Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪
Intertaional News

আনুগত্য চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, সাক্ষ্য পেশ কোমির

গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে সত্যি সত্যিই রাশিয়ার হাত রয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটি, এফবিআই এবং একটি স্পেশ্যাল কাউন্সেল। সে কাজে কংগ্রেসের শীর্ষ সেনেটরদের ই-মেল হ্যাক করা হয়েছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা।

কোমির সাক্ষ্যকে ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত।

কোমির সাক্ষ্যকে ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৭ ১৪:২৬
Share: Save:

এফবিআই-এর মতো প্রতিষ্ঠান চালাতে তিনি ব্যর্থ। সেই অভিযোগে মাসখানেক আগে জেমস কোমিকে এফবিআই প্রধানের পদ থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে, কোমিও দমবার পাত্র নন। এ বার তিনি নথি পেশ করে তাতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে তাঁর অস্বস্তি বাড়িয়ে তুলেছেন।

আজ, বৃহস্পতিবার মার্কিন কংগ্রেসের ইন্টেলিজেন্স কমিটির মুখোমুখি হওয়ার কথা কোমির। তার আগে বুধবার তিনি ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সরব হন। তিনি জানান, মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ নিয়ে প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনের ভূমিকা খতিয়ে দেখছিল এফবিআই। এফবিআই প্রধান হিসাবে তিনিই বিষয়টি দেখছিলেন সেই সময়। কিন্তু, হঠাত্ই তা বন্ধ করতে অনুরোধ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এই নিয়ে সাত পাতার একটি লিখিত সাক্ষ্য সামনে আনেন কোমি। ট্রাম্প অবশ্য লিখিত বিবৃতি দিয়ে কোমির ওই সাক্ষ্যকে ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে সত্যি সত্যিই রাশিয়ার হাত রয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত করছে মার্কিন কংগ্রেসের বিভিন্ন কমিটি, এফবিআই এবং একটি স্পেশ্যাল কাউন্সেল। সে কাজে কংগ্রেসের শীর্ষ সেনেটরদের ই-মেল হ্যাক করা হয়েছিল কি না তা-ও খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। তবে নির্বাচনী ফলাফলে রাশিয়ার ‘মদতে’র কথা বরাবরই অস্বীকার করেছে ক্রেমলিন এবং ওয়াশিংটন— দু’পক্ষই। এফবিআইয়ের তরফে ওই তদন্তের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন কোমি। সেই তদন্ত চলাকালীনই গত ৯ মে কোমিকে বরখাস্ত করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আরও পড়ুন

তেহরানে হানা কি ট্রাম্পের ছকে ধাক্কা

প্রাক্তন এফবিআই প্রধান জানিয়েছেন, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ওভাল অফিসে এক বৈঠকে মাইকেল ফ্লিনকে নিয়ে তদন্ত বন্ধ করতে অনুরোধ করেন ট্রাম্প। সেই সময় গোটা ঘটনাটা একটি নথিতে লিপিবদ্ধ করেছিলেন কোমি। কোমির আরও অভিযোগ, গত ২৬ জানুয়ারির এই বৈঠকে ট্রাম্প তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি এফবিআই প্রধানের পদে থাকতে চান কি না! শুধু তা-ই নয়, তাঁর কাছে আনুগত্যও দাবি করেন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প তাঁকে বলেন, “আমার আনুগত্যের প্রয়োজন। আমি আপনার কাছ থেকে আনুগত্য আশা করি।” তবে, কোমির লিখিত ওই সাক্ষ্য অবশ্য গত মাসেই প্রকাশ্যে চলে এসেছিল। কোমির এই লিখিত সাক্ষ্য ট্রাম্পের উপর আরও চাপ বাড়াল বলে মনে করছেন সে দেশের রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের মতে, গত মার্কিন নির্বাচনে ট্রাম্পের জয়ে রাশিয়ার তথাকথিত হস্তক্ষেপের অভিযোগের যে তদন্ত হচ্ছে তাতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা যে করা হয়েছিল তা আবারও প্রমাণ হল। মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী, তদন্তে বাধা দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে কোনও প্রেসিডেন্ট পদাধিকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলা না করা গেলেও তাঁকে ইমপিচমেন্ট করা যায়। তবে, উল্টো বয়ানও আছে। সেই অংশের মতে, কোমির সাক্ষ্যে এমন কিছু খোলসা করে বলা নেই যাতে চাপে পড়তে পারেন ট্রাম্প।

ওই সাক্ষ্যকে তেমন একটা গুরুত্ব দেননি স্বয়ং ট্রাম্প। সাক্ষ্য প্রকাশিত হওয়ার দিন তিনি ওয়াইয়োতে ছিলেন। এই বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতেও তাঁর অনীহা দেখা যায়। ওই সাক্ষ্য নিয়ে বলার বদলে, তিনি দেশের ভঙ্গুর পরিকাঠামোর মেরামতি নিয়ে কথা বলেন। সেখান থেকে ওয়াশিংটনে ফিরে ওভাল অফিসে শীর্ষ উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠকও করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।

এর আগে গত মাসের ৯ তারিখে বরখাস্ত করা হয় মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান কোমিকে। হোয়াইট হাউস সূত্রে জানানো হয়েছিল, হিলারি ক্লিন্টনের ই-মেল সংক্রান্ত তদন্তে ব্যক্তিগত হস্তক্ষেপের কারণেই তাঁকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প। কিন্তু, ডেমোক্র্যাটরা দাবি তুলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে ট্রাম্পের প্রচার এবং তাতে রাশিয়ার ভূমিকা নিয়ে তদন্ত করছিল এফবিআই। আর সে কারণেই সরতে হয় কোমিকে।

বরখাস্ত হওয়ার আগে হিলারি ক্লিন্টনের ই-মেল সংক্রান্ত তদন্তের একটি রিপোর্ট মার্কিন কংগ্রেসকে দেন কোমি। সেই রিপোর্টে ত্রুটি ছিল বলে ট্রাম্প প্রশাসন জানায়। তার পরেই প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে কোমিকে বরখাস্তের চিঠি পাঠানো হয়। সেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প লিখেছিলেন, এফবিআই-এর মতো প্রতিষ্ঠান ঠিক মতো পরিচালনা করতে ব্যর্থ কোমি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE