নির্বিচারে ধরপাকড় লেগেই আছে ইরানে। ছবি: সংগৃহীত।
ইরানে হিজাব-বিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া মহিলাদের উপর সরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। অভিযোগ, প্রতিবাদীদের নির্বিচারে আটক করা হচ্ছে দেশজুড়ে। পুলিশি হেফাজতে মহিলাদের উপর নেমে আসছে চরম অত্যাচার। বহু ক্ষেত্রে মহিলারা যৌন নির্যাতন, এমনকি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন বলে দাবি সংবাদমাধ্যমে।
মাস দুয়েক আগে মাহশা আমিনির মৃত্যুর পর থেকেই ইরানের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দলে দলে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন সাধারণ মানুষ। হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ মাহশাকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। তাই প্রতিবাদে নেমে ইরানের মেয়েরা হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে মাহশা-মৃত্যুর বিরোধিতা করেছেন। ইরানে এই সমস্ত আন্দোলন কড়া হাতে দমন করেছে সরকার।
বিক্ষোভকারীদের উপর প্রকাশ্যে লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ থেকে শুরু করে নির্বিচারে ধরপাকড় লেগেই আছে ইরানে। তবু বিক্ষোভ থামানো যায়নি। অভিযোগ, প্রতিবাদী মহিলাদের ধরে নিয়ে গিয়ে যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। ভয় দেখিয়ে আন্দোলন দমন করতে চাইছে ইরান সরকার। আন্তর্জাতিক মহলেও ইরানের এই নীতি সমালোচিত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ইরানে রাত-বিরেতে যে কোনও বাড়িতে ঢুকে পড়েন সরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা। নির্বিচারে তল্লাশি চালানো হয়। ইচ্ছা করলেই পরিবারের যে কোনও সদস্যকে গ্রেফতার করে নেওয়া হয়। তার পর পুলিশি হেফাজতে চলে অত্যাচার।
ইরানে বিদেশী সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দেশের অভ্যন্তরেও প্রায়সই ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিবাদীদের এক জোট হওয়া থেকে বিরত রাখতেই ইন্টারনেটের উপর কোপ পড়ে, দাবি আন্দোলনকারীদের।
তবে ধরপাকড়, অত্যাচার সত্ত্বেও ইরানে বিক্ষোভ থামেনি। নানা ভাবে দেশের মানুষ সরকারি নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। সম্প্রতি কাতারে আয়োজিত ফুটবল বিশ্বকাপে জাতীয় সঙ্গীতের সময় মৌন থাকেন ইরানি ফুটবলাররা। সরকারের বিরুদ্ধে এ ভাবে তাঁরা প্রতিবাদ জানিয়েছেন। খেলোয়াড়দের এই অভিনব প্রতিবাদকে সমর্থন জানিয়েছেন খেলা দেখতে আসা ইরানি দর্শকরাও। তবে একই সঙ্গে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপের ম্যাচ দেখার সময় উপস্থিত ছিলেন ইরানের কট্টর ইসলামপন্থী সরকারের সমর্থকরাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy