যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বন্দি ২৩ জন ইউক্রেনীয়কে সাজা দেওয়ার কথা ঘোষণা করল রাশিয়া। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের দাবি, ইউক্রেনের ওই নাগরিকেরা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে জড়িত। তাই তাঁদের বিচার করে সাজা ঘোষণা। মস্কোর অভিযোগ খারিজ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির দফতর জানিয়েছে, এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইনের তোয়াক্কা না করে সাজা হয়েছে বন্দিদের।
সুনির্দিষ্ট ভাবে কোন কোন অপরাধে ওই বন্দিদের কী সাজা হয়েছে, সে বিষয়ে ক্রেমলিনের তরফে কিছু জানানো হয়নি। ওই ২৩ জন সাজাপ্রাপ্তের মধ্যে ইউক্রেনের কোনও সেনা রয়েছেন কি না, সে বিষয়েও সরকারি ভাবে কিছু জানানো হয়নি। তবে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি, ২৩ জনের মধ্যে ১৪ জন ইউক্রেনীয় আধাসেনা আজ়ভ ব্রিগেডের বর্তমান ও প্রাক্তন যোদ্ধা রয়েছেন। ওই ২৩ জনের মধ্যে ১১ জন আগেই দ্বিপাক্ষিক বন্দি বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে ইউক্রেনে ফিরে এসেছেন এবং এক জন রুশ সেনার হেফাজতে মারা গিয়েছেন বলেও ওই খবরে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন:
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াধে যুদ্ধবিরতি নিয়ে আমেরিকার মধ্যস্থতায় বৈঠকের সময়ই ইউক্রেনীয় বন্দিদের সাজা দিল পুতিন সরকার। বন্দরনগরী মারিউপোলে ২০২২ সালের যুদ্ধের সময় আজ়ভস্টাল ইস্পাত কারখানা থেকে ওই ২৩ জনকে বন্দি করা হয়েছিল বলে কিভের একটি সূত্র জানাচ্ছে। মস্কোর এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক জেনিভা সনদের পরিপন্থী বলে অভিযোগ করেছে ইউক্রেন। নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ী রুশ সংগঠন ‘মেমোরিয়াল’ও অভিযোগের সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ধৃতদের ‘রাজনৈতিক বন্দি’র মর্যাদা দেওয়ার সুপারিশ করেছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, ১৯৪৯-এর জেনিভা কনভেনশনে পরিষ্কার বলা আছে, দু’টি দেশের মধ্যে সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে কোনও পক্ষের কোনও বাহিনীর সদস্য যদি অন্য পক্ষের এলাকায় সেখানকার বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে, তবে তাঁকে যুদ্ধবন্দির মর্যাদা দিতে হবে। জেনিভা কনভেনশন অনুসারে, এক জন যুদ্ধবন্দির একাধিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে শর্ত হল, সংশ্লিষ্ট যুদ্ধবন্দি গ্রেফতারির সময় সামরিক উর্দি পরিহিত অবস্থায় থাকবেন। তা না হলে গুপ্তচরবৃত্তি বা নাশকতার অভিযোগে সামরিক আইনে বিচার ও সাজার মুখোমুখি হতে হবে তাঁকে।