জনতার সামনে বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের ভাষণ। ছবি: রয়টার্স।
বিশ্বের ইতিহাসে সেনা অভ্যুত্থানের নজির সবচেয়ে বেশি আছে দক্ষিণ আমেরিকার ওই দেশে। স্বাধীনতার পর থেকে ১৯০ বার সেই দেশে সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করেছে সেনা। কিন্তু ১৯১তম ক্ষেত্রে এল প্রতিরোধ। প্রেসিডেন্ট লুইস আর্চির অনুগামী জনতা এবং মিলিটারি পুলিশের প্রতিরোধ রুখে দিল সেনাপ্রধান জেনারেল হুয়ান হোসে জুনিগার ক্ষমতা দখলের চেষ্টা।
দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ পশ্চিমের উপকূলের দেশ বলিভিয়া ১৮২৫ সাল পর্যন্ত স্পেনের অধীনে ছিল। স্বাধীন পাওয়ার পরে গত এক শতকে বলিভিয়ায় ১৯০ বার সেনা অভ্যুত্থান হয়েছে। ২০১৯ সালে শেষ বার সেনা বলিভিয়ার ক্ষমতা দখল করেছিল। কিন্তু এ বার গণপ্রতিরোধের মুখে পড়ে প্রেসিডেন্ট আর্চিকে সরানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হল।
বুধবার বলিভিয়ার রাজধানী লা পাজ় শহরের প্লাজা মুরিলো চত্বরে জড়ো হয়েছিলেন জেনারেল হুয়ানের অনুগামী সাঁজোয়া ও ট্যাঙ্ক ব্রিগেডের সেনারা। সেখানে হাজির হয়ে হুয়ান স্বয়ং অভ্যুত্থানের ডাক দেন। এর পরেই বিদ্রোহী সেনা প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এবং পার্লামেন্ট চত্বর ঘিরে ফেলে। অন্য দকে, অভ্যুত্থানের চেষ্টার খবর সামনে আসতেই হুয়ানকে বরখাস্ত করে জেনারেল উইলসন সাঞ্চেজ়কে সেনাপ্রধান নিয়োগ করেন প্রেসিডেন্ট আর্চি।
পাশাপাশি, বলিভিয়ার আমজনতার কাছে অভ্যুত্থান ব্যর্থ করার ডাক দেন। টিভি এবং রেডিয়োতে আর্চির সেই বক্তৃতার পরেই শুরু হয় গণপ্রতিরোধ। আর তার মুখে পড়ে শেষ পর্যন্ত নিরস্ত হয় সেনা। প্রেসিডেন্ট অনুগত মিলিটারি পুলিশের পর্যবেক্ষণে শিবিরে ফিরে যান অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সেনারা। তবে বিদ্রোহীদের নেতা জেনারেল হুয়ান আত্মগোপন করেছেন বলে সে দেশের সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, বলিভিয়ায় বার বার সামরিক অভ্যুত্থানের অন্যতম কারণ হিসাবে ‘কফি’কে চিহ্নিত করেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই। কফি উৎপাদনে সারা বিশ্বে বলিভিয়া তৃতীয়। কলম্বিয়া এবং পেরুর পরেই তার স্থান। আর তা নিয়ে অশান্তির সূত্রপাত। ওই কফির উপর বাইরের দেশগুলির ‘নজর’ বহু দিনের। বাইরে থেকে বলিভিয়ার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করে দেশে অশান্তির আবহ তৈরি করা হয় বলে অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy