Advertisement
০১ এপ্রিল ২০২৫
Space News

ভীমবেগে ধেয়ে আসছে ‘শহর খুনি’ গ্রহাণু, বড় ক্ষতি হতে পারে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশের!

পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লাগার আশঙ্কা রয়েছে ২০২৪ ওয়াইআর৪ গ্রহাণুর। একে নিমেষে ধুলোয় মিশে যেতে পারে একাধিক শহর, বলছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩৮
Share: Save:
০১ ২০
Asteroid

বুলেটের গতিতে ছুটে এসে রামধাক্কা! পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়তে পারে অতিকায় গ্রহাণু, নিমেষে মুছে যেতে পারে একাধিক দেশ! জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের এ হেন পূর্বাভাসে আতঙ্কিত গোটা বিশ্ব। গ্রহাণুর আঘাতে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে দুনিয়ার কোন প্রান্ত? এর থেকে বাঁচার নেই কি কোনও উপায়? ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে তার চুলচেরা বিশ্লেষণ।

০২ ২০
Asteroid

যে গ্রহাণুর ধাক্কায় পৃথিবী তছনছ হওয়ার আশঙ্কা, তার পোশাকি নাম ২০২৪ ওয়াইআর৪। সম্প্রতি এর হদিস মিলতেই মহাকাশ গবেষকদের কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। গ্রহাণুটি চওড়ায় ৪০ থেকে ১০০ মিটার বলে জানিয়েছেন তাঁরা। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন ‘শহরের খুনি’ বা ‘সিটি কিলার’।

০৩ ২০
Asteroid

২০২৪ ওয়াইআর৪-এর খোঁজ মেলা ইস্তক সেটির উপর কড়া নজর রেখে চলেছে বিশ্বের তাবড় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা। কে নেই তাতে? আমেরিকার নাসা, রাশিয়ার রসকসমস, চিনের সিএনএসএ থেকে শুরু করে ভারতের ইসরো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের হিসাব অনুযায়ী, ২০৩২ সাল নাগাদ পৃথিবীর ধার ঘেঁষে দুরন্ত গতিতে ছুটে যাবে ওই গ্রহাণু। আর ঠিক তখনই ধাক্কা লাগার আশঙ্কা করছেন তাঁরা।

০৪ ২০
Asteroid

নাসা জানিয়েছে, চলতি বছরের মার্চ মাসে টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহাণুটিকে ভাল ভাবে পর্যালোচনা করার সুযোগ পাওয়া যাবে। তার পর কিছু দিনের জন্য মহাশূন্যে অনেকটা দূরে চলে যাবে ২০২৪ ওয়াইআর৪। তাই এর উপর নজরদারিতে ইউরোপীয় মহাকাশ সংস্থার ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

০৫ ২০
Asteroid

মহাকাশ গবেষকদের দাবি, গ্রহাণুটি মহাশূন্যে হারিয়ে গেলে ফের তার গতিপথ খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন হবে। সে ক্ষেত্রে ২০২৮ সাল পর্যন্ত তাঁদের অপেক্ষা করতে হতে পারে। তবে ২০২৪ ওয়াইআর৪-এর গতি এবং কক্ষপথই বলে দেবে এটি পৃথিবীর জন্য কতটা বিপজ্জনক, বলছেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

০৬ ২০
Asteroid

জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের সাহায্যে গ্রহাণুটির ছবি তুলে নিতে চাইছেন। এতে মহাজাগতিক বস্তুটিকে খুঁটিয়ে পর্যবেক্ষণ করার কাজ অনেক বেশি সহজ হবে। পৃথিবীর থেকে এর বর্তমান দূরত্ব এখনও পরিমাপ করতে পারেননি মহাকাশ গবেষকেরা। ফলে ২০২৪ ওয়াইআর৪ মানবজাতির জন্য কতটা বিপজ্জনক, তা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছে না কোনও সংস্থাই।

০৭ ২০
Asteroid

তবে একটি ব্যাপারে দুনিয়ার তাবড় জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা একমত। সেটা হল গ্রহাণুটির আকার, গতি এবং গঠনের উপর নির্ভর করবে বিপদ। ২০২৪ ওয়াইআর৪ আকারে অস্বাভাবিক বড় হলে ধাক্কার অভিঘাত সহ্য করা যথেষ্ট কঠিন হবে। তবে এ ব্যাপারে এখনই কোনও ভবিষ্যদ্বাণী করতে চাইছেন না তাঁরা।

০৮ ২০
Asteroid

বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, পৃথিবীর সঙ্গে ধাক্কা লাগার পরিবর্তে এর বায়ুমণ্ডলে ঢুকে পড়বে ওই গ্রহাণু। আর সঙ্গে সঙ্গে বাতাসে হবে বিরাট বিস্ফোরণ, যা ৮০ লক্ষ টন ট্রাই নাইট্রো টলুইনের (টিএনটি) সমতুল্য হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। অর্থাৎ জাপানের হিরোশিমায় ফাটা পরমাণু বোমার থেকে ৫০০ গুণ বেশি শক্তিশালী বিস্ফোরণ সইতে হবে পৃথিবীকে।

০৯ ২০
Asteroid

বিশেষজ্ঞেরা আরও জানিয়েছেন, ওই বিস্ফোরণ কোথায় হচ্ছে তার উপর নির্ভর করবে এর অভিঘাতের পরিমাণ। তবে সাধারণ ভাবে ৫০ কিলোমিটার ব্যাসার্ধে সেটি বিরাট ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তাঁরা। আর তাই পৃথিবীর কোন প্রান্ত ‘গ্রহাণু দুর্ঘটনাপ্রবণ’, সেই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১০ ২০
Asteroid

২০২৪ ওয়াইআর৪-এর ঝুঁকির বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব ক্যাটালিনা স্কাই সার্ভে প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার ডেভিড র‌্যাঙ্কিন এবং তাঁর দলকে দিয়েছে নাসা। গ্রহাণুটির গতিবেগ হিসাব কষে পৃথিবীর কোন কোন এলাকায় এটির আছড়ে পড়ার আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি, সেই সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট দিয়েছেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট রিপোর্টটি প্রকাশ্যে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা।

১১ ২০
Asteroid

র‌্যাঙ্কিনের রিপোর্ট অনুযায়ী, গ্রহাণুটি উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ এশিয়া, আরব সাগর অথবা আফ্রিকার যে কোনও জায়গায় আছড়ে পড়তে পারে। এর জন্য বড় ক্ষতি হতে পারে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইথিওপিয়া, সুদান, নাইজ়েরিয়া, ভেনেজ়ুয়েলা, কলম্বিয়া এবং ইকুয়েডরের। তবে এই তালিকা যে কোনও সময়ে বদলে যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছে নাসা।

১২ ২০
Asteroid

গ্রহাণু ধাক্কার এই সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে মানবজাতিকে বাঁচাতে সমস্ত আন্তর্জাতিক সংগঠনকে একজোট হয়ে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। ২০২৪ ওয়াইআর৪ পৃথিবীর দিকে ধেয়ে এলে তাকে কী ভাবে ঠেকানো যাবে, তার নীল নকশা অবশ্য এখনও তৈরি করা যায়নি। ফলে যত দিন গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে বিপদের আশঙ্কা।

১৩ ২০
Asteroid

পৃথিবীর সঙ্গে গ্রহাণু বা ধূমকেতুর ধাক্কা লাগার সম্ভাব্য বিপদের পরিমাণ করে থাকে টোরিনো স্কেল। এতে ১১ পয়েন্টে রেটিং দেওয়া হয়। রেটিং যত বেশি হবে ততই আঘাত এবং ধ্বংসের ঝুঁকি বেশি হবে বলে মানেন দুনিয়ার তামাম জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা।

১৪ ২০
Asteroid

বর্তমানে ২০২৪ ওয়াইআর৪-র সঙ্গে পৃথিবীর ধাক্কা লাগা সংক্রান্ত রেটিং তিন বলে ধরা হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, গ্রহাণুটির গতিপথ সংশোধনের সুযোগ রয়েছে। সে ক্ষেত্রে রেটিং শূন্যে নেমে যেতে পারে। তখন আর এটির পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ার কোনও আশঙ্কাই থাকবে না।

১৫ ২০
Asteroid

গ্রহাণুটির হদিস মেলার পর পৃথিবীর সঙ্গে এর আঘাতের আশঙ্কা ১.২ শতাংশ বলে অনুমান করা হয়েছিল। পরে এই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় ২.৩ শতাংশ। বর্তমানে সেটি সামান্য নেমে দুই শতাংশে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অর্থাৎ গ্রহাণুটির পৃথিবীর গা ঘেঁষে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা ৯৮ শতাংশ।

১৬ ২০
Asteroid

আশ্চর্যজনক বিষয় হল, বিজ্ঞানের বরপুত্র তথা মাধ্যাকর্ষণের আবিষ্কর্তা আইজ্যাক নিউটনও একটি চিঠিতে পৃথিবীর ধ্বংসের কথা বলেছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, ২০৬০ সালে, অর্থাৎ আজ থেকে মাত্র ৩৫ বছর পর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হতে পারে গোটা বিশ্ব। আর সেটা হবে গ্রহাণুর সঙ্গে সংঘর্ষে। ১৭০৪ সালে ওই চিঠি লেখেন নিউটন।

১৭ ২০
Asteroid

পৃথিবীর ধ্বংসের দিনক্ষণ গণনার পদ্ধতিটিও চিঠিতে উল্লেখ করেন নিউটন। তাঁর দাবি ছিল, বাইবেলের ‘বুক অফ ড্যানিয়েল’-এ উল্লেখ করা তারিখ এবং সময় গণনা করে নির্দিষ্ট বছরটি নির্ধারণ করা গিয়েছে। নিউটনের লেখা চিঠিটি বর্তমানে জেরুসালেমের হিব্রু ইউনিভার্সিটির সংগ্রহশালায় সুরক্ষিত রয়েছে।

১৮ ২০
Asteroid

নিউটনের মতে, রোমান সাম্রাজ্য পতনের ১২৬০ বছর পর পৃথিবী ধ্বংসের লীলাখেলায় মেতে উঠতে পারে। নিউটন যে সময়ে এই গণনা করেছিলেন, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে এই সময়কে অনেক মনে হয়েছিল। তিনি ভেবেছিলেন যে, কয়েক বছরের মধ্যেই এ সব নিয়ে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে।

১৯ ২০
Asteroid

এই গণনা বাস্তবে ফলবে কি না তা জানা নেই। তবে বিজ্ঞানীদের অধিকাংশের দাবি, মহাকাশে যে ধরনের গ্রহাণু ঘুরে বেড়ায়, তাদের বেশির ভাগের আকার বড়জোর একটি গাড়ির মতো। পৃথিবীর কাছে পৌঁছোতে না পৌঁছোতেই সেই গ্রহাণুগুলি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।

২০ ২০
Asteroid

নাসার তরফে জানানো হয়েছে, ১০০ বছর পর পর মাঝারি আকারের গ্রহাণুর সঙ্গে পৃথিবীর সংঘর্ষ হয়। বায়ুমণ্ডলের সংস্পর্শে এসে তাতে আগুন ধরে যায়। খুব কম অংশ জল অথবা স্থলভাগে এসে পড়ে। তীব্র গতিবেগে আসার ফলে সেখানকার এলাকায় গ্রহাণুর ওজনের কারণে গর্ত তৈরি হতে পারে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy