Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Pakistan

ডুবেছে বাড়ি, নেই খাবার, তবু ‘সম্মানরক্ষার্থে’ ত্রাণশিবিরে মহিলাদের যেতে দেয় না এই গ্রাম!

বিষয়টি শুনে অবাক লাগলেও, এমনটাই ঘটছে পাকিস্তানের ছোট্ট একটি গ্রাম বস্তি আহমদ দিনে। ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে যুঝছে গোটা পাকিস্তান। প্লাবিত পাকিস্তানের এই গ্রামটিও।

ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে যুঝছে পাকিস্তান। ছবি: রয়টার্স।

ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে যুঝছে পাকিস্তান। ছবি: রয়টার্স।

সংবাদ সংস্থা
ইসলামাবাদ শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৪৩
Share: Save:

চারপাশ ভেসে গেলেও, খাবারের অভাব দেখা দিলেও বাড়ি ছাড়া যাবে না। বাড়ি ছেড়ে ত্রাণশিবিরে গেলেই নাকি ‘সম্মানহানি’ হবে! আর তাই উদ্ধার করে ত্রাণশিবিরে নিয়ে যেতে চাইলেও সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছেন মহিলারা।

বিষয়টি শুনে অবাক লাগলেও, এমনটাই ঘটছে পাকিস্তানের ছোট্ট একটি গ্রাম বস্তি আহমদ দিনে। ভয়াবহ বন্যার সঙ্গে যুঝছে গোটা পাকিস্তান। প্লাবিত পাকিস্তানের এই গ্রামটিও।

মোট ৪০০ জনের বাস বস্তি আহমদ দিন গ্রামে। মূলত তুলো চাষ করে সংসার চালান তাঁরা। বালোচ সম্প্রদায়ের মানুষের বাস এই গ্রামে। চারপাশ যখন ভেসে গিয়েছে, এই গ্রামের মানুষদের উদ্ধার করতে এসেছিল প্রশাসন। কিন্তু কেউই বাড়ি ছাড়তে রাজি হননি। বিশেষ করে মহিলারা। তাঁদের যুক্তি এটা নীতিবিরুদ্ধ কাজ।

কেননা, ত্রাণশিবিরে মহিলারা গেলে সেখানে আরও অনেক পুরুষ থাকবেন, তাই সেই অচেনা পুরুষদের সঙ্গে ত্রাণশিবিরে কাটানো ‘সম্মানহানি’র শামিল। ঘরে দানাপানি দিন দিন কমছে, এর পর অভুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি এলেও তাঁরা যে বাড়ি ছাড়বেন না, সে কথা সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে স্পষ্ট জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা।

গ্রামেরই এক মহিলা শিরিন বিবিকে প্রশ্ন করা হয়, জলের মধ্যে থাকার চেয়ে ত্রাণশিবিরে আপনি তো অনেক সুরক্ষিত থাকবেন! তা হলে কেন সেখানে যাচ্ছেন না? এ প্রশ্নের উত্তরে শিরিন বিবি বলেন, “বাড়ি ছাড়ব কি না, তা সিদ্ধান্ত নেবেন বাড়ির বয়স্করা।”

ত্রাণশিবিরে যেতে না চাওয়া পরিবারগুলিকে খাবার জোগান দিচ্ছে প্রশাসন। একই সঙ্গে গ্রাম ছেড়ে ত্রাণশিবিরে যাওয়ারও অনুরোধ করা হচ্ছে। কিন্তু গ্রামবাসীদের কাছে ‘সম্মানরক্ষা’ আগে। মুহম্মদ আমির নামে এক গ্রামবাসী বলেন, “আমরা বালোচ। বালোচরা তাঁদের ঘরের মহিলাদের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয় না। না খেয়ে মরব, কিন্তু পরিবারের সদস্যদের ঘরের বাইরে যেতে দেব না।”

তাই ত্রাণশিবিরে না গিয়ে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে কাছাকাছি ত্রাণশিবিরগুলি থেকে ওষুধ এবং খাবার সংগ্রহ করে আনছেন বস্তি আহমদ দিনের বাসিন্দারা।

গ্রামের প্রবীণরা বলেন, “একমাত্র কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি হলেই মহিলাদের ঘরের বাইরে বেরোনোর অনুমতি দেওয়া হয়।” মুরিদ হুসেন বলেন, “২০১০ সালে যখন ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, সেই সময়েও আমরা ঘর ছাড়িনি। আমাদের বাড়ির মহিলাদের ত্রাণশিবিরে যেতে দিইনি। কেননা, এটা সম্মানরক্ষার বিষয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan Women flood
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy