হস্তক্ষেপ করেছে ভারত সরকার। আবু ধাবিতে আপাতত ফাঁসি হচ্ছে না উত্তরপ্রদেশের শাহজাদির। আরব আমিরশাহিতে ভারতীয় দূতাবাস জানিয়েছে, ‘রিভিউ পিটিশন’ দাখিল করা হয়েছে। ৩৩ বছরের শাহজাদির ফাঁসির বিষয়টি আপাতত বিবেচনাধীন রয়েছে।
শাহজাদি এখন আবু ধাবির আল ওয়াথবা জেলে রয়েছেন। আবু ধাবির আদালত তাঁকে ফাঁসির সাজা দিয়েছে। সেখানে একটি শিশুর দেখভালের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। সেই শিশুটির মৃত্যু হয়। এর পরে শাহজাদির বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ করেন শিশুটির বাবা-মা। সেই মামলাতেই শাহজাদিকে ফাঁসির সাজা দেয় আদালত। এর পরে গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের বান্দার বাড়িতে আবু ধাবির জেল থেকে ফোন করেন শাহজাদি। তাঁর বাবাকে জানান, পরের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর ফাঁসি হবে। তার আগে বাড়িতে শেষ বারের মতো ফোন করার অনুমতি দিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। কান্নায় ভেঙে পড়েন তরুণী। মেয়ের ফোন পেয়ে আবার জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হন তাঁর বাবা। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও আবেদন করেন। তার পরেই সক্রিয় হয় নয়াদিল্লি। আরব আমিরশাহিতে ভারতীয় দূতাবাস ‘রিভিউ পিটিশন’ দায়ের করার কথা জানায়।
উত্তরপ্রদেশের বান্দায় গয়রা মুলগি গ্রামে থাকতেন শাহজাদি। ছোটবেলায় রান্নাঘরে কাজ করতে গিয়ে মুখ, শরীরের অংশ পুড়ে গিয়েছিল। ২০২০ সালে সমাজমাধ্যমে আগরার যুবক উজ়েরের সঙ্গে আলাপ হয়েছিল শাহজাদির। অভিযোগ, তাঁকে বিয়ে করে চিকিৎসা করানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ওই ব্যক্তি। ভাল করে রাখবেন বলেও দাবি করেছিলেন। ২০২১ সালে শাহজাদি উজ়েরের সঙ্গে আগরা পালিয়ে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আগরায় এক দম্পতির কাছে শাহজাদিকে বিক্রি করে দিয়েছিলেন উজ়ের। ২০২১ সালে ওই দম্পতি শাহজাদিকে আবু ধাবি নিয়ে গিয়েছিলেন। বান্দার আদালতের নির্দেশে উজ়ের এবং ওই দম্পতির বিরুদ্ধে মানবপাচারের মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই দম্পতি ফৈজ এবং নাদিয়া এখন দুবাইয়ে থাকেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বান্দায় দায়ের করা সেই মামলা তুলে নেওয়ার অনুরোধও জানান শাহজাদি।
আবু ধাবিতে গিয়ে ওই দম্পতির চার মাসের সন্তানকে দেখভালের দায়িত্ব ছিল শাহজাদির। শিশুটির হঠাৎই মৃত্যু হয়। দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে আবু ধাবি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আদালত তাঁকে ফাঁসির সাজা দেয়। শাহজাদির বাবা সাবির জেলাশাসকের কাছে মেয়েকে বাঁচানোর আবেদন করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপও দাবি করেন। তিনি এবং শাহজাদি বার বার আবু ধাবির আদালতে দাবি করেন, চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছিল। যদিও আদালত মানেনি। তাঁকে ফাঁসির সাজা দেয়। তবে আপাতত ফাঁসি হচ্ছে না শাহজাদির।