চ্যাটজিপিটির সংস্থা ওপেনএআইয়ের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত গবেষক সুচির বালাজি। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
ক্যালিফর্নিয়ায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত এআই গবেষক সুচির বালাজির রহস্যমৃত্যু হয়েছে। স্যান ফ্রান্সিস্কোর ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর দেহ। তিনি চ্যাটজিপিটির স্রষ্টা সংস্থা ওপেনএআই-এর সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে ওই সংস্থা থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর সংস্থার বিরুদ্ধে একাধিক বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। ওপেনএআই ইন্টারনেটের ক্ষতি করছে বলেও দাবি করেছিলেন সুচির। তাঁর অভিযোগ উড়িয়ে দেয় সংস্থা। তার পরেই গত ২৬ নভেম্বর তাঁর মৃত্যুকে ঘিরে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
নিজের প্রাক্তন সংস্থার বিরুদ্ধে সুচিরের মূল অভিযোগ ছিল, ইন্টারনেটের কপিরাইট আইন ভাঙছে ওপেনএআই। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটজিপিটি। এই চ্যাটজিপিটি বাজারে এনেছে ওপেনএআই সংস্থা। সুচিরের অভিযোগ, সংস্থার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বিভিন্ন মডেলকে ভুল পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কপিরাইট থাকা উপাদানে না বলে হস্তক্ষেপ করছে ওপেনএআই। সেই উপাদান ব্যবহার করে এআই মডেলগুলিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। এই পদ্ধতিকে ক্ষতিকর বলে মন্তব্য করেছিলেন সুচির।
নিউ ইয়র্ক টাইম্সে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে সুচির বলেছিলেন, ‘‘আপনি যা বিশ্বাস করেন, তা যদি আমিও বিশ্বাস করি, আমাকে সংস্থা ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হবে।’’ ওপেনএআইয়ের কাজের পদ্ধতি নিয়ে নিজের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইটেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন সুচির। তবে তাঁর অভিযোগগুলি মানতে চায়নি সংস্থা। ওপেনএআই বিবৃতি দিয়ে বলেছিল, ‘‘ইন্টারনেটে সর্বসাধারণের জন্য যে সমস্ত তথ্য মেলে, আমরা সেগুলি ব্যবহার করেই আমাদের এআই মডেল তৈরি করে থাকি। আইন সমর্থিত পদ্ধতিতেই আমরা কাজ করি। আমরা মনে করি, আমাদের এই নীতি নির্মাতাদের জন্য ন্যায্য, উদ্ভাবকদের জন্য প্রয়োজনীয় এবং আমেরিকার বাজারে প্রতিযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’’
২০১৫ সালে ইলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান একসঙ্গে ওপেনএআই সংস্থার সূচনা করেছিলেন। পরে ২০১৮ সালে মাস্ক ওই সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন। তাঁর সঙ্গে অল্টম্যানের বিরোধ অনেক দিনের। সুচিরের মৃত্যুর পর তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেছেন মাস্ক। মৃত্যুর খবরটি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন কেবল একটি শব্দ— ‘হুমম’। তাঁর পোস্ট বিতর্ক আরও উস্কে দিয়েছে। ২৬ বছর বয়সি সুচির এই সংস্থায় যোগ দেন ২০২০ সালের নভেম্বরে। ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত সেখানে গবেষক হিসাবে কাজ করেন তিনি। চ্যাটজিপিটি নিয়ে তিনি কাজ করেছিলেন দেড় বছরের বেশি।
সুচিরের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলেই মনে করছে পুলিশ। স্যান ফ্রান্সিস্কো পুলিশের তরফে তা নিয়ে বিবৃতিও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, কেন মরতে হল সুচিরকে? আত্মহত্যার তত্ত্বই যদি সঠিক হয়, তবে কী এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল যে, তাঁকে এই সিদ্ধান্ত নিতে হল? তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল কি না, তা নিয়েও অনেকে প্রশ্ন তুলছেন। সে সব প্রশ্নের উত্তর অধরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy