Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
International news

কুমির শিকারের টোপ! রক্তাক্ত শরীরে জলের ধারে বসিয়ে রাখা হত কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের

জানেন কি বাস্তবেও এমন নজির রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গল্পের থেকে কিছুটা পার্থক্য আছে বৈকি। সেটা ছিল বাঘের টোপ আর এটা কুমিরের টোপ!

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১০:৩০
Share: Save:
০১ ১৪
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘টোপ’ গল্পটা আমাদের অনেকেরই জানা। ছোট শিশুকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে বাঘ শিকার করেছিলেন রাজাবাহাদুর। শিকার করা বাঘের চামড়া দিয়ে ঝকঝকে জুতো বানিয়েছিলেন। গল্পের শেষে যখন জানা যায় বাঘের টোপ বলতে আসলে কি? শিউরে উঠতে হয়।

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘টোপ’ গল্পটা আমাদের অনেকেরই জানা। ছোট শিশুকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করে বাঘ শিকার করেছিলেন রাজাবাহাদুর। শিকার করা বাঘের চামড়া দিয়ে ঝকঝকে জুতো বানিয়েছিলেন। গল্পের শেষে যখন জানা যায় বাঘের টোপ বলতে আসলে কি? শিউরে উঠতে হয়।

০২ ১৪
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাঘের ‘টোপ’ নেহাতই গল্প কথা। কিন্তু জানেন কি বাস্তবেও এমন নজির রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গল্পের থেকে কিছুটা পার্থক্য আছে বৈকি। সেটা ছিল বাঘের টোপ আর এটা কুমিরের টোপ!

নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাঘের ‘টোপ’ নেহাতই গল্প কথা। কিন্তু জানেন কি বাস্তবেও এমন নজির রয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে গল্পের থেকে কিছুটা পার্থক্য আছে বৈকি। সেটা ছিল বাঘের টোপ আর এটা কুমিরের টোপ!

০৩ ১৪
একসময় কৃষ্ণাঙ্গদের ক্রীতদাস বানিয়ে রাখত আমেরিকার মানুষ। নিজেদের বিলাসিতার উপাদান করে তোলা হত তাঁদের। তখনই কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করতেন তাঁরা। ছোট শিশুগুলোকে টোপ করে কুমির শিকার করতেন।

একসময় কৃষ্ণাঙ্গদের ক্রীতদাস বানিয়ে রাখত আমেরিকার মানুষ। নিজেদের বিলাসিতার উপাদান করে তোলা হত তাঁদের। তখনই কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করতেন তাঁরা। ছোট শিশুগুলোকে টোপ করে কুমির শিকার করতেন।

০৪ ১৪
এই প্রথার প্রচলন ছিল আমেরিকার লুইজিয়ানা এবং ফ্লোরিডায়। ১৮০০-১৯০০ সালে কুমিরের চামড়ার ব্যাপক চাহিদা ছিল। কুমিরের চামড়া দিয়ে জুতো, জ্যাকেট, বেল্ট এবং অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করা হতো।

এই প্রথার প্রচলন ছিল আমেরিকার লুইজিয়ানা এবং ফ্লোরিডায়। ১৮০০-১৯০০ সালে কুমিরের চামড়ার ব্যাপক চাহিদা ছিল। কুমিরের চামড়া দিয়ে জুতো, জ্যাকেট, বেল্ট এবং অন্যান্য সামগ্রী তৈরি করা হতো।

০৫ ১৪
কিন্তু কুমির শিকার করাটা সহজ ছিল না। অন্ধকারে জলে নেমে কুমির শিকার করতে গিয়ে প্রায়শই প্রাণহানি ঘটত শ্বেতাঙ্গদের। বা কুমিরের শিকার হয়ে হাত-পা খোয়াতে হত শিকারিদের। তাই কুমির শিকারের সহজ পন্থা টোপ দিয়ে কুমিরকেই ডাঙায় তোলা।

কিন্তু কুমির শিকার করাটা সহজ ছিল না। অন্ধকারে জলে নেমে কুমির শিকার করতে গিয়ে প্রায়শই প্রাণহানি ঘটত শ্বেতাঙ্গদের। বা কুমিরের শিকার হয়ে হাত-পা খোয়াতে হত শিকারিদের। তাই কুমির শিকারের সহজ পন্থা টোপ দিয়ে কুমিরকেই ডাঙায় তোলা।

০৬ ১৪
তারপর আড়াল থেকে গুলি করে কুমিরকে ঘায়েল করা। আর এই টোপ হিসাবেই ব্যবহার করা হত কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের। একে বলা হয় ‘অ্যালিগেটর বেট’ বা ‘গেটর বেট’।

তারপর আড়াল থেকে গুলি করে কুমিরকে ঘায়েল করা। আর এই টোপ হিসাবেই ব্যবহার করা হত কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের। একে বলা হয় ‘অ্যালিগেটর বেট’ বা ‘গেটর বেট’।

০৭ ১৪
টোপ হিসাবে ব্যবহার করে কুমির শিকারের উপায় অবশ্য আরও ছিল। তাঁরা চাইলেই হাঁস, মুরগি, খরগোশ এমনকি ছাগলও কাজে লাগাতে পারতেন, কিন্তু এগুলো ছিল দামি। আর কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের কোনও মূল্য তাঁদের সমাজে ছিল না। সে কারণে কৃষ্ণাঙ্গ শিশুগুলোকেই বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা।

টোপ হিসাবে ব্যবহার করে কুমির শিকারের উপায় অবশ্য আরও ছিল। তাঁরা চাইলেই হাঁস, মুরগি, খরগোশ এমনকি ছাগলও কাজে লাগাতে পারতেন, কিন্তু এগুলো ছিল দামি। আর কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের কোনও মূল্য তাঁদের সমাজে ছিল না। সে কারণে কৃষ্ণাঙ্গ শিশুগুলোকেই বেছে নিয়েছিলেন তাঁরা।

০৮ ১৪
১৯২৩ সালে টাইম ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল, কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের অগভীর জলে খেলা করতে বলা হত বা জলাশয়ের ধারে ক্ষতবিক্ষত করে বসিয়ে রাখা হত। যাতে রক্তের গন্ধে কুমির তার শিকার সহজেই খুঁজে নেয়। আর দূরে ঝোপে লুকিয়ে থাকতেন শিকারিরা।

১৯২৩ সালে টাইম ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছিল, কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের অগভীর জলে খেলা করতে বলা হত বা জলাশয়ের ধারে ক্ষতবিক্ষত করে বসিয়ে রাখা হত। যাতে রক্তের গন্ধে কুমির তার শিকার সহজেই খুঁজে নেয়। আর দূরে ঝোপে লুকিয়ে থাকতেন শিকারিরা।

০৯ ১৪
কুমির শিশুগুলোকে আক্রমণ করলেই গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হত তার শরীর। কখনও আবার অপেক্ষা করা হত শিকার খাওয়ার। কারণ খাওয়ার সময় কুমিরের মনোযোগ শিকারের উপরই থাকে, তাতে মারতেও সুবিধা হত। টাইম ম্যাগাজিনে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছিল, এ খবর ভুয়ো।

কুমির শিশুগুলোকে আক্রমণ করলেই গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হত তার শরীর। কখনও আবার অপেক্ষা করা হত শিকার খাওয়ার। কারণ খাওয়ার সময় কুমিরের মনোযোগ শিকারের উপরই থাকে, তাতে মারতেও সুবিধা হত। টাইম ম্যাগাজিনে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর, প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবশ্য বলা হয়েছিল, এ খবর ভুয়ো।

১০ ১৪
তবে একেবারেই যে এ খবর উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তার প্রমাণও বারে বারে মিলেছে। যেমন জিম ক্রো মিউজিয়ামে এমন একটি দুর্লভ ছবি পাওয়া গিয়েছিল। ছবিটি ফ্লোরিডারই কোনও এক বাসিন্দা তোলা ছিল।

তবে একেবারেই যে এ খবর উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তার প্রমাণও বারে বারে মিলেছে। যেমন জিম ক্রো মিউজিয়ামে এমন একটি দুর্লভ ছবি পাওয়া গিয়েছিল। ছবিটি ফ্লোরিডারই কোনও এক বাসিন্দা তোলা ছিল।

১১ ১৪
শোনা যায়, তিনি নাকি নিজের বাড়ির দেওয়ালে ওই ছবিটা টাঙিয়ে রেখেছিলেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ন’জন কৃষ্ণাঙ্গ শিশু নগ্ন অবস্থায় বসে রয়েছে। আর তাদের তলায় লেখা ‘অ্যালিগেটর বেট’।

শোনা যায়, তিনি নাকি নিজের বাড়ির দেওয়ালে ওই ছবিটা টাঙিয়ে রেখেছিলেন। ছবিতে দেখা যাচ্ছে, ন’জন কৃষ্ণাঙ্গ শিশু নগ্ন অবস্থায় বসে রয়েছে। আর তাদের তলায় লেখা ‘অ্যালিগেটর বেট’।

১২ ১৪
তেমন আবার এরও আগে ১৯০৮ সালে ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত হয়েছিল নিউ ইয়র্ক চিড়িয়াখানার ঘটনা। তাতে লেখা হয়েছিল, ওই চিড়িয়াখানার এক কর্মী দুই কৃষ্ণাঙ্গ শিশুকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করেন। কারণ চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা লোকেরা যাতে কুমির দেখতে পান তাই কুমিরগুলোকে শীতকালীন ট্যাঙ্ক থেকে অন্য ট্যাঙ্কে সরানোর দরকার পড়েছিল।

তেমন আবার এরও আগে ১৯০৮ সালে ওয়াশিংটন টাইমসে প্রকাশিত হয়েছিল নিউ ইয়র্ক চিড়িয়াখানার ঘটনা। তাতে লেখা হয়েছিল, ওই চিড়িয়াখানার এক কর্মী দুই কৃষ্ণাঙ্গ শিশুকে টোপ হিসাবে ব্যবহার করেন। কারণ চিড়িয়াখানায় ঘুরতে আসা লোকেরা যাতে কুমির দেখতে পান তাই কুমিরগুলোকে শীতকালীন ট্যাঙ্ক থেকে অন্য ট্যাঙ্কে সরানোর দরকার পড়েছিল।

১৩ ১৪
সহজে কুমিরগুলোতে অন্য ট্যাঙ্কে সরানোর উপায় নাকি ছিল কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করা। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরে সাফাই দিয়েছিলেন, শিশুগুলোর কোনও ক্ষতি হয়নি। তার উপর তাঁদের বিজ্ঞাপন দেখে ওই দুই শিশুর মা-ই নাকি তাঁদের কাছে শিশুগুলোকে বিক্রি করেছিলেন। বিনিময়ে ২ ডলার নিয়েছিলেন তাঁরা।

সহজে কুমিরগুলোতে অন্য ট্যাঙ্কে সরানোর উপায় নাকি ছিল কৃষ্ণাঙ্গ শিশুদের টোপ হিসাবে ব্যবহার করা। চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ অবশ্য পরে সাফাই দিয়েছিলেন, শিশুগুলোর কোনও ক্ষতি হয়নি। তার উপর তাঁদের বিজ্ঞাপন দেখে ওই দুই শিশুর মা-ই নাকি তাঁদের কাছে শিশুগুলোকে বিক্রি করেছিলেন। বিনিময়ে ২ ডলার নিয়েছিলেন তাঁরা।

১৪ ১৪
কিন্তু চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সাফাই একেবারেই সন্তোষজনক ছিল না। কারণ, সে সময়ে আফ্রিকান মহিলারা পড়াশোনা জানতেন না। লিখতে-পড়তে পারতেন না তাঁরা। তাহলে কী ভাবে বিজ্ঞাপনের ভাষা পড়ে ফেললেন? প্রশ্ন উঠেছিল। যার কোনও জবাব দেননি কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের সাফাই একেবারেই সন্তোষজনক ছিল না। কারণ, সে সময়ে আফ্রিকান মহিলারা পড়াশোনা জানতেন না। লিখতে-পড়তে পারতেন না তাঁরা। তাহলে কী ভাবে বিজ্ঞাপনের ভাষা পড়ে ফেললেন? প্রশ্ন উঠেছিল। যার কোনও জবাব দেননি কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy