দুই দেশ একে অপরকে প্রতিনিয়ত যুদ্ধের হুমকি দিচ্ছে। উত্তর কোরিয়া আর আমেরিকা। এই দুই দেশের পারস্পরিক দ্বন্দ্বে প্রাণ অতিষ্ঠ জাপানের একটা বড় অংশের। আমেরিকার দীর্ঘদিনের বন্ধু দেশ জাপানকে মোটেও ভাল চোখে দেখেন না উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। তিনি যে দিন থেকে গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার হুমকি দিয়েছেন, আতঙ্কে দিন কাটছে পশ্চিম জাপানের বাসিন্দাদের। কারণ উত্তর কোরিয়া থেকে গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়লে তা পশ্চিম জাপানের উপসাগরীয় এলাকা দিয়ে যেতে বাধ্য। ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলে এলকাবাসীরা কী ভাবে তার মোকাবিলা করবেন, সে নিয়ে এ বার মহড়া দিলেন জাপানের উপসাগরীয় শহর কোতোউরার বাসিন্দারা।
আমেরিকার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্ক বরাবরই শীতল। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে দীর্ঘদিন ধরে পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে কিম জং উনের দেশ। চলতি বছরে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করে পিয়ংইয়ং ঘোষণা করেছিল, তাদের বানানো ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আমেরিকার শহরগুলিকেও ধ্বংস করতে পারে। তার পরই নড়েচড়ে বসে মার্কিন প্রশাসন। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করে হোয়াইট হাউস। ক্ষিপ্ত কিম এর পরেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় মার্কিন দ্বীপ গুয়ামে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সরাসরি হুমকি দেন। একের পর এক টুইট করে পাল্টা জবাব দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। জানান, যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত তাঁদের সেনাও। গত কয়েক দিনে কিছুটা হলেও সুর নরম করেছে দুই দেশই। কিন্তু জাপানের আতঙ্ক তাতেও কাটছে না। এই পরিস্থিতিতে সোমবার থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যৌথ মহড়া শুরু করবে মার্কিন সেনা। প্রতি বছরই এটা হয়ে থাকে। কিন্তু এ বারের পরিস্থিতি অন্য রকম। জাপান মনে করেছে, ওই যৌথ সেনা মহড়া দেখে ক্ষিপ্ত হতে পারেন কিম। তাই আগেভাগেই মহড়া সেরে রেখেছেন কোতাউরার বাসিন্দারা।
পশ্চিম জাপানের ছোট্ট শহর কোতোউরার জনসংখ্যা আঠারো হাজার। গত কাল স্থানীয় শিশুরা মাঠে ফুটবল খেলছিল। আচমকাই বেজে ওঠে সাইরেন। মাঠ ছেড়ে সঙ্গে সঙ্গে পাশের স্কুলে আশ্রয় নেয় তারা। সঙ্গে ছিলেন তাদের বাবা-মায়েরাও। প্রায় দশ মিনিট ধরে মাথা নিচু করে হাত ঢেকে নিজেকে বাঁচানোর কৌশলও শেখানো হয়েছে শহরের বাসিন্দাদের। ফুটবল কোচ আকিরা হামাকাওয়া বললেন, ‘‘আতঙ্কে দিন কাটছে। উত্তর কোরিয়া যে কোনও দিন শহরের উপর ক্ষেপণাস্ত্র পড়তে পারে।’’ কাল ১৩০ জন বাসিন্দা মহড়ায় সরাসরি অংশ নেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ছাড়া, রোজই টিভি চ্যানেল ও স্থানীয় খবরের কাগজগুলিতে নোটিস দিয়ে বাসিন্দাদের সতর্ক করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy