The mystery of a lonely human skull in an Italian cave solved dgtl
Mystery
নেই চোয়ালের একাংশ, খুবলে নেওয়া হয়েছে মাংস! সমাধান হল মাটির ৮৫ ফুট নীচে থাকা খুলির রহস্যের
মাটির ৮৫ ফুট নীচে নেমে গিয়েছে আঁকাবাঁকা পথ। সঙ্কীর্ণ। কোথাও কোথাও এতটাই সঙ্কীর্ণ যে মানুষের পক্ষে সেই পথে চলা অসম্ভব।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১০ মার্চ ২০২১ ০৯:৩১
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
মাটির ৮৫ ফুট নীচে নেমে গিয়েছে আঁকাবাঁকা পথ। সঙ্কীর্ণ। কোথাও কোথাও এতটাই সঙ্কীর্ণ যে মানুষের পক্ষে সেই পথে চলা অসম্ভব।
০২১৭
দুর্গম সে পথ কখনও হামাগুড়ি দিয়ে নামতে হয় তো কখনও স্পাইডারম্যানের মতো বেয়ে উঠতে হয়। এই সঙ্কীর্ণ এবং দুর্গম পথে ৮৫ ফুট নীচে নেমে খোঁজ মেলে রহস্যজনক এক মানবখুলির!
০৩১৭
২০১৫ সালে একদল গুহা অনুসন্ধানকারী এই খুলির খোঁজ পেয়েছিলেন। উত্তর ইটালির মার্সেল লবেন গুহার মধ্যে এই রহস্যজনক খুলির খোঁজ পান তাঁরা।
০৪১৭
বিস্ময়ের বিষয় ছিল, এমন একটি দুর্গম জায়গায় কোথা থেকে এবং কী ভাবে এই খুলি এসে হাজির হল? এই অনুসন্ধান ঘিরে সে সময় বিস্তর জলঘোলা হয়েছিল।
০৫১৭
অনেকেই মনে করেছিলেন, বহু আগে কোনও গুহা অনুসন্ধানকারী হয়তো গুহায় আটকে গিয়েছিলেন। খাবার, জল এবং অক্সিজেনের অভাবে ক্রমশ তিনি মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন।
০৬১৭
কিন্তু এত সহজে সেই ব্যাখ্যা মানা সম্ভব ছিল না। কারণ খুলিটুকু ছাড়া মানব কঙ্কালের আর কোনও অংশই আশেপাশে মেলেনি। খুলি রহস্যে বিস্তর মতবাদ সামনে আসে।
০৭১৭
অবশেষে ২০২১ সালে পৌঁছে সেই রহস্যের সমাধান হয়। ২০১৭ সাল থেকে খুলি নিয়ে গবেষণা শুরু করেছিলেন একদল বিজ্ঞানী। তাঁরাই রহস্যের সমাধান করেন।
০৮১৭
২০১৭ সালে প্রত্নতত্ত্ববিদ লুসিয়া কাস্টাগনার নেতৃত্বে ১২ জন অনুসন্ধানকারীর একটি দল ওই গুহায় প্রবেশ করেন। ২০১৫ সালে যে দলটি খুলিটির খোঁজ পেয়েছিল তাদের থেকে গুহার মানচিত্র ভাল করে বুঝে নিয়েই রওনা দিয়েছিলেন তাঁরা।
০৯১৭
২০১৫ সালে খোঁজ পেলেও গবেষণার সুবিধার্থে খুলিটি গুহার ভিতরে ওই স্থানেই রেখে এসেছিলেন সে সময়ের অনুসন্ধানকারীরা। ২০১৭ সালে অনুসন্ধানকারীর ওই দল খুলিটি গবেষণাগারে নিয়ে আসে। মাটির ৮৫ ফুট নীচে গুহার মধ্যে খুলিটির কাছে পৌঁছতে রীতিমতো বেগ পেতে হয়েছিল তাঁদের।
১০১৭
তার উপর খুলিটি এমন একটি জায়গায় ছিল যেখানে পৌঁছতে গুহার দেওয়াল বেয়ে অন্তত ৪০ ফুট উপরে উঠতে হয়। গুহার একটি খাঁজে আটকে ছিল খুলিটি।
১১১৭
গবেষণায় প্রথম যে বিষয়টি সামনে আসে সেটি হল খুলিটি এক মহিলা। যাঁর বয়স অন্তত ৫ হাজার বছর। একা মহিলা গুহার ভিতরে কী করছিলেন তা জানতে আরও উৎসুক হয়ে পড়েন গবেষকেরা।
১২১৭
খুলিটির কিছু অস্বাভাবিকত্ব চোখে পড়ে গবেষকদের। খুলিটিতে গর্ত ছিল। তার চোয়ালের অংশ ছিল না এবং ধারালো কিছু দিয়ে ওই খুলি থেকে মাংস খুবলে নেওয়া হয়েছিল। খুব নিখুঁত পর্যবেক্ষণের পর এই সিদ্ধান্তে আসেন তাঁরা।
১৩১৭
আরও জানা যায় যে, মৃত্যুর আগে দীর্ঘ দিন অপুষ্টিতে ভুগেছিলেন তিনি। ওই মহিলা কি কোনও কুসংস্কারের শিকার হয়েছিলেন? মৃত্যুর আগে কি তা হলে তাঁর উপর মর্মান্তিক নির্যাতন করা হয়েছিল। মৃত্যুর জন্য তাঁকে এই গুহায় আটকে রাখা হয়েছিল? আর তারপর মারা যাওয়ার পর কোনও রীতি মেনে তাঁর শরীর থেকে মাংস খুবলে নেওয়া হয়?
১৪১৭
এই সমস্ত প্রশ্ন ভিড় করে গবেষকদের মনে। ২০২১ সালে এসে অবশেষে রহস্যের কিছুটা সমাধান হয়।
১৫১৭
এই গুহার কিছু দূরে মানুষের অনেক হাড়গোড়ের সন্ধান পান তাঁরা। পরবর্তীকালে জানা যায়, সেটি ছিল অতীতের কবরস্থান। আগে তার পাশ দিয়েই জলের স্রোত এসে প্রবেশ করত গুহায়। ধর থেকে আলাদা হয়ে কোনওভাবে স্রোতে ভেসে গুহায় পৌঁছে যায় খুলিটি।
১৬১৭
তার পর স্রোতের সঙ্গেই কিংবা ভূমিধসের ফলে খুলিটি গুহার ভিতরে ওই দুর্গম জায়গায় আটকে যায়। এত দিন সকলের নজরের বাইরেই ছিল সেটি। ২০১৫ সাল নাগাদ ওই জায়গায় এসে পৌঁছলে তার সন্ধান মেলে।
১৭১৭
তবে কী ভাবে গুহার মধ্যে খুলিটি এসে পৌঁছলো সে রহস্যের সমাধান হলেও কেন তাঁর মৃত্যু হয়েছিল এবং কেনই বা তাঁর খুলি থেকে মাংস খুবলে নেওয়া হয়েছিল সে সমস্ত প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।