ছবি: এএফপি।
মঙ্গলবার বিকেলে সমর্থকদের ই-মেল করে খবরটা দিয়েছিলেন ডেমোক্র্যাট দলের প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী জো বাইডেন। ঘোষণা করেছিলেন, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাঁর সহযোদ্ধার নাম। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে কমলা হ্যারিসকে মনোনীত করার সেই খবর চাউর হতেই আবেগের বন্যায় ভাসছেন ডেমোক্র্যাট কর্মী-সমর্থকেরা।
ওই ই-মেলে গত কয়েক মাসের করোনা পরিস্থিতি ও সম্প্রতি বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে জ্বলে ওঠা আমেরিকার প্রসঙ্গে টেনে বাইডেন লিখেছেন, ‘সময়টা স্বাভাবিক নয়।... আমার পাশে সহযোদ্ধা হিসেবে এমন এক জনকে চাই যিনি সপ্রতিভ, কড়়া এবং নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। কমলাই সেই ব্যক্তি।’’ ক্যালিফর্নিয়ার সেনেটর, ৫৫ বছরের কমলা নিজেও টুইট করে বাইডেনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
কমলা ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। বাবা জামাইকার বাসিন্দা, আফ্রিকান বংশোদ্ভূত। মা শ্যামলা গোপালন চেন্নাইবাসী ভারতীয়। আমেরিকার ইতিহাসে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে মনোনীত হওয়া প্রথম এশীয়-মার্কিন এবং কৃষ্ণাঙ্গ মহিলা হলেন কমলাই। তাই বাইডেনের এই ঘোষণায় উচ্ছ্বসিত এশীয়-মার্কিন, ইন্দো-মার্কিন এবং কৃষ্ণাঙ্গদের একটা বড় অংশ। কমলার মনোনীত হওয়ার খবরে খুশির হাওয়া তাঁর পরিবারেও। কাল বাইডেনের ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কমলার বোন মায়া টুইটারে একটি আবেগঘন বার্তা পোস্ট করেন। দিদির নানা ছবির কোলাজ দিয়ে সাজানো সেই বার্তায় মায়া লিখেছেন, ‘‘আমাদের মাকে না জানলে কমলাকে জানা অসম্পূর্ণ থেকে যায়। ওঁকে মিস করছি। তবে জানি, মা আর আমাদের পূর্বপুরুষেরা আজ আনন্দিত।’’
বাইডেনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পেপসিকোর প্রাক্তন প্রধান ইন্দ্রা নুয়ি-সহ বহু ভারতীয় বংশোদ্ভূত। ইন্দ্রার মতে, ‘এটা দারুণ সিদ্ধান্ত’ এবং ‘আমেরিকার নাগরিকদের কাছে গর্বের মুহূর্ত।’ অভিনেত্রী প্রিয়ঙ্কা চোপড়ার টুইট, ‘সব বর্ণের, সমস্ত মহিলার কাছে এটি ঐতিহাসিক, বদল-আনা এবং গর্বের মুহূর্ত।’’ মার্কিন রাজনীতির সমীক্ষাকারী এক ইন্দো-মার্কিন সংস্থার এগ্জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর নীল মাখিজা এই মনোনয়নকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, জো-কমলা জুটির প্রচারে তাঁরা ১ কোটি ডলার সংগ্রহ করবেন। পাশাপাশি কমলার জন্য হিন্দিতে প্রচারের জন্য ভাবনা-চিন্তা করছে তাঁর ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমর্থকেরা। ‘আমেরিকা মে খিলা কমল’ নামে এই প্রচার শুরু করার কথা তারা গত কালই ঘোষণা করেছেন।
ডেমোক্র্যাট সমর্থকদের একটা বড় অংশের মতে, বাইডেনের এই নির্বাচন একই সঙ্গে অপ্রত্যাশিত, অভাবনীয় এবং চমকে দেওয়ার মতো। যদিও বাইডেনের পক্ষে এই সিদ্ধান্ত নেওয়াটা মোটেই সহজ ছিল না। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এক সময় বাইডেনের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন কমলা। জনপ্রিয়তা ও সমর্থনের দৌড়ে পিছিয়ে পড়ে গত বছর ডিসেম্বরেই সেই দৌড় থেকে তিনি সরে দাঁড়ান। ডেমোক্র্যাট বিতর্কসভায় এক সময় জনসমক্ষে বাইডেনকে খুবই কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন কমলা। সেই আঘাত সরিয়ে রেখে, আসন্ন নির্বাচনকে পাখির চোখ করে বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত তাঁর চারিত্রিক দৃঢ়তা এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য মরিয়া চেষ্টাকেই স্বীকৃতি দিচ্ছে বলে মনে করছেন দলীয় সমর্থকেরা।
বাইডেনের সিদ্ধান্তে কার্যত খুশি ভারতীয় বংশোদ্ভূতেরা, যাঁরা এখন এ দেশের ভোটারদের একটা বড় অংশ। মার্কিন সরকারের ভিসা নীতি সংক্রান্ত একাধিক সিদ্ধান্তে যখন অনাবাসী ভারতীয়েরা আশঙ্কার মেঘ দেখছেন, তখন বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত অনেকের মনেই আশার আলো জোগাচ্ছে।
তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মত স্বাভাবিক ভাবেই নেতিবাচক। কাল হোয়াইট হাউসে তিনি বলেন, ‘‘ওঁর (কমলার) মনোনীত হওয়ার খবরে চমকে গিয়েছি।’’ তাঁর মতে, মার্কিন সেনেটে সবচেয়ে খারাপ, ভয়ঙ্কর আর দুর্বিনীত হলেন হ্যারিস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy