Advertisement
০৩ নভেম্বর ২০২৪

পাপুয়া নিউ গিনি থেকে চিনকে বার্তা প্রণবের

বিমান পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মরিসবিতে নামার আগে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করলেন, ‘‘এর আগে কারা এখানে এসেছেন হাত তুলুন!’’ বিমানে তখন জনা বিশ সাংবাদিক ছাড়াও রয়েছেন দ্বিগুণ অফিসার-বিমানকর্মী-সাংসদ।

অগ্নি রায়
পোর্ট মরিসবি (পাপুয়া নিউ গিনি) শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪৬
Share: Save:

বিমান পাপুয়া নিউ গিনির রাজধানী পোর্ট মরিসবিতে নামার আগে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় প্রশ্ন করলেন, ‘‘এর আগে কারা এখানে এসেছেন হাত তুলুন!’’ বিমানে তখন জনা বিশ সাংবাদিক ছাড়াও রয়েছেন দ্বিগুণ অফিসার-বিমানকর্মী-সাংসদ। একটি হাতও উঠল না! রাষ্ট্রপতি বললেন, ‘‘কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও প্রতিমন্ত্রীও এর আগে এখানে আসেননি। আমি এলাম! প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে ভারতের যে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন।’’

সাউথ ব্লকের মাথাব্যথার অন্যতম কারণ, প্রশান্ত মহাসাগরে চিনের আধিপত্য ক্রমশ বাড়িয়ে চলা। এ দিন পাপুয়া নিউ গিনিতে দাঁড়িয়ে তার মোকাবিলায় চিনের উদ্দেশে কড়া বার্তা দিলেন প্রণব। প্রশান্ত মহাসাগরের ১৪টি দ্বীপরাষ্ট্রে চিনা সেনার প্রবল আধিপত্য নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মুখ খোলেন তিনি। জানান, সমুদ্র-যোগাযোগের পথ সন্ত্রাসমুক্ত হওয়া আবশ্যক। পাশাপাশি এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলির উন্নয়নে নয়াদিল্লির আগ্রহের দিকটিও তুলে ধরেন প্রণব।

গত কয়েক মাস ধরেই এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ক শুরুর লক্ষ্যে নড়েচড়ে বসেছে মোদী সরকার। প্রাকৃতিক গ্যাসে ভরপুর পাপুয়া নিউ গিনিতে তিন মাস আগে সিআইআই-এর প্রতিনিধি দল ঘুরে গিয়েছে। এখান থেকে ভারতে গ্যাস রফতানি নিয়ে কথা হয়েছে। তারও আগে তৈরি করা হয়েছে ইন্ডিয়া প্যাসিফিক আইল্যান্ড কোঅপারেশন (ফিপিক)।

প্রশান্ত মহাসাগরে বেজিং আধিপত্য বাড়িয়ে চলায় চিন্তার ভাঁজ পড়েছে নয়াদিল্লির কপালে। চিনা মডেলটি সহজ এবং চিরাচরিত। প্রথমে দ্বীপরাষ্ট্রগুলিকে প্রচুর অর্থনৈতিক অনুদান দিয়ে পরে সামরিক ঘাঁটি তৈরির ছাড়পত্র আদায় করে নেওয়া। জলপথের অধিকার নিয়ে বৃহত্তর অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত সুবিধা কায়েম করা। সম্প্রতি চিন এক ঢালাও অর্থনৈতিক প্যাকেজও ঘোষণা করেছে এখানকার ১৪টি দ্বীপরাষ্ট্রের জন্য। তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ভাঁড়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলিকে কব্জায় রাখতে পারলে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাজনীতিতে নয়াদিল্লিকে টেক্কা দেওয়া যাবে— এ কথা মাথায় রেখেই বেজিংয়ের এই পদক্ষেপ বলে মনে করছেন বিদেশ মন্ত্রকের কর্তারা। গত এক বছর ধরে এর মোকাবিলাকেই অগ্রাধিকারের তালিকায় তুলে এনেছে ভারত। তারই ফসল ভারতীয় রাষ্ট্রপতির এই সফর।

সবুজ দ্বীপে নামার পর থেকেই চিন নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে ভারতীয় রাষ্ট্রপতিকে। কূটনৈতিক ভাবে প্রণব তার মোকাবিলাও করছেন। ভারত যে পাপুয়া নিউ গিনির বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়তে এগিয়ে আসতে উৎসুক, এ কথাও আজ ঘোষণা করেছেন রাষ্ট্রপতি।

অন্য বিষয়গুলি:

Pranab Mukherjee China Papua New Guinea
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE