খুলনা থেকে বার্তা দিতে শহরে সরিফুল ও বাহারুল। নিজস্ব চিত্র
কতটা পথ পাড়ি দিলে মাদকের বিরুদ্ধে গণ-সচেতনতা গড়ে তোলা যেতে পারে? সেই উত্তরের অপেক্ষা না-করে ও-পার বাংলার রূপসাপাড় থেকে সাইকেলে এ-পার বাংলার গঙ্গাতীরে পৌঁছেছেন দুই যুবক। উদ্দেশ্য একটাই, মাদক-বিরোধী বার্তা দুই বাংলায় পৌঁছে দেওয়া।
সীমান্ত পেরিয়ে তিন দিনে খুলনা থেকে কলকাতা পর্যন্ত ৩০০ কিলোমিটারেরও বেশি পথ সাইকেলে পা়ড়ি দিয়েছেন বছর তিরিশের দুই যুবক শেখ সরিফুল ইসলাম হিরণ এবং গাজী বাহারুল ইসলাম। সাইকেলে কলকাতা, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং হাওড়ার বিভিন্ন অঞ্চলে মাদক-বিরোধী বার্তা দিয়ে বুধবার ফের সাইকেলেই দেশে ফেরার পথ ধরেছেন তাঁরা।
সরিফুল, বাহারুল দু’জনেরই বাড়ি খুলনায়। ২৫ অগস্ট খুলনা সংলগ্ন রূপসা নদীর খান জাহান আলি সেতু থেকে যাত্রা শুরু করেন তাঁরা। প্রথম দিন পাড়ি দেন যশোর পর্যন্ত। পরের দিন বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত পেরিয়ে রাতে পৌঁছন বারাসতে। তৃতীয় দিন, সোমবার দুপুরে পৌঁছন কলকাতা-হাওড়া রবীন্দ্র সেতুতে। পরের দু’দিন, মঙ্গল ও বুধবার বেহালা, বিষ্ণুপুর, বেলুড় ও বালির বিভিন্ন অঞ্চলে সাইকেলে ঘুরে মাদক-বিরোধী বার্তা দিয়েছেন তাঁরা। তার পরে কলকাতা থেকে রওনা হয়ে গিয়েছেন বাংলাদেশের উদ্দেশে।
সরিফুল ও বাহারুল দু’জনেই বাংলাদেশের ব্রজলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। দু’জনের নেশা সাইকেল চালানো। পড়াশোনা শেষ করে খুলনাতেই রেস্তরাঁ ব্যবসা শুরু করেন দু’জনে। তাঁদের রেস্তরাঁয় পাওয়া যায় নানা রকম দেশি-বিদেশি পদ। রাস্তা আর রসনা দুই-ই তাঁদের প্রিয়। দু’জনেই ব্যবসা সামলে বেরিয়ে পড়েন সাইকেলে চড়ে। বিভিন্ন সামাজিক বার্তা নিয়ে বাংলাদেশের সব জেলা পাড়ি দেওয়া হয়ে গিয়েছে তাঁদের। তবে বিদেশে পাড়ি দেওয়া এই প্রথম। অন্যান্য দেশেও সাইকেলে পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছে আছে দুই বন্ধুর।
‘‘আবহাওয়া অনুকূল থাকলে দিনে ১০০ কিলোমিটারের বেশি পথ পাড়ি দেওয়া এমন কিছু নয়,’’ বললেন সরিফুল। দুই বন্ধুর প্রগাঢ় সাইকেল-প্রীতির কথা জানেন পাড়া-পড়শিরা। বছর দেড়েক আগে, সরিফুলের বিয়ের সময় জনা তিরিশ বরযাত্রী পাড়ি দিয়েছিলেন সাইকেলে। তাঁদের মধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের কর্তারাও ছিলেন। বিবাহবার্ষিকীতেও সাইকেলে খুলনা শহর পরিক্রমার কর্মসূচি নেন সরিফুল। তাঁর স্ত্রী তাসনিয়া তব্বসুম শিউলিরও সায় আছে স্বামীর কর্মকাণ্ডে। বাহারুল একটু লাজুক। সব সাইকেল সফরে সরিফুলের প্রধান সহযোগী তিনিই।
“সাইকেলেই কাটে বেশির ভাগ সময়। সব দূরত্ব সাইকেল দিয়েই ঘোচাতে চাই আমরা,” ফেরার আগে বললেন সরিফুল ও বাহারুল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy