প্রতীকী ছবি রয়টার্স
করোনাভাইরাসের নতুন রূপ নিয়ে ইতিমধ্যে যথেষ্ট উদ্বেগ তৈরি হয়েছে বিশ্ব জুড়ে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এই ভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক দেশ তাদের আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করেছে। সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, দেশগুলি যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নিলে ওমিক্রন ‘মারাত্মক বিপদ’ ডেকে আনতে পারে।
ওমিক্রন কতটা বিপজ্জনক তা নিয়ে এখনও স্পষ্ট করে কিছু বলার মতো সময় আসেনি। কারণ, একে নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে-ও যথেষ্ট তথ্য নেই। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রয়োজন রয়েছে আরও তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণার। বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠে আসছে ওমিক্রনকে কেন্দ্র করে। এর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হল, ডেল্টার জায়গা কি নিতে পারবে ওমিক্রন। শুধু ইউরোপেই এক সপ্তাহের মধ্যে ২০ লক্ষের ও বেশি মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল ডেল্টা। ওমিক্রন কি একই গতিতে ছড়িয়ে পড়বে।
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশ দ্রুত গতিতেই ছড়িয়ে পড়ছে কোভিডের এই নতুন রূপ। কিন্তু, অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সেই গতি নজরে আসেনি। নেদারল্যান্ডসে ১৩, ব্রিটেনে তিন, আস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনে দু’জন করে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। এ ছাড়া এক হাজারের মতো ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় টিকাদানের হারও বেশ কম। ফলে এই ভাইরাস রুখতে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা বেশ কঠিন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রোগ প্রতিরোধবিদ্যা ও সংক্রামক রোগের অধ্যাপক ইয়োনাটান গ্র্যাড সম্প্রতি টুইট করে জানিয়েছেন, ওমিক্রনের সংক্রমণ কার্যকরী হতে দুই থেকে চার সপ্তাহ সময় নিতে পারে।
ওমিক্রন কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, সেই প্রশ্নও উঠে আসছে। দক্ষিণ আফ্রিকার যে তথ্য উঠে এসেছে, তা নিয়ে এখন কোনও সিদ্ধান্তে আসা যাবে না বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কোভিডের অন্য রূপের সঙ্গে তুলনা করতে হলে বিজ্ঞানীদের আরও পর্যবেক্ষণ করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিডনির সমস্যা এবং মধুমেহ রোগীর ক্ষেত্রে কোভিড যতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, ভাইরাসের এই রূপ কি ততটাই ভয়ঙ্কর হবে? এ নিয়েও বিশেষজ্ঞদের পর্যবেক্ষণ করতে হবে। অধ্যাপক গ্র্যাড-এর মতে, ওমিক্রন কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তা বুঝতে অন্তত দু’থেকে তিন সপ্তাহ লাগতে পারে।
তৃতীয় প্রশ্ন হল, চলতি টিকা এবং ওমিক্রন ধরা পড়লে যে ওষুধ দেওয়া হবে তা কতটা কার্যকরী হবে? ইতিমধ্যে ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিনের অনন্ত ৩০টি মিউটেশন ঘটে গিয়েছে। এই ভাইরাল জিনোমে আরও ২০টি মিউটেশন হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু বিপজ্জনকও হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অধ্যাপক গ্র্যাড মনে করেছেন, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে কোভিড ভ্যাকসিনের কার্যকরিতা সংক্রান্ত তথ্য আগামী এক-দু’সপ্তাহের মধ্যে জানা যাবে।
মনে করা হচ্ছে, ওমিক্রন শুরুতেই ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়বে না। ফলে সরকার হাতে সময় পাবে এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে প্রস্তুতি নেওয়া জন্য। ভ্রমণের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, নিভৃতবাসের ব্যবস্থা নিয়ে এর সংক্রমণ অনেকটাই আটকে দেওয়া সম্ভব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy