Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

বেজিংয়ের ভেটোয় ফের রেহাই মাসুদের

মাসুদ প্রশ্নে আমেরিকা-সহ বাকি ৪ স্থায়ী সদস্য দেশ কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে। কিন্তু চিনের প্রাচীরে গিয়ে বার বার ধাক্কা খাচ্ছে এই প্রয়াস। সরকারি ভাবে আজ এ নিয়ে মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক।

মাসুদ আজহার। —ফাইল চিত্র।

মাসুদ আজহার। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

ডোকা লা নিয়ে চিনা প্যাঁচে মোদী সরকার যখন নাস্তানাবুদ, অস্বস্তি আরও বাড়াল বেজিং। পাকিস্তানে ঘাঁটি গেড়ে থাকা জইশ-ই-মহম্মদ প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারকে রাষ্ট্রপুঞ্জের কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি ভেটো দিয়ে আরও তিন মাসের জন্য আটকে দিল বেজিং। এর আগে মার্চেও চিন এই কাজ করে বলেছিল— মাসুদ জঙ্গি কি না সে বিষয়ে নানা জনের নানা রকম মত রয়েছে।

কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য— পাকিস্তানকে অখুশি করে মাসুদ প্রশ্নে চিন কঠোর হবে, এমন আশা করেনি সাউথ ব্লক। কিন্তু হতাশা এ কারণেই যে বিষয়টি নিয়ে কার্যত হাত-পা বাঁধা দিল্লির। ভারত মাসুদকে রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য যথাসম্ভব কূটনৈতিক দৌত্য চালিয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ৫ স্থায়ী সদস্য দেশের অন্যতম চিন। এপ্রিলে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল সে দেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা ইয়াং জিয়েচির সঙ্গেও মাসুদ আজহারের প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন।

মাসুদ প্রশ্নে আমেরিকা-সহ বাকি ৪ স্থায়ী সদস্য দেশ কিন্তু রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের পক্ষেই দাঁড়িয়েছে। কিন্তু চিনের প্রাচীরে গিয়ে বার বার ধাক্কা খাচ্ছে এই প্রয়াস। সরকারি ভাবে আজ এ নিয়ে মুখ খোলেনি বিদেশ মন্ত্রক। কিন্তু মন্ত্রকের পক্ষে ঘরোয়া ভাবে জানানো হচ্ছে— আগামি তিন মাস কেন, এ ব্যাপারে সুদূর ভবিষ্যতেও আশার আলো দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। এক কর্তার কথায়, স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসাবে চিনের হাতে ভেটো দেওয়ার অধিকার যত দিন থাকবে, তত দিন মাসুদকে ওই তালিকায় ঢোকানো যাবে না— এই সারসত্যটা না মেনে নিয়ে উপায় নেই।

আরও পড়ুন: চুক্তি ভেঙে কেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা, প্রশ্ন ইরানের

তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে‌ তিন মাস আগে এই প্রসঙ্গে বেজিংয়ের বিরুদ্ধে স্বর চড়িয়েছিল আমেরিকাও। এই বছর রাষ্ট্রপুঞ্জে নিরাপত্তা পরিষদের প্রেসিডেন্ট হয়েছেন মার্কিন প্রতিনিধি নিকি হ্যালি। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পরেই সাংবাদিক সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস-বিরোধী লড়াই প্রসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘এমন কেউ কেউ থাকবে, যারা নির্দিষ্ট কিছু ইস্যুতে ভেটো দেবেন। কিন্তু তাতে আমেরিকার পদক্ষেপ আটকানো যাবে না!’’ জইশ-প্রধান মাসুদ আজহারের উপর নিষেধাজ্ঞা নিয়েই যে হ্যালি কথা বলছেন এবং চিনের ভেটোই যে নিন্দিত হচ্ছে, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি।

কিন্তু আমেরিকার বার্তাকেও যে চিন আমল দিচ্ছে না, তা আজ ফের স্পষ্ট হয়ে গেল। বেজিং সাম্প্রতিক কালে ইসলামাবাদের সঙ্গে সখ্য যে ভাবে বাড়িয়ে তুলেছে, তাতে এমনিতেই শঙ্কিত নয়াদিল্লি। কিন্তু ক্রমাগত কূটনৈতিক প্রয়াস চালিয়ে যাওয়া ছাড়া অন্য পথও নেই মোদী সরকারের কাছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE