মায়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রদেশ আয়েয়ারওয়াদিতে নিজেদের অবস্থান কিছুটা পোক্ত করেছে সামরিক জুন্টার সরকার। বিদ্রোহী জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী ‘মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স আর্মি’ (এমএনডিএএ)-এর সঙ্গে গত জানুয়ারিতে শান্তিচুক্তি করার পরে পরিস্থিতি জুন্টা ফৌজের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
এই আবহে ওই প্রদেশে সক্রিয় অন্য কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী নতুন করে হামলা শুরুর তৎপরতা শুরু করেছে বলে প্রকাশিত কয়েকটি খবরে দাবি। আয়েয়ারওয়াদি প্রদেশ দীর্ঘ দিন ধরেই মায়ানমারের সামরিক জুন্টার ‘শক্ত ঘাঁটি’ হিসেবে পরিচিত। সে দেশের সেনার দক্ষিণ-পশ্চিম কমান্ডের অন্তর্গত ১১টি ব্যাটালিয়ন মোতায়েন রয়েছে ওই প্রদেশে। রয়েছে, ৬৬তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ডিভিশনের দুটি ব্যাটালিয়ন। এই প্রদেশেরই হাইগি দ্বীপে মায়ানমার নৌসেনার পামাওয়াদ্দি কমান্ড এবং ৪ নম্বর স্ট্র্যাটেজিক ফ্লিট রয়েছে।
২০২০ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে মায়ানমারের গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী আউং সান সু চির দল দেশের অন্য ১৩টি প্রদেশে নিরঙ্কুশ জয় পেলেও ব্যতিক্রম ছিল আয়েয়ারওয়াদি। সেখানে সেনার সমর্থক রাজনৈতিক গোষ্ঠীগুলি ভাল ভোট পেয়েছিল। যদিও ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে মায়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী মিলে নতুন জোট ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়্যান্স’ গড়ে সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে অভিযান শুরুর পরে প্রাথমিক ভাবে সেখানে কিছুটা চাপে পড়েছিল জুন্টা ফৌজ। সেই অভিযানের পোশাকি নাম ছিল ‘অপারেশন ১০২৭’।
‘আরাকান আর্মি’ (এএ) এবং ‘তাঙ ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি’ (টিএনএলএ)-র পাশাপাশি সেই ত্রিদলীয় জোটের অন্যতম সহযোগী ছিল সদ্য শান্তিচুক্তি করা এমএনডিএএ। পরবর্তী সময়ে জুন্টা-বিরোধী যুদ্ধে শামিল হওয়া ‘চিন ন্যাশনাল আর্মি’ (সিএনএ) এবং চায়নাল্যান্ড ডিফেন্স ফোর্স (সিডিএফ), ‘কাচিন লিবারেশন ডিফেন্স ফোর্স’ (কেএলডিএফ) এবং সু চির সমর্থক স্বঘোষিত সরকার ‘ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট’-এর সশস্ত্র বাহিনী ‘পিপল্স ডিফেন্স ফোর্স’ (পিডিএফ)। শান প্রদেশে সক্রিয় বিরোধী রাজনৈতিক দল ‘শান স্টেট প্রোগ্রেস পার্টি’ এবং তাদের সশস্ত্র শাখা ‘শান স্টেট আর্মি’ও জুন্টার বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে।