হাতে হাত। নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শি চিনফিং। ছবি: এপি
রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে হবে। ব্রিকস গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলিকে আজ এই বার্তাই দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গেই চিন-পাকিস্তান ইকনমিক করিডর (সিপেক) নিয়েও চিনা প্রেসিডেন্ট শি চিনফিংয়ের কাছে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত।
পূর্ব চিনের হানঝউয়ে আজ থেকে একইসঙ্গে বসেছে ব্রিকস ও জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির শীর্ষ সম্মেলন। বিশ্বের তাবড় নেতাদের ঠিকানা এখন চিন। গত কালই ভিয়েতনাম থেকে হানঝউ পৌঁছন মোদী। আজ সকালে চিনা প্রেসিডেন্ট চিনফিংয়ের সঙ্গে একান্ত আলোচনায় বসেছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আর সেখানেই সিপেক নিয়ে নয়াদিল্লির উৎকণ্ঠার কথা চিনফিংয়ের কানে তোলেন নরেন্দ্র মোদী।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে ৪৬০০ কোটি ডলারের একটি অর্থনৈতিক করিডর গড়েছে চিন। যা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ভারত। নয়াদিল্লির দাবি, যে এলাকা দিয়ে করিডরটি গিয়েছে, তা পাক অধিকৃত কাশ্মীরের ভিতর দিয়ে গিয়েছে। যা আসলে সন্ত্রাসের আতুঁড়ঘর।
বৈঠকের শুরুতেই কিরগিজস্তানের বিশকেকে চিনা দূতাবাসে জঙ্গি হামলার নিন্দা করেন মোদী। তার পরই তিনি জানান, সন্ত্রাসের মোকাবিলা করাটাই এখন প্রত্যেকটি দেশের মূল মন্ত্র হওয়া প্রয়োজন। মোদীর আরও বক্তব্য, চিন ও ভারতের উচিত পরস্পরের কৌশলগত স্বার্থকে সম্মান করা। বৈঠকের পরে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ সাংবাদিকদের জানান, সন্ত্রাস প্রশ্নে ভারতের অবস্থান চিনফিংয়ের কাছে স্পষ্ট করে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী।
চিনফিংও জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করতে আগ্রহী বেজিং। কিছু দিন আগে মূলত চিনের বাধাতেই পরমাণু সরবরাহকারী (এনএসজি) দেশগুলির তালিকায় ঠাঁই পায়নি ভারত। তার পর থেকেই বেজিংয়ের সঙ্গে শীতলতা তৈরি হয়েছিল নয়াদিল্লির। কিন্তু দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের সাম্প্রতিক একটি রায়ের পর থেকে ভারতের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টেছে চিন। দক্ষিণ চিন সাগরে নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে এখন তাই নয়াদিল্লিকে পাশে চাইছে বেজিং। এই সুযোগটা কাজে লাগাতে চায় ভারতও। দু’দেশের মুখেই এখন তাই পারস্পরিক মেলবন্ধনের কথা।
চিনফিংয়ের কাছে সন্ত্রাস নিয়ে যে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন, ব্রিকসভুক্ত প্রত্যেকটি দেশের কাছেও সেই একই বার্তা আজ পৌঁছে দিয়েছেন মোদী। জানিয়েছেন, আমরা এখন যে বিশ্বে বসবাস করছি তাতে সন্ত্রাসবাদই সকলের মাথাব্যথার মূল কারণ। তাই এই মুহূর্তে ব্রিকসের উচিত আরও জোটবদ্ধ হওয়ার। মোদী বলেন, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা দূরে সরিয়ে রেখে এখন সকলের উচিত একসঙ্গে রুখে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করা। জঙ্গিদের যারা মদত জোগায় তাদেরও একই সঙ্গে বিনাশ করতে হবে।’’
হানঝউয়ে আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গেও দেখা হয়েছে মোদীর। এক বার নয়, দু’বার। প্রথমে জি-২০ বৈঠকে একটি গ্রুপ ফটো তোলার সময় দেখা হয় দু’জনের। বিশেষ কথা হয়নি তখন। কিন্তু সন্ধের দিকে আরও একটি অনুষ্ঠানে মুখোমুখি হন মোদী-ওবামা। সেখানেই সামান্য কথা হয় দু’জনের। জিএসটি বিল পাশ করানোর জন্য মোদীর সাহসী পদক্ষেপের ভূয়সী প্রশংসাও করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy