পরমাণু চুক্তি ঘিরে উত্তেজনার আবহে আমেরিকার সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করল ইরান। সংবাদ সংস্থা এপি জানিয়েছে, প্রথম দফার ওই বৈঠকের পরে দু’পক্ষই আরও আলোচনার জন্য সহমত হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই ফের বৈঠকে বসতে পারেন আমেরিকা এবং ইরানের প্রতিনিধিরা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম দুই দেশের প্রতিনিধিরা বৈঠক করলেন। পরমাণু চুক্তি নিয়ে ট্রাম্প ইতিমধ্যে হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন ইরানকে। ট্রাম্প জানিয়েছেন, আলোচনা ব্যর্থ হলে ইরানের উপর হামলা চালানো হতে পারে।
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। অথচ ২০১৮-য় সেই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসেন ট্রাম্প। এর পর গত বছরের শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জের পরমাণু বিষয়ক নজরদারি সংস্থা ‘ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সি’ (আইএইএ)-র একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ফের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি শুরু করেছে ইরান। তাদের কাছে ৬০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম রয়েছে। এর পরেই নড়েচড়ে বসে বিশ্বের তাবড় শক্তিধর দেশগুলি।
ইরান-ইজ়রায়েল যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি নিরাপত্তা পরিষদে খোলা চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দেয়, প্রয়োজনে ইরানের পরমাণু অস্ত্রধর দেশ হয়ে ওঠা আটকাতে তারা সব ধরনের আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে প্রস্তুত। চিন্তা বাড়ে আমেরিকারও। যদিও তেহরানের তরফে বার বারই জোর দিয়ে দাবি করা হয়েছে যে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু মাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং অন্যান্য শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যেই পরিচালিত হচ্ছে। তবে এ সব যুক্তিতে চিঁড়ে ভেজেনি। সেই আবহে শনিবার প্রথম বার পরমাণু চুক্তি নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে বৈঠকে বসল ইরান।
আরও পড়ুন:
চলতি সপ্তাহেই ট্রাম্প বলেছিলেন, পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে চুক্তিতে পৌঁছোনোর জন্য হাতে ‘খুব বেশি সময় নেই’। যদি আলোচনা থেকে কোনও সমাধানসূত্র না মেলে, সে ক্ষেত্রে ইরানের উপর সামরিক চাপও বাড়াতে পারে আমেরিকা। এর কোনও বিকল্প আছে কি না জানতে চাইলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘না! প্রয়োজনে অবশ্যই সামরিক পদক্ষেপ করবে আমেরিকা। সেই হামলায় আমেরিকার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নেতৃত্ব দেবে ইজ়রায়েলও।’’