বেশ কিছু দিন ধরে বারবার কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিচ্ছেন ট্রাম্প। ছবি: এএফপি।
আসন্ন জি-৭ সম্মেলন চলাকালীন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তিনি কাশ্মীর নিয়ে কথা বলবেন বলে জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের বক্তব্য, কাশ্মীরের পরিস্থিতি ‘বিস্ফোরক’ হয়ে রয়েছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনে তিনি যথাসাধ্য করবেন। সে মধ্যস্থতাই হোক অন্য কিছু। একই সঙ্গে ট্রাম্পের বক্তব্য, কাশ্মীরে হিন্দু-মুসলমানের সম্পর্ককে ‘মসৃণ’ বলা চলে না।
বেশ কিছু দিন ধরে বারবার কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিচ্ছেন ট্রাম্প। গত মাসেই পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাতের পরে ট্রাম্প দাবি করেন, মোদী তাঁকে কাশ্মীর নিয়ে মধ্যস্থতা করতে বলেছেন। সেই দাবি সরাসরি অস্বীকার করে ভারত ফের জানিয়ে দেয়, কাশ্মীর একান্ত ভাবেই দ্বিপাক্ষিক বিষয়। সেখানে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অনভিপ্রেত। এর পরে আমেরিকাও কাশ্মীরকে ‘দ্বিপাক্ষিক সমস্যা’ বলে আসছিল। বস্তুত, গত পরশুই মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলার পরেই ইমরানকে সংযত হতে বলেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু গত কাল হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকেরা ভারত-পাক উত্তেজনা নিয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প জানিয়ে দেন, কাশ্মীরকে শান্ত করার লক্ষ্যে তিনি খুশি হয়ে চেষ্টা বা সাহায্য করতে প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘কাশ্মীরের অবস্থাটা খুব জটিল হয়ে রয়েছে। ভারত-পাকিস্তান, দু’দেশই ভারী অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করছে। ব্যাপারটা অনেক দিন ধরেই চলছে। কিন্তু আমার সঙ্গে দু’পক্ষেরই বন্ধুত্বের সম্পর্ক। কিছু দিন আগে ইমরান খান এখানে এসেছিলেন, আর এই সপ্তাহের শেষটা ফ্রান্সে আমি মোদীর সঙ্গে থাকব। আমার তো মনে হয় আমরা সাহায্যই করছি। মধ্যস্থতা করা হোক বা অন্য কিছু— আমি যথাসাধ্য করব।’’ ট্রাম্পের মতে, ভারত আর পাকিস্তানের মধ্যে অস্বস্তির অন্যতম প্রধান কারণ হল, ধর্ম। তাঁর কথায়, ‘‘কাশ্মীর খুব জটিল জায়গা। হিন্দুরাও আছেন, মুসলিমরাও আছেন। আমি বলব না, তাঁদের মধ্যে সম্পর্কটা খুব মসৃণ।’’
প্রশ্ন হল, বারবার মধ্যস্থতায় উৎসাহ কেন দেখাচ্ছেন ট্রাম্প? কূটনীতিকদের মতে, পাক সেনা কাশ্মীর নিয়ে ব্যস্ত থাকলে আফগানিস্তানে তাদের নজর কমবে বলে আশঙ্কা রয়েছে আমেরিকার। সে ক্ষেত্রে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহার ও তালিবানের সঙ্গে শান্তি প্রক্রিয়ার পথ মসৃণ না-ও হতে পারে। বস্তুত, ট্রাম্প যে ভাবে ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক আলোচনা প্রসঙ্গে ‘‘কয়েকশো বছর ধরে আলাদা আলাদা নাম দিয়ে আলোচনা চলেই আসছে’’ বলেছেন, তাতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের কিছুটা ধৈর্যের অভাবও দেখছেন অনেকে। ট্রাম্পের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘ইমরান আর মোদী, দু’জনেই আমার বন্ধু, দু’জনেই দারুণ মানুষ আর দু’জনেই দেশকে ভালবাসেন।’’
ট্রাম্পের এ বারের প্রস্তাব নিয়ে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক দিনভর বিবৃতি দেয়নি। সূত্রের বক্তব্য, ২৬ অগস্ট ফ্রান্সের বিয়ারিৎজ়ে জি-৭ সম্মেলনে ট্রাম্প-মোদী পার্শ্ব-বৈঠকের চেষ্টা যখন চলছেই, তখন সংলাপের চাপান-উতোরে গিয়ে সেই সম্ভাবনাকে বিঘ্নিত করতে চাইছে না দিল্লি। বরং সাউথ ব্লক মনে করছে, মুখোমুখি আলোচনায় কাশ্মীর প্রসঙ্গ উঠলে মোদী অনেক সহজে নিজের অবস্থান তুলে ধরতে পারবেন মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy