—প্রতীকী চিত্র।
ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশে। গণ-অভ্যুত্থানের সমর্থকদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে নিতে হবে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে। ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারের কর্তাব্যক্তিদের আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বাণিজ্যসচিব, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রকের সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং আমদানি-রফতানি কার্যালয়ের প্রধান নিয়ন্ত্রককে উদ্দেশ করে নোটিসটি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ভারতে ইলিশ রফতানি অযৌক্তিক। সরকারের এই সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের মানুষ ইলিশ খাওয়া থেকেবঞ্চিত হবে।
বাংলাদেশের মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছেন, “আমার দফতর নয়, এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রক।” ফরিদা এর আগে ঘোষণা করেছিলেন, “ভারতে এ বার ইলিশ যাবে না। দেশের মানুষকে সস্তায় ইলিশ খাওয়াতে সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” কিন্তু রফতানি না করলেও দেশের বাজারে ইলিশের দাম আকাশছোঁয়া থাকায় সমালোচনার মুখে পড়ে সরকার। এ দিন ফরিদা বলেন, “মরসুমে ৫ লক্ষ টন ইলিশ ধরা হয়। রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩ হাজার টনের। এর কতটা যায়, সেটাও দেখার।” ফরিদার কথায়, ইলিশ রফতানির সঙ্গে দুর্গাপুজোর কোনও যোগ নেই। ভারতের আমদানিকারীরা একটা চিঠি দিয়েছিলেন, বাণিজ্য মন্ত্রক সব দিক খতিয়ে দেখে তাতে সায় দিয়েছে।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, অনেক ভেবেচিন্তে সরকার ভারতে ইলিশ রফতানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাঁর কথায়, “চাঁদপুরের ঘাটে এক দিনে যত ইলিশ ধরা পড়ে, সেই পরিমাণ মাছ রফতানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশীয় বাজারে এর কোনও প্রভাব পড়বে না। ইলিশ রফতানি করলে বিদেশি মুদ্রা আসে। না করলে মাছ চোরাচালান হয়, রাজস্ব আসে না।” তিনি বলেন, “যারা বিরোধিতা করছেন, আবেগে করছেন। বাস্তবের কাছে আবেগের জায়গা নেই।”
কিন্তু এই সিদ্ধান্তের জন্য সমাজমাধ্যমে রোষের মুখে পড়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পলাতক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে দেশ আশ্রয় দিয়েছে, তাদের ইলিশ রফতানি কেন করা হবে, এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এক বাংলাদেশি নেটিজেন সংশয় প্রকাশ করেছেন, “উপদেষ্টাদের মধ্যেও দালাল ঢুকে পড়েছে। তাদের বার করে দিতে হবে।” আর এক জনের মন্তব্য, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ব্যর্থ ইউনূস ভারতকে ইলিশ খাইয়ে টিঁকে থাকার কৌশল নিয়েছে।” আর একটি মন্তব্য— “চাঁদপুরের ইলিশ হাসিনার পাতে তুলে দিতেই সরকারে লুকিয়ে থাকা তাঁর কোনও অনুগামী এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
পার্বত্য চট্টগ্রামে চাকমা ও অন্য জনজাতির আদি বাসিন্দাদের উপরে হামলার ঘটনায় তিনটি জেলা— রাঙামাটি, বান্দারবন ও খাগড়াছড়িতে রবিবারও অবরোধ হয়েছে। ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে বসবাসকারী জনজাতি সংগঠনগুলি বাংলাদেশের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভে সরব হয়েছে। ত্রিপুরার জনজাতি সংগঠন তিপ্রা মথার শীর্ষ নেতা প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মা বলেন, “এর আগে কুমিল্লার বীরচন্দ্র মানিক্যের নামে গ্রন্থাগার ভাঙচুর করে বহু পুরোনো বইপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ভারত সরকার তখন কিচ্ছু বলেনি। এই নীরবতায় বিষয়টি আজ আরও জটিল হয়ে উঠেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত, বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টি অবিলম্বে রাষ্ট্রপুঞ্জের দরবারে তুলে ধরা।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy