All you need to know about Pakistan Satellite PRSC-EO1, which is launched from China recently dgtl
Pakistan Satellite
যেন জলের ট্যাঙ্ক! চিন থেকে প্রথম দেশীয় উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল পাকিস্তান, উদ্দেশ্য কি শুধুই পর্যবেক্ষণ?
‘পিআরএসসি-ইও১’ উপগ্রহটি ‘ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল’ সেন্সর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়ছে। এই সেন্সরের সাহায্যে পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত সূর্যের আলো শনাক্ত এবং পরিমাপ করে ভূপৃষ্ঠের তথ্য এবং ছবি সংগ্রহ করে এই ধরনের উপগ্রহগুলি।
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৭
প্রথম বার দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল পাকিস্তান। শুক্রবার উত্তর চিনের জিউকুয়ান উপগ্রহ উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে সেটি মহাকাশে যাত্রা করে। তেমনটাই জানানো হয়েছে পাক মহাকাশ সংস্থার তরফে।
০২১৭
পাক পর্যবেক্ষণ উপগ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘পিআরএসসি-ইও১’। পাকিস্তানের মহাকাশ ও উচ্চ বায়ুমণ্ডল গবেষণা কমিশন (সুপারকো) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সদ্য মহাকাশে পাঠানো উপগ্রহটি প্রাকৃতিক সম্পদের নিরীক্ষণ এবং ব্যবস্থাপনা, দুর্যোগ মোকাবিলা এবং নগর পরিকল্পনা ও কৃষি উন্নয়নে সাহায্য করবে।
০৩১৭
‘চায়না অ্যারোস্পেস সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি কর্পোরেশন’ও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার চিনের ‘লং মার্চ-২ডি ক্যারিয়ার রকেট’টি ‘পিআরএসসি-ইও১’কে নিয়ে কক্ষপথে গিয়েছে।
০৪১৭
‘পিআরএসসি-ইও১’ উপগ্রহটি ‘ইলেক্ট্রো-অপটিক্যাল’ সেন্সর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়ছে। এই সেন্সরের সাহায্যে পৃথিবী থেকে প্রতিফলিত সূর্যের আলো শনাক্ত এবং পরিমাপ করে ভূপৃষ্ঠের তথ্য এবং ছবি সংগ্রহ করে এই ধরনের উপগ্রহগুলি।
০৫১৭
উল্লেখ্য, পাক উপগ্রহ ‘পিআরএসসি-ইও১’-এর পাশাপাশি ‘তিয়ানলু-১’ এবং ‘ব্লু কার্বন১’ নামে অন্য দু’টি উপগ্রহও একই সঙ্গে উৎক্ষেপণ করেছে চিন।
০৬১৭
দেশীয় পদ্ধতিতে তৈরি উপগ্রহ মহাকাশে পাঠানো নিয়ে যারপরনাই খুশি পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। আনন্দ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘‘সুপারকোর নেতৃত্বে পুরো বিষয়টা সম্ভব হয়েছে। বিষয়টি মহাকাশবিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিতে আমাদের দেশের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতার প্রতিফলন।’’
০৭১৭
অন্য দিকে সুপারকো জানিয়েছে, পাকিস্তানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষি এবং নগর পরিকল্পনা উন্নত করতে সাহায্য করবে ‘পিআরএসসি-ইও১’ উপগ্রহটি। উপগ্রহটির ‘মহৎ’ উদ্দেশ্য তুলে ধরে দেশের উন্নয়নে সেটির ভূমিকার উপরও জোর দিয়েছে পাকিস্তান।
০৮১৭
যদিও পুরো বিষয়টিকে ভাল চোখে দেখছেন না কেউ কেউ। বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, এটা ভুললে চলবে না যে পাক উপগ্রহটি চিন থেকে উৎক্ষেপণ হয়েছে। এই চিনের বিরুদ্ধে বার বার উপগ্রহের মাধ্যমে নজরদারি চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
০৯১৭
অভিযোগ, উপগ্রহের মাধ্যমে সারা বিশ্বে নজরদারি চালায় চিন। নজরদারিকে কেন্দ্র করে আমেরিকা এবং চিনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলতে থাকে অহর্নিশ।
১০১৭
২০২৩ সালে ‘ইয়াওগান-৪১’ নামে কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে চিন। কৃত্রিম উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয় ‘লং মার্চ ৫’ লঞ্চার রকেটের মাধ্যমে। এটি চিনের অন্যতম শক্তিশালী রকেট।
১১১৭
দাবি উঠেছিল, ওই উপগ্রহটিকে নজরদারি করতে এবং সামরিক কাজে ব্যবহার করা হতে পারে। সামরিক দূতের কাজ করবে সেই উপগ্রহটি।
১২১৭
যদিও চিন সরকারের দাবি ছিল, জমি জরিপ, পর্যবেক্ষণের মতো অসামরিক কাজের জন্যই ‘ইয়াওগান-৪১’ বিশেষ ভাবে তৈরি করা হয়েছে। এর সঙ্গে সামরিক কোনও সম্পর্ক নেই।
১৩১৭
সেই চিন থেকেই যখন পাকিস্তানের উপগ্রহ উৎক্ষেপণ হচ্ছে, তখন পুরো বিষয়টি নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তা হলে কি পাক উপগ্রহটিও নজরদারি চালানোর কাজে উৎক্ষেপণ করা হল?
১৪১৭
উল্লেখ্য, গত বছরের মে মাসে পাকিস্তান ইন্টারনেট এবং টেলিযোগাযোগ পরিকাঠামো উন্নত করতে একটি ‘মাল্টি-মিশন কমিউনিকেশন’ উপগ্রহ ‘পাকস্যাট-এমএম১’ মহাকাশে পাঠিয়েছিল। সুপারকো এবং চায়না গ্রেট ওয়াল ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন যৌথ ভাবে উপগ্রহটি তৈরি করেছিল।
১৫১৭
তবে যে কথা উল্লেখ না করলেই নয় তা হল, ‘পিআরএসসি-ইও১’ উপগ্রহের আকার। পাক উপগ্রহের ছবি সমাজমাধ্যমে প্রকাশ্যে আসতেই হাসির রোল উঠেছে সমাজমাধ্যমে। উপগ্রহটিকে জলের ট্যাঙ্কের সঙ্গে তুলনা করেছেন নেটাগরিকদের একাংশ। এই নিয়ে সমাজমাধ্যমে মিমের বন্যা বয়ে গিয়েছে।
১৬১৭
গোটা পৃথিবীকে জরিপ করার জন্য আমেরিকা, চিন এবং ভারত-সহ বিভিন্ন দেশ একঝাঁক সরকারি এবং ব্যক্তিগত উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে। বাণিজ্যিক মহাকাশ শিল্পে পর্যবেক্ষণ উপগ্রহের বাজার এখন বেশ গরম।
১৭১৭
বর্তমানে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ উপগ্রহ সংক্রান্ত শিল্পের মোট বাজারদর ৫০০ কোটি ডলার। তবে ২০২২ সালের মধ্যে সেটি ৮০০ কোটি ডলারের শিল্প হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আভাস দিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা।