নিখোঁজ সাংবাদিক ডম ফিলিপ্স (ইনসেটে) ও জনজাতি বিশেষজ্ঞ ব্রুনো পেরেরার খোঁজে সেনা নামিয়েছে ব্রাজিল। পেরু সীমান্তের কাছে আমাজ়নের জঙ্গলে। রয়টার্স
তিন দিন কেটে গিয়েছে। এখনও কোনও খোঁজ নেই ওঁদের। ওঁরা কি আদৌ বেঁচে রয়েছেন? প্রশ্নটা এখন সকলের।
রবিবার থেকে আমাজ়নের গভীর জঙ্গলে নিখোঁজ ব্রিটিশ সাংবাদিক ডম ফিলিপ্স (৫৭) এবং তাঁর সঙ্গী, ব্রাজিলের জনজাতি বিশেষজ্ঞ ব্রুনো পেরেরা (৪১)। পেরুর সীমান্তবর্তী ব্রাজিলের জাভারি উপত্যকার কোনও নদীতে নৌকা নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। তার পর আর কোনও খবর নেই। ফিলিপ্স ও পেরেরা দু’জনেই অভিজ্ঞ। ফলে জঙ্গলে হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম। ফিলিপ্স ব্রিটিশ নাগরিক হলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি সালভাদর নিবাসী। আর আমাজ়নের দুর্গম এলাকায় জনজাতিকে নিয়েই কাজ পেরেরার।
প্রায় ৮৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত আমজ়নের এই জাভারি উপত্যকা। ঘন, প্রাচীন এই অরণ্যে অন্তত ২৬টি জনজাতির বাস। যাদের মধ্যে ১৯টি সম্প্রদায়ের বাইরের পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ নেই। তাঁদের হাতে বন্দি হওয়ার আশঙ্কা যে একেবারে নেই তা বলা যায় না। তবে ওঁদের পরিবার ও ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকে অন্য একটি আশঙ্কার আঁচ মিলেছে। এই অঞ্চলটি চোরাই কাঠ পাচারকারী, চোরাশিকারি, অবৈধ সোনা খনন, বিশেষ করে মাদক পাচারকারিদের স্বর্গরাজ্য। এই এলাকা নিয়েই একটি বইয়ের জন্য গবেষণা চালাচ্ছিলেন ফিলিপ্স। সেই কাজেই তাঁর আমাজ়নের গভীরে আনাগোনা বেড়েছিল। বিষয়টা ভাল চোখে দেখেনি অনেকেই। পরিবার সূত্রের খবর, ওই এলাকায় যেতে নিষেধ করে গত সপ্তাহেই ফিলিপ্স ও পেরেরার কাছে হুমকি ফোন আসে। ফলে অবৈধ কারবারিদের হাতে অপহরণ বা হত্যার আশঙ্কাও ঘনাচ্ছে।
বাস্তবে যা-ই ঘটুক না কেন, ব্রাজিল সরকারের কাছে তাঁদের দ্রুত উদ্ধারের জন্যে আবেদন জানিয়েছে ফিলিপ্স ও পেরেরার পরিবার এবং একাধিক সংগঠন। ফিলিপ্সের স্ত্রী অ্যালেসান্দ্রা স্যাম্পিয়ো একটি ভিডিয়ো বার্তায় বলেছেন, ‘‘সরকারের কাছে আবেদন জানাই, ওঁদের দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা করা হোক। ওঁদের খুঁজে পাব বলে এখনও আশা করছি।’’
ব্রাজিলের প্রশাসনও এ বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যদিও প্রেসিডেন্ট জ়াইর বোলসোনারো এই ঘটনার দায় ঠেলেছেন ফিলিপ্সদের কাঁধেই। তিনি বলেছেন, ‘‘ওই রকম দুর্গম এলাকায় নৌকায় করে দু’জনের যাওয়া একেবারেই ঠিক হয়নি। যা খুশি হতে পারে। হয়তো ওঁরা দুর্ঘটনার মুখে পড়েছেন। হয়তো কেউ ওঁদের হত্যা করেছে।’’ এমন মন্তব্যের জেরে সমালোচিত হয়েছেন বোলসোনারো।
আমাজ়নের পুলিশ জানিয়েছে, এক সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আরও চার জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ব্রাজিলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ফিলিপ্সদের খোঁজে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১৫০ জন সেনা নামানো হয়েছে। দ্বিতীয় হেলিকপ্টার পাঠানোর কথাও জানিয়েছে প্রশাসন। তবে তার আগে স্থানীয় তিনটি মানবাধিকার রক্ষা সংগঠন একসঙ্গে বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল, মাত্র ছ’জন পুলিশকর্তাকে ফিলিপ্সদের খোঁজ করতে দেখা গিয়েছে। অভিযোগ, ব্রাজিলের প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে গড়িমসি করছে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy