লস অ্যাঞ্জেলসের আগুন নেভাতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। ছবি: রয়টার্স।
নতুন এলাকায় ছড়াতে শুরু করেছে লস অ্যাঞ্জেলসের আগুন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে ওয়েস্ট হিলসে নতুন করে আগুন ছড়াতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টি শেরিফ রবার্ট লুনা। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হচ্ছে যেন পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছে।’’ স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, আগুন এত দ্রুত গতিতে ছড়াচ্ছে যে, কয়েক ঘণ্টায় ৯০০ একর জমি নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, প্যাসিফিক পালিসাডেসে ১৯০০০ একর জমি পুড়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, আল্টাডেনায় আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে ১৩০০০ একর জমি। এই দুই জায়গায় বসতি এলাকা আগুনের গ্রাসে চলে যাওয়ায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে গিয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে অন্যত্র সরানো হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে জ্বলতে থাকা ক্যালিফর্নিয়ার আগুন-সঙ্কট নিয়ন্ত্রণে আনতে শেষমেশ ন্যাশনাল গার্ডকে ডাকা হয়েছে।
লস অ্যাঞ্জেলসের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা হল প্যাসিফিক প্যালিসাডেস এবং আল্টাডেনা। এখানে প্যারিস হিল্টন, অ্যান্থনি হপকিন্স, বিলি ক্রিস্টালের মতো বহু হলিউড তারকার বাসভবন রয়েছে। সেগুলিও আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছে। ১ লক্ষ ৮০ হাজার বাসিন্দাকে উদ্ধার করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলসের মেয়র কারন বাস জানিয়েছেন, নজিরবিহীন ঘটনা। এ রকম আগে কোনও দিন দেখেননি। চার দিকে শুধু আগুন আর আগুন। নতুন নতুন এলাকায় ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে সেই আগুন। দমকলকর্মীরা নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু আগুনের রূপ আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পালিসাডেস, আল্টাডেনা, পাসাডেনা এলাকা। দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অন্তত ৩ লক্ষ ঘরবাড়ি। প্রায় ১ লক্ষ বাসিন্দা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। মঙ্গলবার প্রশান্ত মহাসাগরের তীরবর্তী পালিসাডেস এলাকায় প্রথম দাবানলের আগুন ঢুকে পড়ে। বুধবার বিকেলের পরে তিনটি বড়সড় আগুন এগিয়ে আসতে থাকে শহরের দিকে। শুষ্ক, ঝোড়ো হাওয়ায় আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে। লস অ্যাঞ্জেলসের কোথাও কোথাও আগুনে-হাওয়ার গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার বা তারও বেশি। বিলাসবহুল প্রাসাদ আর বাংলোয় সাজানো লস অ্যাঞ্জেলস শহরের বহুলাংশ এখন পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে। ফুরিয়েছে জল। বিদ্যুৎহীন বিস্তীর্ণ এলাকা।
সাধারণত জুন এবং জুলাইয়ে দাবানলের ঘটনা ঘটে থাকে ক্যালিফর্নিয়ায়। অক্টোবর পর্যন্ত তার জের থাকে। কিন্তু এ বার ঘটনার ব্যতিক্রম লক্ষ করা গেল সেখানে। আর এখান থেকেই নানা রকম প্রশ্ন এবং সন্দেহের জন্ম নিচ্ছে। এখনও আগুন লাগার উৎস খুঁজে পাওয়া যায়নি। দক্ষিণ ক্যালিফর্নিয়ায় গত কয়েক মাস ধরে বৃষ্টির কোনও দেখা নেই। ফলে রুক্ষ্ম এবং শুষ্ক আবহাওয়া সেখানে। আমেরিকার খরাবিষয়ক দফতর জানিয়েছে, এ বছর ক্যালিফর্নিয়ার ৬০ শতাংশ অঞ্চল খরাপ্রভাবিত। গত বছর যা ছিল চার শতাংশের কম। এই রুক্ষ্ম আবহাওয়াই কি দাবানলের কারণ? সেই সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy