২১ নভেম্বর ২০২৪
Saini Saha

কেকের স্বাদেই বিশ্বের মন জয় করেছেন সাইনি সাহা

সাইনি মনে করেন প্রতিটি কেকের মধ্যে নিজস্বতা থাকা উচিত। গ্রাহকরা ঠিক যেমন নকশার কেক চান, সাইনি কেকের মধ্যে ঠিক তেমন নকশাই ফুটিয়ে তোলেন নিজের দক্ষতায়। কখনও কোনও কেকের নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক বা দুই লাইন জুড়ে দেওয়া হয়।

Saini Saha

সাইনি সাহা

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ১৯:৩৩
Share: Save:

জন্মদিন হোক বা বড়দিন, কিংবা শেষ পাতের ডেজার্ট — কেকের প্রতি ভালবাসা যেন চিরন্তন। সেই ভালবাসাকে সঙ্গী করেই শহরের আনাচে কানাচে তৈরি হয়েছে বহু বেকারি। পরিসংখ্যান বলছে, গত কয়েক বছরে বেকারি শিল্পের অগ্রগতি চোখে পড়ার মতো। সাম্প্রতিক কালে তৈরি হওয়া এই বেকারিগুলির মধ্যে আমজনতার নজর কেড়েছে ‘মিয়ামস কেকস’। মনপসন্দ পেস্ট্রি থেকে প্রিয়জনের জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা কেক- রকমারি পসরা নিয়ে হাজির সংস্থার কর্ণধার সাইনি সাহা।

২০১৬-য় শুরু। ব্যবসায় প্রাথমিক ভাবে খানিকটা বেগ পেতে হলেও বর্তমানে ‘মিয়ামস কেকস’ বেশ পরিচিত নাম। কেকের প্রতি মানুষের ভালবাসার টান বেশ ভাল ভাবেই বুঝতে পেরেছিলেন সাইনি। আর সেই কারণেই গতে বাঁধা চাকরি ছেড়ে নিজের মতো করে গড়ে তুলেছেন এই সংস্থাকে।

মিয়ামস কেকস

মিয়ামস কেকস

সাইনির বড় হয়ে ওঠা এক সাধারণ পরিবারে। এমবিএ শেষ করে আর পাঁচ জন শিক্ষার্থীর মতোই শহরের একটি বহুল পরিচিত পাঁচতারা হোটেলে কাজ শুরু করেন তিনি। যদিও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই হোটেলের চাকরি তাঁর কাছে গতানুগতিক মনে হতে থাকে। সিদ্ধান্ত নেন যে নিজের জন্য কিছু একটা করতে হবে। কিন্তু কী করা যায়? এর পরেই সাইনি সিদ্ধান্ত নেন, কেকের দোকান করবেন। ছেড়ে দেন চাকরি। হোটেলে কাজ করার সুবাদে খানিকটা সুবিধাও হয়েছিল। শুরু হয়ে যায় ‘মিয়ামস কেকস’-এর যাত্রা।

ছেলেবেলা থেকেই আঁকার প্রতি ভালবাসা ছিল সাইনির। সেই অসম্পূর্ণ প্রেমের প্রতিচ্ছবিই যেন তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন এই বেকারি শিল্পে। বলা যায়, এই ভালবাসাই ‌আলাদা করে বৈচিত্র নিয়ে এসেছে ‘মিয়ামস কেকস’-এর তৈরি কেকগুলিতে। অসাধারণ নকশা এবং অনবদ্য স্বাদ — এই দু’য়ের মেলবন্ধনই এই বেকারিকে এক নিজস্ব পরিচিতি দিয়েছে। কোনও কেক জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বাংলা বর্ণমালা। ভাবনায় কখনও ভাষা দিবস, কখনও বা ফিফা বিশ্বকাপের থিম, কী নেই সেখানে!

মিয়ামস কেকস

মিয়ামস কেকস

সাইনি মনে করেন প্রতিটি কেকের নিজস্বতা থাকা উচিত। গ্রাহকরা ঠিক যেমন নকশার কেক চান, সাইনি কেকে ঠিক তেমন নকশাই ফুটিয়ে তোলেন নিজের দক্ষতায়। কখনও কোনও কেকের নকশার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এক বা দুই লাইন লেখা জুড়ে দেওয়া হয়। কখনও বা ফুটে ওঠে গ্রাহকের নিজের প্রতিচ্ছবি। সাইনির মতে, “গ্রাহকেরা প্রিয়জনের জন্য হামেশাই কাস্টমাইজড কেকের অর্ডার দিয়ে থাকেন। সেই প্রত্যেকটি কেকের মধ্যে নিজস্বতার খোঁজ করেন তাঁরা। বিশেষত এই ধরনের কেকগুলির এর সঙ্গে জুড়ে থাকে অসংখ্য অনুভূতি, আবেগ। আমরা চেষ্টা করি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সেই অনুভূতিকেই কেকের মধ্যে ফুটিয়ে তোলার। সঙ্গে জিভে জল আনা স্বাদ তো রয়েছেই। আমাদের এই প্রচেষ্টা এবং সঙ্গে স্বাদই আমাদের কেকের জনপ্রিয়তার মূল কারণ।”

শুরুটা কলকাতা থেকে হলেও এ শহর ছেড়ে এখন বিদেশের মাটিতেও নাম ছড়িয়েছে মিয়ামস্ কেকস -এর। বর্তমানে বিদেশ থেকেও বহু মানুষ কেকের অর্ডার দেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিনিয়ত আসে অর্ডার। এর জন্য কিন্তু গ্রাহকদেরই বাহবা দিয়েছেন সাইনি। তিনি মনে করেন, কোনও সংস্থার সুনাম ও সফলতার নেপথ্যে গ্রাহকদের অবদান অনস্বীকার্য। যেহেতু গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী তিনি কেক তৈরি করতে পেরেছেন, সেহেতু তার সংস্থারও ব্যাপ্তি ঘটেছে অভূতপূর্ব ভাবে। নজরকাড়া ডিজাইন তো বটেই, পাশাপাশি গুণগত মান এবং অতুলনীয় স্বাদই হয়ে উঠেছে এই সংস্থার তুরুপের তাস। জন্মদিন হোক অথবা ভ্যালেন্টাইনস ডে, বিবাহ বার্ষিকী হোক বা অন্য যে কোনও উদযাপন — এক লহমায় অনেকখানি আনন্দ বাড়িয়ে দেয় ‘মিয়ামস কেকস’ –এর কাস্টমাইজড কেকগুলি।

মিয়ামস কেকস

মিয়ামস কেকস

সাইনি সাহা এক কথায় আজকের নারীদের কাছে আত্মনির্ভরতার প্রতীক। গতে বাঁধা জীবন ও চাকরির চার দেওয়াল থেকে বেরিয়ে এসে যে ভাবে সাইনি নিজের ভালবাসা, শখকে পেশা হিসেবে গড়ে তুলেছেন, তা এক কথায় অবিস্মরণীয়। যে কোনও ক্ষেত্রেই নিজের ভাললাগাকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিতে চাই প্রচেষ্টা ও অসামান্য আত্মবিশ্বাস। নিজের স্বপ্নপূরণের খিদে আর পরিশ্রমের উপর ভর করেই সাইনি তাই আজ ‘সর্বজয়া’। তাঁর পথ চলার গল্প বহু মানুষের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থেকে যাবে।

এই প্রতিবেদনটি 'উই মেক আস' -এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

অন্য বিষয়গুলি:

Women's Day Sarbojoya Entrepreneur Women
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy