২১ নভেম্বর ২০২৪
Moumita Thakur

শিক্ষকতা থেকে সাহিত্যচর্চা, কেমন ছিল মৌমিতার স্বপ্নপূরণের যাত্রা?

অনেকের স্বপ্ন দিকভ্রান্ত হয়ে পড়ার ফলে বিকল্প কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে হয়। তবে মৌমিতা ঠাকুর নিজের ছোটবেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছেন শুধুমাত্র নিজের চেষ্টার জোরে।

Moumita Thakur

মৌমিতা ঠাকুর

এবিপি ডিজিটাল ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো
শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৩ ২২:০৩
Share: Save:

যে কোনও প্রজন্মের বেড়ে ওঠার যাত্রায় ওতপ্রোতভাবে যুক্ত থাকেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁরাই দায়িত্ব নিয়ে আগামীকে তৈরি করেন। মৌমিতা ঠাকুর তেমনই এক জন। মৌমিতার বেড়ে ওঠা মফসসলে। ছেলেবেলার অধিকাংশ সময় কেটেছে পশ্চিম বর্ধমানের আসানসোলে। সেখানকার লরেটো কনভেন্ট স্কুলে পড়ুয়া জীবন শুরু। এর পরে স্থানীয় কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করেন। বর্তমানে তিনি সেন্ট ফ্রান্সিস অ্যাকাডেমি -তে ইংরেজির শিক্ষিকা।

ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার পাশাপাশি লেখালিখির প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল মৌমিতার। এক সময়ে ভেবেছিলেন বড় হয়ে লেখিকা হবেন। স্কুলজীবনে নিজের ডায়েরির পাতা জুড়ে থাকত নানা শব্দের খেলা। স্কুলে পড়ার সময়েই বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও পত্রপত্রিকায় তাঁর লেখা প্রকাশিত হয়। স্কুলের রুটিন, খেলাধুলো আর সাদা কাগজের লেখা বর্ণমালার ভিড়ে মৌমিতার জীবন চলছিল নিজের ছন্দেই।

খানিকটা বড় হওয়ার পরে বাচ্চাদের পড়াতে শুরু করেন মৌমিতা। যার শুরুটা ছিল নেহাত শখের বশেই। ধীরে ধীরে শিক্ষকতার প্রতি তীব্র আকর্ষণ জন্মায়। এই সময়েই মৌমিতা উপলব্ধি করেন যে লেখিকা নয়, বরং শিক্ষকতাই ক্রমশ তাঁর জীবনের লক্ষ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এ ভাবেই সময়ের ভেলায় চড়ে ক্রমে শিক্ষিকা হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু। স্কুলের বাচ্চাদের শুধুমাত্র পুঁথিগত শিক্ষার মধ্যেই আটকে রাখেননি তিনি। মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধের পাঠকেও পঠনপাঠনের অংশ হিসাবে মনে করে সেই শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের শিক্ষিত করে তুলছেন তিনি।

মৌমিতা ঠাকুর

মৌমিতা ঠাকুর

এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে ভাল শিক্ষিকা হিসাবে নিজেকে তুলে ধরাই মৌমিতার জীবনের ব্রত। অর্থনৈতিক স্বাধীনতার কারণে তো বটেই, নিজের পেশাকে ঘিরে তাঁর যে ভীষণ রকম আবেগ জড়িয়ে, তাঁর কথা থেকে কার্যত তা স্পষ্ট। এই প্রসঙ্গে মৌমিতা বলেন, “এক জন ভাল শিক্ষিকা হয়ে বাচ্চাদের জীবন গড়তে চাই আমি। তাদের মনোভাব পাল্টে দিতে চাই। এবং সর্বোপরি তাদের ভাল মানুষ করে তুলতে চাই।”

যেহেতু লেখালিখির সঙ্গে সখ্যতা ছিলই, তাই নারী স্বাধীনতা নিয়ে তাঁর বক্তব্যে উঠে এল সাহিত্যের প্রসঙ্গ। বললেন, “সেই বৈদিক যুগ থেকে নারীরা পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমস্ত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। আমরা যদি সাহিত্য ঘেঁটে দেখি, নারীরা অনেক কবি, লেখকদের উপন্যাসে উপরের সারিতে জায়গাও পেয়েছে।”

একজন প্রতিষ্ঠিত নারী হিসাবে আজকের দিনে সমাজে নারীদের অবস্থান নিয়ে তাঁর কী মতামত? উত্তরে মৌমিতা বলেন, “বিজ্ঞান হোক অথবা খেলার মাঠ, সর্বত্র আমরা নারীদের এগিয়ে থাকতে দেখি। তারা এতটাই শক্তিশালী এবং স্বয়ংসিদ্ধা, যে কিছু ক্ষেত্রে বঞ্চিত হলেও লড়াই করে নিজেদের স্থান করে নিয়েছে।”

ছোটবেলা থেকেই প্রত্যেকের কোনও না কোনও স্বপ্ন থাকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই স্বপ্নের লালন পালন চলে। তবে অনেকের স্বপ্নই খেই হারিয়ে ফেলে জীবনের বাঁকে। দিকভ্রান্ত হয়ে বিকল্প কোনও পেশার সঙ্গে যুক্ত হতে হয় অনেককে। তবে মৌমিতা ঠাকুর নিজের ছোটবেলার স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে পেরেছেন শুধুমাত্র নিজের চেষ্টার জোরে। তিনি মনে করেন, স্বপ্নের পিছনে ধাওয়া করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজন সঠিক দিশা এবং ধারাবাহিকতার। সমাজের অনেক মহিলার কাছে আজ তিনি উদাহরণ। তাই প্রকৃতপক্ষেই হয়ে উঠেছেন ‘সর্বজয়া’।

এই প্রতিবেদনটি 'উই মেক আস' -এর সঙ্গে আনন্দবাজার ব্র্যান্ড স্টুডিয়ো দ্বারা যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy