British unit once deployed in Afghanistan armed with rifle so powerful that can blast helicopters out of the sky dgtl
Gepard GM6 Lynx
এক গুলিতে ধ্বংস হেলিকপ্টার, পলকে উড়ে যাবে বুলেটপ্রুফ গাড়িও! এই রাইফেল একাই একশো
বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, 'ছোট হলেও বিষফোঁড়া'। জেপার্ড শত্রুপক্ষের কাছে বিষফোঁড়ার মতোই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে।
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৪:১৩
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৮
পুরাণের কাল হলে বলা যেত ‘ব্রহ্মাস্ত্র’। ঘোর কলিযুগে তাকে এক 'রাইফেল' বলা যেতে পারে। তবে এই রাইফেল ‘নামজাদা’ একে ৪৭ নয়। এর নাম 'জেপার্ড জিএম ৬ লিঙ্কস'। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, খুব সম্প্রতি একটি আন্তর্জাতিক শক্তি বিপুল পরিমাণে এই রাইফেল কিনতে শুরু করেছে।
০২১৮
খাতায় কলমে জেপার্ড রাইফেল গোত্রেরই অস্ত্র। তবে নিজগুণে সে কামানের পর্যায়ে উঠেছে। কামানের মতোই এক আঘাতে দূরের লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করতে পারে জেপার্ড। তফাৎ একটাই, কামানে গোলা ব্যবহৃত হয়। আর জেপার্ড ব্যবহার করে গুলি।
০৩১৮
জেপার্ডের ইতিহাস বলছে, একটি গুলির আঘাতেই সে বুলেটপ্রুফ গাড়ি উড়িয়ে দিতে পারে। আকাশ থেকে চলন্ত হেলিকপ্টারকে টেনে নামাতে পারে। ধ্বংসও করতে পারে। পুরোটাই জোপার্ডের ট্রিগারের উপর সামান্য চাপের খেলা।
০৪১৮
বিশেষ এই গুণের জন্যই হাউইৎজার কামানের সঙ্গে জেপার্ডের তুলনা করা হয়। হাউইৎজার হল শক্তিশালী কামানের আধুনিক আর ছোট সংস্করণ। আকাশে উড়ন্ত বস্তুকে ঘায়েল করতে এই ছোট কামানের জুড়ি নেই।
০৫১৮
জেপার্ডও এ ব্যাপারে হাউইৎজারের মতোই মায়া-দয়াহীন। বাংলায় একটি প্রবাদ আছে, 'ছোট হলেও বিষফোঁড়া'। জেপার্ডও শত্রুপক্ষের কাছে বিষফোঁড়ার মতোই যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে।
০৬১৮
ওজন সাকুল্যে সাড়ে ১১ কেজি। এই ওজনের বাজার কিংবা মুদির দোকানের থলি রোজ সকালে বয়ে নিয়ে বাড়ি ঢোকে আম বাঙালি। এ বার ভাবুন, একজন যোদ্ধার হাতে এমন একটি অস্ত্র কতটা সহজে বহনযোগ্য আর একই সঙ্গে ধ্বংসাত্মক হতে পারে!
০৭১৮
অস্ত্রবিদরা বলছেন, জেপার্ড নিয়ে একজন যোদ্ধা অনায়াসে যুদ্ধক্ষেত্রে প্যারাশ্যুটে অবতরণ করতে পারেন। আর নির্ভুল লক্ষ্যভেদে উড়িয়ে দিতে পারেন পর পর নিশানা।
০৮১৮
একটি জেপার্ড রাইফেলে পাঁচ রাউন্ড গুলি থাকে। এই পাঁচ রাউন্ড গুলি যে কোনও লক্ষ্যে পর পর আঘাত করে তাকে শেষ করে দিতে সময় নেয় মাত্র তিন সেকেন্ড।
০৯১৮
পয়েন্ট ৫০ ক্যালিবারের এই গুলির নাম 'রফোস এমকে ২ বুলেট'। যা নিজের থেকে দু’ কিলোমিটার দূরে থাকা লক্ষ্যে নিখুঁত আঘাত করতে পারে। কতটা শক্তিশালী সেই আঘাত? তা বোঝানোরও একটি মাপকাঠি রয়েছে। এই মাপকাঠির নাম ‘মাজল ভেলোসিটি’। প্রতি সেকেন্ডে বা ঘণ্টায় বুলেটের গতি কত, তা দিয়েই মাজল ভেলোসিটি মাপা হয়। জেপার্ডের বুলেটের মাজল ভেলোসিটি প্রতি সেকেন্ডে ৮২০ মিটার।
১০১৮
এ হেন শক্তিশালী ১৫০টি রাইফেল কিছু দিন আগেই ব্রিটেনের সেনাবাহিনী কিনেছে বলে খবর। আন্তর্জাতিক গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, জেপার্ড কিনেছে ব্রিটেনের স্পেশাল এয়ার সার্ভিস, স্পেশাল বোট সার্ভিস এবং স্পেশাল রেকনাইস্যান্স রেজিমেন্ট। ব্রিটেনের এই তিন বাহিনীই কিছু দিন আগে ন্যাটোর অংশ হিসেবে আফগানিস্তানে ছিল।
১১১৮
এ প্রসঙ্গে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য কিছুদিন আগে প্রকাশ্যে এসেছিল। একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, ন্যাটো আফগানিস্তান ছাড়লেও সেখানে রয়ে গিয়েছেন ব্রিটেনের এই তিন বাহিনীর ৪০ জন সেনা। আফগানিস্তানের মাটিতে না থাকলেও পাক-আফগান সীমান্তে ঘাঁটি গেড়ে থাকছেন তাঁরা। প্রতিশোধই তাঁদের লক্ষ্য।
১২১৮
ওই সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে এ-ও বলা হয় যে, কাবুল বিমানবন্দর চত্বরে বিস্ফোরণের জন্য দায়ী যে আই এস কে জঙ্গিগোষ্ঠী, তাদের মাথাকেই শেষ করতে চায় ব্রিটেনের সেনারা। এ ব্যাপারে খোদ তালিবানই তাদের সাহায্য করছে।
১৩১৮
কাবুল বিমানবন্দর চত্বরের ওই হামলায় ১৩ জন আমেরিকান নৌসেনার মৃত্যু হয়েছিল। সংবাদপত্রটি লিখেছিল, এদেরই মৃত্যুরই প্রতিশোধ নিতে চায় ব্রিটেনের বাহিনী।
১৪১৮
আমেরিকার নৌবাহিনীর ওই অফিসারদের সঙ্গে ব্রিটেনের অভিজাত ওই সেনাবাহিনীর বহুদিনের বন্ধুত্ব। বহু প্রতিকূল পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য করেছিল আমেরিকার এই বাহিনী। খাবার জুগিয়েছিল। অসুস্থ হয়ে পড়া সেনাদের সেবা সুশ্রূষাও করেছিল। তারই প্রতিদান দিতে চায় ব্রিটেন।
১৫১৮
প্রতিশোধ নিতে যে ৪০ জনের দল আফগান সীমান্তে রয়েছে বলে দাবি, তাঁরা প্রত্যেকেই বেপরোয়া যোদ্ধা। মারো অথবা মরো নীতিতে বিশ্বাসী।
১৬১৮
জেপার্ডের এক একটি রাইফেলের দাম ৯০ হাজার পাউন্ড। ব্রিটিশ বাহিনী সেই রকম ১৫০টি রাইফেল কিনেছে। খবরটি নিয়ে তাই চিন্তায় আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বুঝতে চাইছেন, আফগান সীমান্তে ব্রিটেন বাহিনীর ৪০ জনের অবস্থানের খবরটি কি তবে সত্যি!
১৭১৮
একই সঙ্গে গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, এই নতুন কেনা জেপার্ড রাইফেলের একটি বড় অংশ সিরিয়া, ইরাকেও মোতায়েন করা হয়েছে। তাই শক্তিশালী আর দামি রাইফেলগুলি হঠাৎ কেন কেনা হল, সেগুলি দিয়ে ব্রিটেনের সেনা কী করতে চায় তা নিয়ে ধন্দে বিশেষজ্ঞরা।
১৮১৮
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য হাঙ্গেরিতে প্রথম তৈরি এই জেপার্ড রাইফেল এত দিন ব্যবহার করত ছ’টি দেশ— ভারত, কানাডা, হাঙ্গেরি, মালি, তুরস্ক এবং রোমানিয়া। এ বার সেই তালিকায় ব্রিটেনের নামও জুড়ল।