Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
International News

আস্ত একটা দেশের ‘মালিক’ এই ভারতীয়!

শুনলে অবাক হতে হয়, সে দেশের জাতীয় পশু টিকটিকি। এমনকী, নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে সে দেশের রাজধানীর নামও তিনি রেখেছেন সুযশপুর।

-পতাকা হাতে ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’ এর রাজা সুযশ দীক্ষিত। ছবি: ফেসবুক।

-পতাকা হাতে ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’ এর রাজা সুযশ দীক্ষিত। ছবি: ফেসবুক।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৭ ১৪:৪৫
Share: Save:

একটা গোটা দেশের মালিক তিনি। তিনি-ই সেখানকার শাসক। আর সে দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাবা। শুনলে অবাক হতে হয়, সে দেশের জাতীয় পশু টিকটিকি। এমনকী, নিজের নামের সঙ্গে মিলিয়ে সে দেশের রাজধানীর নামও তিনি রেখেছেন সুযশপুর।

তিনি সুযশ দীক্ষিত। জন্মসূত্রে খাঁটি ভারতীয়। মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা। আদ্যোপান্ত অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়। আর সেই অ্যাডভেঞ্চারের নেশাই তাঁকে ‘মালিক’ করে তুলেছে একটি আস্ত দেশের। যার নাম সুযশ নিজেই দিয়েছেন— ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’। আর সে দেশের নাগরিক হওয়ার জন্য সুযশ সকলকে আহ্বানও জানাচ্ছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে এ নিয়ে দরবারও করবেন তিনি।

দেখুন ভিডিও:

ঘটনার শুরুটা কিন্তু অ্যাডভেঞ্চারের হাত ধরেই। মরুভূমির ভিতর দিয়ে প্রায় ৩১৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পথ গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন সুযশ। পৌঁছেছিলেন মিশর আর সুদানের ঠিক মাঝের এক দাবিদারহীন এলাকায়। দক্ষিণ মিশর এবং উত্তর সুদানের মরুভূমির মধ্যে প্রায় ২ হাজার বর্গমাইল জায়গা জুড়ে বিস্তৃত অঞ্চলের নাম বীর তাওয়িল। জনবসতিহীন এই অঞ্চল এখনও পর্যন্ত কোনও দেশ বা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়। সুযশ সেই অঞ্চলেরই শাসক বলে এখন নিজেকে দাবি করছেন।

আরও পড়ুন
আদি কাল থেকে বন্দি প্রকৃতির হাতে, লিসুদের পথ এ বার আটকাল সেনা

বীর তাবিলে সুযশ

একটি সফটওয়্যার কোম্পানির সিইও সুযশ গত ৬ নভেম্বর তাঁর ফেসবুক পেজে লিখেছেন, ‘‘নিজেকে ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’-এর রাজা হিসাবে আমি ঘোষণা করছি। আজ থেকে আমি রাজা সুযশ। বীর তাবিলের এই দাবিদারহীন অঞ্চল আজ থেকে আমার দেশ।’’ আস্ত একটা ‘দেশ’ আবিষ্কার করতে তাঁকে যে কঠিন কসরত করতে হয়েছে, সে কথাও ফেসবুকে লিখেছেন সুযশ। তিনি লিখেছেন, “মিশরীয় সেনার দখলে থাকা রাস্তা ধরে সফর করছিলাম। গোটা এলাকাটা উগ্রপন্থীদের আখড়া। সে জন্যই এলাকায় ‘দেখামাত্র গুলি’ করার নির্দেশও দেয় সেনা। অনেক পরিকল্পনা করে, বেশ কয়েক জায়গায় অনুমতি নিয়ে সেখানে পৌঁছতে পেরেছিলাম।’’

দেখুন সুযশের ফেসবুক পোস্ট

লক্ষ্যে পৌঁছতে সেই সময় নিজের কাছে নিজেই তিনটি শর্ত রেখেছিলেন সুযশ। এক, সেনার দখলে থাকা যে এলাকা ধরে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলেন সেখানকার কোনও ছবি না তোলা। দুই, এক দিনের মধ্যেই ফেরত আসা। তিন, নিজের সঙ্গে কোনও মূল্যবান জিনিস না রাখা। আর তাতেই সাফল্য এসেছিল। ওই অঞ্চলে টানা ৬ ঘণ্টা ছিলেন সুযশ। ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’-এ দাঁড়িয়ে পতাকা তোলেন তিনি। জায়গাটিকে নিজের দেশ হিসেবে দাবি করতে, সেখানকার মাটিতে শস্যদানা ছড়িয়ে দিয়েছিলেন সুযশ। কেন? সুযশের কথায়, ‘‘প্রাচীন সভ্যতায় কিছু নিয়ম ছিল। কোনও জমির মালিকানা দাবি করতে সেখানে ফসল ফলাতে হয় মালিককে। সে কারণেই আমি আমার দেশের জমিতে শস্য ছড়িয়ে, তাতে জল দিয়েছি। এ দেশ এখন আমার।’’

নিজের আবিষ্কার করা ‘দেশ’-এর একটি ওয়েবসাইটও খুলেছেন সুযশ। তাঁর কথায়, ‘‘এখন আমি রাজা। ঠাট্টা নয়, কেন না একটা গোটা দেশের মালিক এখন আমি। রাষ্ট্রপুঞ্জে এ বার একটা ই-মেল পাঠানোর সময় এসে গিয়েছে এখন।’’ বাবার জন্মদিনে দেশটির খোঁজ পেয়েছিলেন সুযশ। তাই, বাবা সুযোগ দীক্ষিতকেই ‘কিঙ্গডম অব দীক্ষিত’-এর প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন সুযশ। এটাই বাবাকে জন্মদিনে দেওয়া তাঁর উপহার।

তবে, এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপুঞ্জের কোনও মতামত জানা যায়নি। সুযশ কবে রাষ্ট্রপুঞ্জকে চিঠি পাঠাবেন জানা যায়নি তা-ও।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE