Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ডিজিট্যাল বাংলাদেশ, ডাক কলকাতার বিশেষজ্ঞকে

শেখ হাসিনার স্বপ্নের ‘ডিজিট্যাল বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে একটা বড় দায়িত্ব পালন করবেন কলকাতার এক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নতিকে স্বীকৃতি জানিয়ে ৭ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তারাই এই কাজে উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিয়েছে কলকাতার শিল্পোদ্যোগী বিক্রম দাশগুপ্তকে। বিক্রমবাবু সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে গ্লোবসিন গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা।

বিক্রম দাশগুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র

বিক্রম দাশগুপ্ত। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৪ ০২:২৩
Share: Save:

শেখ হাসিনার স্বপ্নের ‘ডিজিট্যাল বাংলাদেশ’ গড়ার কাজে একটা বড় দায়িত্ব পালন করবেন কলকাতার এক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ।

বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নতিকে স্বীকৃতি জানিয়ে ৭ কোটি ডলার ঋণ দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। তারাই এই কাজে উপদেষ্টা হিসেবে বেছে নিয়েছে কলকাতার শিল্পোদ্যোগী বিক্রম দাশগুপ্তকে। বিক্রমবাবু সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে গ্লোবসিন গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা। তাঁরই পরিকল্পনার ফসল সেক্টর ফাইভের তথ্যপ্রযুক্তি হাব ‘ইনফিনিটি’।

বিএনপি-জামাতে ইসলামি জোটের আমলে জঙ্গি অধ্যুষিত রাষ্ট্র হিসেবে আন্তর্জাতিক মহলে পরিচিতি পেয়েছিল বাংলাদেশ। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে দেশের সেই ভাবমূর্তি বদলে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আগুয়ান একটি আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার

ডাক দেন। এরই নাম তিনি দেন ‘ডিজিট্যাল বাংলাদেশ’। নিজের ছেলে মার্কিন প্রবাসী কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়কে তিনি এই কাজে নেতৃত্ব দেবার জন্য বেছে নেন।

নিজের তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবে জয়কে নিয়োগ করেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা। তার পর গত ছয় বছরে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে লক্ষণীয় উন্নতি করেছে বাংলাদেশ। ইন্টারনেট ব্যবহার এখন ও দেশের ঘরে ঘরে। খরচও আগের তুলনায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। শহরে তো বটেই, গ্রামের স্কুলগুলিতেও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। একের পর এক শহরকে আনা হচ্ছে ওয়াইফাইয়ের ছত্রচ্ছায়ায়।

তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের এই উন্নতিকেই স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। একটি রিপোর্টে বিশ্বব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এই ক্ষেত্রে বিপুল বিদেশি মুদ্রা আয়ের সুযোগ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই উন্নয়নশীল দেশটির। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক বিশ্বের সব উন্নত দেশে পরিচিত। তৈরি পোশাক রপ্তানি করেই সব চেয়ে বেশি ডলার আয় করে বাংলাদেশে।

এরই পাশাপাশি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভাল বাজার পেতে পারে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যও। তার জন্য সবার আগে প্রয়োজন উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পাওয়া এক ঝাঁক কর্মীর, যারা আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সফ্টওয়্যার ও অন্য পণ্য উৎপাদন করতে পারবে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি পণ্যের একটি ব্র্যান্ডিংও প্রযোজন।

ঋণ দেওয়ার পাশাপাশি এই দুই কাজ করার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট প্রকল্পের রূপরেখাও তৈরি করে দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। আর সেই প্রকল্প রূপায়ণের রাশই তুলে দেওয়া হয়েছে বিক্রমবাবুর হাতে।

বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, “বিশ্বব্যাঙ্কের এই প্রকল্প এ দেশে তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের বুনিয়াদ গড়ে দিতে পারে। বিদেশি মুদ্রা আয় তো একটা দিক, সব চেয়ে বড় কথা বাংলাদেশে এই শিল্পের বিকাশ হলে হাজার হাজার শিক্ষিত তরুণ-তরুণী হাতে কাজ পাবে।” ওই কর্তার কথায়, বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা যেমন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবে, তেমন বাংলাদেশের দক্ষ কর্মীরাও অন্য দেশে কদর পাবে। এই প্রকল্প রূপায়ণে সরকার তাই খুবই আন্তরিক।

শিল্পমহল সূত্রের খবর, বিভিন্ন দেশের বহু দক্ষ ও পরিচিত তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এই প্রকল্পের দায়িত্ব নিতে বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে আবেদন করেছিলেন। অনেক ঝাড়াই বাছাইয়ের পরে বিক্রমবাবুকে বেছে নিয়েছেন বিশ্বব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।

বিশ্বব্যাঙ্কের প্রকল্পের আওতায় আগামী আড়াই বছরে বাংলাদেশের প্রায় ৩৮ হাজার ছেলে-মেয়েকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আন্তর্জাতিক মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিয়ে সেই প্রশিক্ষক সংস্থা বাছাই করবেন বিক্রম দাশগুপ্ত। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রচার-বিপণনের নীতি নির্ধারণেও পরামর্শ দেবেন তিনি। বিক্রমবাবু বলেন, “ঢাকা চায় মাইক্রোসফট, গুগ্ল-এর মতো নামী বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি সে দেশে অফিস খুলুক। এই প্রকল্পে সেই কাজের দায়িত্বও আমাকেই দেওয়া হয়েছে।”

অন্য বিষয়গুলি:

bikrom dasgupta digital bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE