মুকেশের এই সৌজন্যে যারপরনাই আপ্লুত অনিল। ছবি: সংগৃহীত।
পুরনো বিবাদ ভুলে ভাইয়ের বিপত্তিতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন দাদা। মিটিয়ে দিলেন ভাইয়ের কোটি কোটি টাকার বকেয়া। এক-দু’লাখ নয়, বকেয়ার পরিমাণ ছিল ৫৫০ কোটি। ভাই অনিল অম্বানীর সেই বিপুল পরিমাণ আর্থিক বকেয়া মিটিয়ে দিলেন দাদা মুকেশ অম্বানী।
মুকেশের এই সৌজন্যে যারপরনাই আপ্লুত অনিল। নিজের সংস্থা রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস-এর তরফে একটি বিবৃতি জারি করে মুকেশ ও তাঁর স্ত্রী নীতা অম্বানীকে ধন্যবাদও দিয়েছেন তিনি। সোমবার সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই বিবৃতিতে তিনি লিখেছেন, “এই বিপদের সময়ে আমার পাশে দাঁড়ানোর জন্য দাদা-বৌদি মুকেশ ও নীতাকে আমার আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থা রাখা এবং এই সময়োচিত সৌজন্যের জন্য ধন্যবাদ। আমি এবং আমার পরিবার কৃতজ্ঞ যে আমরা অতীত ভুলে এগিয়ে গিয়েছি, এই সৌজন্যবোধে আমি অভিভূত।”
সোমবার রিলায়্যান্স কমিউনিকেশস-এর চেয়ারম্যান অনিল অম্বানী জানিয়েছেন, সুইডিশ টেলিকম সংস্থার দেনা মিটিয়ে দিয়েছে মুকেশ অম্বানীর সংস্থা। ওই বিবৃতিতে তিনি আরও লিখেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৫৫০ কোটি টাকার বকেয়া সুদ সমেত মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এ দিন সুইডিশ সংস্থা এরিকসনকে সুদ-সহ প্রায় ৫৮০ কোটি টাকা দিয়েছে রিলায়্যান্স। এর ফলে জেলযাত্রা এড়াতে পারলেন অনিল অম্বানী। ২০১৪ সালে সুইডিশ সংস্থা এরিকসনের সঙ্গে একটি চুক্তি হয়েছিল রিলায়্যান্সের। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ৭ বছরের জন্য এ দেশে রিলায়্যান্সের টেলিকম নেটওয়ার্ক সামলানোর ভার হাতে পায় এরিকসন। কিন্তু, সে বছর থেকেই বকেয়া ১৫০০ কোটি টাকা পাওনা না মেটানোয় রিলায়্যান্সের বিরুদ্ধে ন্যাশনাল কোম্পানি ল অ্যাপীলেট ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলএটি)-এর দ্বারস্থ হয় এরিকসন। সেই মামলার জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শেষমেশ ১৫০০ কোটি টাকার পরিবর্তে ৫৫০ কোটিতে গোটা বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ায় রফা হয় দুই সংস্থার মধ্যে। গত ৩০ মে-তে রিলায়্যান্সকে ১২০ দিনের মধ্যে ওই বকেয়া টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত। তবে তা মেটাতেও গড়িমসি ছিল রিলায়্যান্সের। এর পর ফের আদালতে যায় এরিকসন। ফেব্রুয়ারিতে ওই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন অনিল। আদালত নির্দেশ দেয়, ১৯ মার্চের মধ্যে বকেয়া না মেটালে জেলে যেতে হবে অনিল অম্বানীকে। তবে এক দিন বাকি থাকতেই সেই বকেয়া মিটিয়ে দিলেন অনিল। সৌজন্যে, দাদা মুকেশ অম্বানী।
আরও পড়ুন: জেলে যেতে হচ্ছে না অনিল অম্বানীকে, এরিকসনের বকেয়া ৪৬২ কোটি মেটাল রিলায়্যান্স
আরও পড়ুন: ভারতের বাজারে তাদের সব থেকে কম দামের ফোন নিয়ে আসছে রেডমি, প্রকাশ আগামিকাল
২০০২ সালে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ-এর প্রতিষ্ঠাতা ধীরুভাই অম্বানীর মৃত্যুর পর তাঁর দুই ছেলে অনিল ও মুকেশের সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে। এক সময় ওই গোষ্ঠীর ব্যবসার দায়িত্ব ভাগাভাগি করে দেখতে শুরু করেন অনিল ও মুকেশ। তবে এ দিন মুকেশের সৌজন্যে অতীত ভুলে যেন এগিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেখা গেল।
(মূল্যবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধি - অর্থনীতিরসব খবর বাংলায়পেয়ে যান আমাদেরব্যবসাবিভাগে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy