উদ্ধার: সেই সব অস্ত্রশস্ত্র। নিজস্ব চিত্র
দিন দুপুরে খালের জলে তোলপাড়। বাংলাদেশের রূপগঞ্জের বাসিন্দারা দেখলেন, খালপাড়ে হঠাৎই পুলিশের ঢল। পাম্প এনে ছেঁচে ফেলা হল ঘোলা জলের অনেকটা। ডুবুরি নামল তার পরে। একে একে তুলে আনল আট-ন’টি প্লাস্টিকের বস্তা, যা লম্বা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল পাশের একটি গাছের গোড়ার সঙ্গে। সেই বস্তা খুলতেই পুলিশের চোখ কপালে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জে এ ভাবেই উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ ও বিস্ফোরক। খালের জলে প্লাস্টিকের প্যাকেটে মুড়ে ডুবিয়ে রাখা এই অস্ত্র ভাণ্ডার কে কী উদ্দেশ্যে বাংলাদেশে তৈরি করেছিল, তার স্পষ্ট জবাব পুলিশের কাছেও নেই। তবে এই সব অস্ত্রশস্ত্র চিনে তৈরি। পুলিশের আইজি কে এম শহিদুল হকের কথায়, ‘‘বাংলাদেশকে নিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র চলছে। তারই অঙ্গ হিসেবে কোনও অপরাধী চক্র এত বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদ এনে থাকতে পারে।’’ আইজি জানান, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জেএমবি (জামাতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশ)-এর এক সদস্যকে জেরা করেই এই খালের হদিস মিলেছে। তবে এদের পিছনে আরও শক্তিশালী মাথা রয়েছে বলেই তাঁর অনুমান। খালের পাশের একটি বাড়ি থেকেও কিছু অস্ত্র মিলেছে বলে আইজি জানিয়েছেন। তিন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। তবে জঙ্গিদমন শাখার এক কর্তাই বলছেন—হতে পারে অনেক আগেই এই অস্ত্রভাণ্ডার দেশে আনা হয়েছিল। তার পরে তা আর বিলিবণ্টন করা যায়নি।
বিএনপি-জামাত সরকারের আমলে বেশ কয়েক দফায় চিনের চোরাবাজার থেকে আসা বিপুল অস্ত্র শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের ছত্রচ্ছায়ায় অসম ও উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গিদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামে সরকারি শিল্প মন্ত্রকের জেটিতে একটি জাহাজ থেকে ১০টি ট্রাকে অস্ত্র বোঝাই করার সময়ে এক পুলিশের তৎপরতায় তা ধরা পড়ে য়ায়। ধৃতরা জেরায় জানায়, বেশ কয়েক বারই তারা এ ভাবে আলফা ও অন্য ভারতীয় জঙ্গিদের কাছে অস্ত্র পাচার করেছে। বাংলাদেশে সেই সময়ে ফুলেফেঁপে ওঠা জেএমবি ও অন্য জঙ্গি সংগঠনের কাছেও সে অস্ত্রের ভাগ পৌঁছে যেত। জঙ্গিদমন শাখার অফিসারেরা মনে করছেন, এই অস্ত্র সেই সময়েও লুকিয়ে রাখা হতে পারে।
খালে মিলল
•সাব মেসিন গান ৬২টি
• ম্যাগাজিন ৫১টি
• রকেট লঞ্চার ২টি
• গ্রেনেড ৫৪টি
• পিস্তল ৫টি
• ওয়াকিটকি ২টি
সঙ্গে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক, ডেটোনেটর, বুলেট ও বোমা তৈরির সামগ্রী
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy