতে পারেননি।’’ বণিকসভাটির দাবি, স্থানীয় ও চিনা রঙের মধ্যে দামের ফারাক ৫৫%। একই ছবি পিচকারি আর হোলির খেলনার বাজারেও।
রাওয়াতের অভিযোগ, সস্তার পণ্যে বাজার ছেয়ে দিতে মানের সঙ্গে আপোস করে চিনা সংস্থাগুলি। তাই সেগুলি ব্যবহারের পরে রাসায়নিক বিষক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু ক্রেতারা সেই বাছবিচার না করে কম দামের টানে ছুটছেন। মুশকিলে পড়ছে দেশি সংস্থাগুলি।
বাজার দখলে চিনা নির্মাতাদের অস্ত্র উদ্ভাবনের কৌশলও। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাবেকি পিচকারি এ বছর বাজারে সে ভাবে জায়গাই পায়নি। তার জায়গায় বাজার দখল করেছে হাঙর বা ডাইনোসরমুখো পিচকারি। ছোটগুলির মধ্যে আবার বাচ্চাদের মন টেনেছে জনপ্রিয় কার্টুন ডোরেমন, ছোটা ভীম ও টম অ্যান্ড জেরির মডেল। ডোরেমনের নাক, ভীমের হাত বা মিকি মাউজের পেট থেকে রং ছড়ানো স্বাভাবিক ভাবেই মনে ধরেছে কচিকাঁচাদের। চিনের ‘দৌলতে’ই কয়েক বছর ধরে উজ্জ্বল কমলা, নীল, বেগুনি থেকে শুরু করে সাদা রং ও আবির পাওয়া যাচ্ছে। এ বার সেই তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে।
অভিযোগ, অধিকাংশ চিনা রংয়ের উপাদান ক্ষতিকারক। পিচকারির প্লাস্টিক নিম্নমানের। কেন্দ্রের কাছে মান নিয়ে তাই কড়া নজরদারির আর্জি জানিয়েছে অ্যাসোচ্যাম।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy