আহমেদ সেলর হাই স্কুল থেকে মাঝপথে বিদায় নেওয়া দাউদের অন্ধকার জগতের পথ চেনা শুরু দাদার হাত ধরে। তাঁর দাদা সাবির ইব্রাহিম কাসকরই শুরু করেছিলেন সংগঠিত ভাবে অপরাধমূলক কাজ। যেটা পরে পরিচিত হয় ‘ডি কোম্পানি’ নামে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৯ ১৩:৩০
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
পুলিশের হেড কনস্টেবলের ছেলে। মা গৃহবধূ। মুম্বইয়ের ডোংরি এলাকা থেকে ডি কোম্পানির অধীশ্বর। সে দিনের স্কুলছুট বালক আজ আন্ডারওয়র্ল্ডের ডন। দাউদ ইব্রাহিমের ‘কেরিয়ার গ্রাফ’ হার মানাবে হলিউডি থ্রিলারের চিত্রনাট্যকেও।
০২১৫
জন্ম মহারাষ্ট্রের রত্নগিরি জেলায়। ১৯৫৫ সালের ২৬ ডিসেম্বর। বাবা ইব্রাহিম কাসকর পুলিশকর্মী। মা আমিনা ঘরসংসার নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। মুম্বইয়ের ডোংরি এলাকার অলিগলিতে বেড়ে উঠেছিলেন দাউদ।
০৩১৫
আহমেদ সেলর হাই স্কুল থেকে মাঝপথে বিদায় নেওয়া দাউদের অন্ধকার জগতের পথ চেনা শুরু দাদার হাত ধরে। তাঁর দাদা সাবির ইব্রাহিম কাসকরই শুরু করেছিলেন সংগঠিত ভাবে অপরাধমূলক কাজ। যেটা পরে পরিচিত হয় ‘ডি কোম্পানি’ নামে।
০৪১৫
‘ডি কোম্পানি’ নামটা ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দেওয়া। দাউদের নামের আদ্যক্ষর থেকেই এই নামকরণ। হাওয়ালা থেকে মাদক পাচার, গোয়েন্দাদের কাছে থাকা তথ্য অনুযায়ী অপরাধের সব শাখায় দাউদ দণ্ডমুণ্ডের কর্তা।
০৫১৫
১৯৯৩ সালের মুম্বই বিস্ফোরণের মূল চক্রী দাউদ ইব্রাহিমকে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দু’টি দেশই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদী বলে চিহ্নিত করে। দাউদের সঙ্গে ওসামা বিন লাদেনেরও যোগাযোগ ছিল বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
০৬১৫
২০০৮ সালে মুম্বই হামলার সঙ্গেও দাউদের ডি কোম্পানি জড়িত ছিল বলে গোয়েন্দাদের দাবি। এফবিআই-এর মোস্ট ওয়ান্টেড পলাতক বন্দির তালিকায় তিন নম্বরেই আছে দাউদের নাম। ভারতীয় গোয়েন্দারা বরাবর দাবি করে এসেছেন, পাকিস্তানেই রয়েছেন দাউদ। কিন্তু প্রতি বারই পাকিস্তান এই দাবি অস্বীকার করেছে।
০৭১৫
ডন-জীবনের প্রথম দিকে দাউদের মূল সহকারী ছিলেন ছোটা রাজন।
০৮১৫
দাউদ-সাম্রাজ্যের আর এক মূল স্তম্ভ ছিলেন তাঁর বোন হাসিনা পার্কার। ১৯৯১ সালে এক গোষ্ঠী সংঘর্ষে মারা যান তাঁর স্বামী ইসমাইল পার্কার। এই ঘটনার জেরেই হাসিনা ধীরে ধীরে হয়ে ওঠেন গডমাদার।
০৯১৫
গোয়েন্দাদের দাবি, দাউদের অবর্তমানে হাসিনার বশেই থাকত মুম্বইয়ের আন্ডারওয়র্ল্ড। ২০১৪ সালে মারা যান হাসিনা।
১০১৫
মুম্বইয়ের আরও দু’টি প্রধান দিকের সঙ্গে জড়িয়ে দাউদ ইব্রাহিমের নাম। ক্রিকেট ও বিনোদন। বলিউডের তারকাদের পাশে শারজায় ক্রিকেট গ্যালারিতেও তাঁকে দেখা গিয়েছে।
১১১৫
২০১৩ সালে প্রাক্তন ক্রিকেটার দিলীপ বেঙ্গসরকর দাবি করেন, ১৯৮৬ সালে শারজায় ভারতীয় ক্রিকেটারদের সাজঘরে ঢুকে পড়েছিলেন দাউদ। সরাসরি অফার দিয়েছিলেন ক্রিকেটারদের। যদি শারজা কাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে হারানো যায়, তা হলে প্রত্যেককে একটি করে গাড়ি উপহার দেবেন, এমনটাও নাকি বলেছিলেন দাউদ।
১২১৫
বিনোদন জগতে তো দাউদের নাম বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে। এই অভিযোগ বহু দিনের যে, আরব সাগরের তীরে টিনসেল টাউনে অন্ধকার দুনিয়ার টাকা ওড়ে। বেনামে হিন্দি ছবি প্রযোজনা থেকে শুরু করে অভিনেতা, প্রযোজকদের হুমকি দিয়ে টাকা আদায়, দাউদের বিরুদ্ধে অভিযোগ অগণিত।
১৩১৫
মডেল অনিতা আয়ুব এবং আটের দশকের নায়িকা মন্দাকিনী দাউদের সঙ্গিনী ছিলেন বলেও গুঞ্জন। তাঁর জন্যই মন্দাকিনীর বলিউডের কেরিয়ার আচমকাই গুটিয়ে যায় বলে শোনা যায়। মন্দাকিনী নাকি তাঁর সঙ্গে দুবাইয়ে থাকতেনও। যদিও এই সংক্রান্ত দাবি বরাবর উড়িয়ে দিয়েছেন ‘রাম তেরি গঙ্গা মইলি’র নায়িকা।
১৪১৫
দাউদের স্ত্রীর নাম মেহজবীন শেখ ওরফে জুবিনা জারিন। ২০০৬ সালে দাউদের মেয়ে মাহরুখ ইব্রাহিমের সঙ্গে বিয়ে হয় প্রাক্তন পাকিস্তানি ক্রিকেটার জাভেদ মিয়াঁদাদের ছেলের। তার পাঁচ বছর পরে দাউদের আর এক মেয়ে মেহরিন বিয়ে করেন পাকিস্তানি-মার্কিন নাগরিক আয়ুবকে। দাউদের ছেলে মইনও বিয়ে করেন ২০১১ সালেই। লন্ডনের এক ব্যবসায়ীর মেয়ে, সানিয়াকে।
১৫১৫
দাউদ ইব্রাহিমের আত্মীয়দের একাংশ মুম্বইয়ের বাসিন্দা। ভারত-সহ সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে আছে তাঁর অপরাধের জাল। তাঁকে ধরতে চেষ্টার কসুর হয়নি। কিন্তু ডন এখনও নাগালের বাইরে।