কিম জং উনের হুমকির পর আরও উত্তপ্ত কোরীয় উপদ্বীপ। —ফাইল চিত্র।
আমেরিকা কোনও প্ররোচনা দিলেই পরমাণু হামলা চালানো হবে। এমনই হুমকি দিল উত্তর কোরিয়া। মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপ উত্তর কোরিয়ার দিকেই এগোচ্ছে। বার বার সতর্ক করা সত্ত্বেও উত্তর কোরিয়া তাদের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করেনি। একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চলছে। খুব শীঘ্রই ষষ্ঠ পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটানোর তোড়জোড়ও নাকি চলছে। পিয়ংইয়ংকে চরম বার্তা দিতেই মার্কিন নৌবহর কোরীয় উপদ্বীপের দিকে যাচ্ছে বলে ওয়াশিংটন সাফ জানিয়েছে। তার প্রেক্ষিতেই উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম মঙ্গলবার জানিয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার মার্কিন ঘাঁটিতে নয়, সরাসরি মার্কিন ভূখণ্ডেই পরমাণু হামলা চালাতে পিয়ংইয়ং প্রস্তুত।
মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদপত্র রডং সিনমুন-এ জানানো হয়েছে, যে কোনও ধরনের মার্কিন আগ্রাসনের জবাব দিতে প্রস্তুত উত্তর কোরিয়া। সংবাদপত্রটিতে লেখা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার বিপ্লবী সেনাবাহিনী শত্রুপক্ষের সমস্ত গতিবিধির উপর নজর রাখছে। উত্তর কোরিয়া আক্রান্ত হতে পারে, এমন বুঝলেই পরমাণু হামলা চালানো হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় এবং প্রশান্ত মহাসাগরের বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত মার্কিন সামরিক ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালিয়েই উত্তর কোরিয়া ক্ষান্ত থাকবে না, আমেরিকার মূল ভূখণ্ডেও পরমাণু হামলা চালানো হবে, জানিয়েছে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদপত্র।
চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং সম্প্রতি আমেরিকা সফর করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হয়েছে। চিনফিং-এর সেই আমেরিকা সফরের মধ্যেই কিন্তু ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, চিন যদি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তা হলে আমেরিকা একাই পদক্ষেপ করবে। কথা মতোই পদক্ষেপ করেছে আমেরিকা। এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কম্যান্ডের একটি নৌবহর শনিবারই উত্তর কোরিয়ার দিকে রওনা দিয়েছে। প্যাসিফিক কম্যান্ডের মুখপাত্র কম্যান্ডার ডেভ বেনহ্যাম বলেছেন, ‘‘পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আমাদের উপস্থিতি এবং প্রস্তুতি নিশ্চিত করতেই কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ বেনহ্যাম আরও বলেছেন, ‘‘ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় বিপদ হল উত্তর কোরিয়া।’’ কিম জং উনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচিকে ‘‘বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং স্থিতিশীলতা ধ্বংসকারী’’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
চিন এবং উত্তর কোরিয়াকে চাপে রাখতে মার্কিন নৌসেনা মাঝেমধ্যেই পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে, দক্ষিণ চিন সাগরে বা জাপান সাগরে টহলদারি চালায়। কিন্তু এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার সম্বলিত স্ট্রাইক গ্রুপকে উত্তর কোরিয়ার দিকে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ বেশ বিরল। স্বাভাবিক ভাবেই এশিয়া-প্যাসিফিক জলভাগে উত্তেজনা এক ধাক্কায় অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy