Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪
Afghanistan

Afghanistan: কর্মচ্যুত ছ’হাজার আফগান, বিপন্ন মহিলা সাংবাদিকেরা

রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, ৩৪টি প্রদেশের ১৫টিতে মহিলা সাংবাদিকদের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:১৮
Share: Save:

চলতি বছরের অগস্টে তালিবান আফগানিস্তানের তখ্‌ত দখলের পরে এখনও পর্যন্ত ছ’হাজারের বেশি সাংবাদিক চাকরি খুইয়েছেন। সবচেয়ে শোচনীয় অবস্থা মহিলা সাংবাদিকদের। আফগানিস্তানে সংবাদমাধ্যমের বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) এবং দ্য আফগান ইন্ডিপেন্ডেন্ট জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশন (এআইজেএ) যৌথ ভাবে সমীক্ষা করেছিল। সেখানেই এই চিত্র ধরা পড়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, দেশ জুড়ে ২৩১টি সংবাদমাধ্যম ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার জেরে অন্তত ৬৪০০ সাংবাদিক কর্মচ্যুত হয়েছেন। প্রতি পাঁচ জন মহিলা সাংবাদিকের মধ্যে চার জনেরই কাজ নেই।

এর আগে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)-এর প্রধান আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছিলেন, আফগানিস্তানে সাংবাদিকতার পেশাটাই সঙ্কটের মুখে। তিনি জানিয়েছিলেন, তালিবান জমানায় নিগ্রহ এবং জেলবন্দি হওয়ার আতঙ্কের মধ্যেই কাজ করছেন সাংবাদিকেরা। অথচ চার মাসেও আগেও পরিস্থিতি ছিল সম্পূর্ণ অন্যরকম। অধিকাংশ আফগান প্রদেশেই অন্তত ১০টি করে বেসরকারি সংবাদমাধ্যম দেখা যেত। কিন্তু বর্তমানে একটিও আঞ্চলিক সংবাদমাধ্যম নেই। কোথাও আর্থিক সঙ্কট, আবার কোথাও ক্রমাগত হুমকির মুখে সংস্থা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংস্থার কর্ণধারেরা।

পার্বত্য পারওয়ান প্রদেশে ১০টি সংবাদমাধ্যমের মধ্যে বর্তমানে রয়েছে মাত্র তিনটি। হেরাট ও পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ৫১টির মধ্যে ১৮টি চালু রয়েছে। খোদ রাজধানীর অবস্থাও একই রকম। সেন্ট্রাল কাবুলে প্রতি দু’টি সংবাদমাধ্যমের মধ্যে একটি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ১৫ অগস্টের আগে যেখানে ১৪৮টি সংস্থা ছিল, বর্তমানে সেটাই কমে হয়েছে ৭২।

এরই প্রভাব পড়েছে কর্মসংস্থানে। অগস্টের শুরুতে আফগান সংবাদমাধ্যমে কর্মরত ছিলেন ১০,৭৯০ জন (পুরুষ ও মহিলা যথাক্রমে ৮২৯০ এবং ১৪৯০)। তবে সাম্প্রতিক সমীক্ষায় মোট সাংবাদিকের সংখ্যা কমে দাঁড়িয়েছে ৪৩৬০। যার মধ্যে পুরুষ এবং মহিলা যথাক্রমে ৩৯৫০ ও ৪১০ জন।

রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে, ৩৪টি প্রদেশের ১৫টিতে মহিলা সাংবাদিকদের অস্তিত্ব মুছে গিয়েছে। উদাহরণ হিসেবে উত্তরের জোজ়জান প্রদেশের উল্লেখ করা হয়েছে। সেখানে তালিবান ক্ষমতা দখলের আগে ১৯টি সংবাদমাধ্যমে ১১২ জন মহিলা চাকরি করতেন। বর্তমানে চালু ১২টি সংস্থায় নেই কোনও মহিলা সাংবাদিক।

আইএফজে-র সেক্রেটারি জেনারেল অ্যান্টনি বেলেঙ্গার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি যে দিকে এগোচ্ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে
হয়তো গোটা দেশে শুধুমাত্র তালিবান পোষিত সংবাদমাধ্যমেরই অস্তিত্ব থাকবে। মুছে যাবে নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম। বিলুপ্ত হবেন মহিলা সাংবাদিকরাও।

প্রসঙ্গত, কাবুল দখলের পরে বহু সাংবাদিকের বাড়িতে হানা দিয়েছিল তালিবান যোদ্ধারা। জার্মান সংবাদমাধ্যমের এক সাংবাদিকের পরিজনকে হত্যাও করা হয়েছে। এমনকি লাইভ টেলিভিশন শোয়ে সংবাদ পাঠককে ঘিরে রয়েছে বন্দুকধারীরা, সেই দৃশ্যও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এমনই পরিস্থিতিতে দলে দলে দেশ ছেড়েছেন আফগান সাংবাদিকেরা। তার মধ্যে রয়েছেন বেহেশতা আরঘান্ডও। যিনি এক শীর্ষ তালিবান নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। দেশে ছাড়ার পরে বেহেশতা জানিয়েছিলেন, প্রাণভয়েই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।

টোলো নিউজ়ের সিইও সাদ মহসেনির কথায়, ‘‘একটা প্রজন্ম, যাঁরা সাংবাদিক হয়ে ওঠার জন্য তিলে তিলে নিজেদের গড়ে তুলেছিলেন, তাঁরা হয় দেশ নয়তো পেশা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন। আগামী দু’দশকে এই শূন্যতা পূরণ সম্ভব নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Afghanistan Unemployment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy