মায়ানমারের ভূমিকম্প এবং তার পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করলেন আমেরিকার ভূবিজ্ঞানী জেস ফিনিক্স। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, মায়ানমারের ভূমিকম্পের ফলে বিপুল পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়েছে। ‘আফটারশক’ (ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পন) চলতে পারে কয়েক মাস পর্যন্ত। মাটির নীচে ইউরেশীয় পাতের সঙ্গে ভারতীয় পাতের সংঘর্ষের ফলেই এই ভূমিকম্প হয়েছে বলে জানান তিনি। তাঁর অনুমান, এখনও সংঘর্ষ থামেনি। ফলে ‘আফটারশক’ এখনই থামছে না।
শুক্রবার সকালে রিখটার স্কেলে মায়ানমারের কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। তার কয়েক মিনিটের মধ্যে ৬.৭ মাত্রার ‘আফটারশক’ হয়। এই জোড়া কম্পনেই কার্যত তছনছ হয়ে যায় ভারতের পূর্ব দিকের প্রতিবেশী দেশটি। তার পরের ১০ ঘণ্টায় টানা ১৪টি ‘আফটারশক’-এ কেঁপেছে মায়ানমার। শনিবারও কয়েক বার মৃদু কম্পন হয়েছে। আমেরিকার ভূবিজ্ঞানীর মতে, মায়ানমারের নীচে ভারতীয় এবং ইউরেশীয় পাতের সংঘর্ষের ফলে অন্তত ৩৩৪টি পরমাণু বোমার সমান শক্তি নির্গত হয়েছে। তার ফলেই এই ভূমিকম্প।
আরও পড়ুন:
মায়ানমারের ভূমিকম্পে শনিবার পর্যন্ত ১৬৪৪ জনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে সে দেশের সামরিক জুন্টা সরকার। আহতের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের বেশি। এখনও অনেকের খোঁজ মেলেনি। আমেরিকার জিওলজিক্যাল সার্ভের অনুমান, মায়ানমারে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়ে যেতে পারে ১০ হাজারের গণ্ডি। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন জুন্টা প্রধান আং লাইং। ভারত থেকে ১৫ টন ত্রাণসামগ্রী নিয়ে শনিবারই মায়ানমারে পৌঁছেছে বায়ুসেনার বিমান। আরও সাহায্যকারী বিমান মায়ানমারে পাঠানোর ভাবনা রয়েছে বিদেশ মন্ত্রকের। তবে গৃহযুদ্ধের কারণে সেখানে উদ্ধারকাজে সমস্যা হচ্ছে। মায়ানমারের বিস্তীর্ণ অংশ জুন্টা-বিরোধীদের নিয়ন্ত্রণে। সেই সমস্ত এলাকায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও এখনও স্পষ্ট নয়। জুন্টা-বিরোধী পিডিএফ জানিয়েছে, উদ্ধারকাজে গতি আনার জন্য শনিবার থেকে দু’সপ্তাহের যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা হবে।
মায়ানমারের কম্পনের ফলে কেঁপেছে প্রতিবেশী তাইল্যান্ডও। সেখানকার রাজধানী ব্যাঙ্ককে ভূমিকম্পের ফলে একটি ৩০ তলার ভবন ভেঙে পড়েছে। সেই ধ্বংসস্তূপে বহু শ্রমিক আটকে পড়েন। এখনও পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেছে ব্যাঙ্কক প্রশাসন। নিখোঁজ ৭০-এর বেশি।