পাশাপাশি পর্নোগ্রাফির বিকল্প কেমন হবে, তারও একটি রূপরেখা দিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। নীল ছবির বদলি হিসাবে আরও আকর্ষণীয় কিছু আমজনতার সামনে আনার কথা বলেছেন তিনি। তাঁর ওই মন্তব্যের পর রাশিয়ায় পর্নোগ্রাফি পুরোপুরি নিষিদ্ধ হতে পারে বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। তবে সরকারি ভাবে এই নিয়ে ক্রেমলিনের তরফে কোনও বিবৃতি দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় সংবাদ সংস্থা ‘রাশিয়া টুডে’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মস্কোর অনুষ্ঠানে পুতিন বলেন, ‘‘এটা শুধুমাত্র আমাদের ব্যাপার নয়। পর্নোগ্রাফির বিষ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। অন্যান্য দেশেও এই সমস্যা ব্যাপক আকার ধারণ করছে। তবে রুশ যুবকদের এর থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। তাঁদের সামনে যে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের হাতছানি রয়েছে, পর্নোগ্রাফির জন্য সেটা আমরা নষ্ট হতে দিতে পারি না।’’
এর পরই পর্নোগ্রাফির নেশা ছাড়াতে বিকল্পের কথা বলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। নীল ছবি নিষিদ্ধ করার থেকে আরও আকর্ষণীয় কিছু দিয়ে আমজনতার, বিশেষত যুব সমাজের মন বদলাতে চাইছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘সাধারণ ভাবে সবাই হয়তো পর্নোগ্রাফিকে নিষিদ্ধ করার কথাই বলবেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে পর্ন সাইটের থেকে আরও আকর্ষণীয় কিছু একটা জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। সেটাই পর্নোগ্রাফির আসক্তি কমাতে সাহায্য করবে।’’
রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, দেশে সাংস্কৃতিক বিপ্লব আনার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন পুতিন। গত অক্টোবরে হওয়া ব্রিকস সম্মেলনের আগে ভারতীয় চলচিত্রের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। রাশিয়ায় আরও বেশি সংখ্যায় ভারতীয় সিনেমা দেখার কথাও বলতে শোনা যায় তাঁকে। পাশাপাশি ব্রিকসভুক্ত দেশগুলির চলচ্চিত্র উৎসবের প্রস্তাব করেছেন মস্কোর সর্বময় কর্তা।
কর্মক্ষেত্রে সঙ্গমের কথা বলায় পুতিনের সমালোচনা কম হয়নি। কিন্তু তার পরও নিজের অবস্থান বদলাননি তিনি। বর্তমানে রুশ মহিলাদের জনপ্রতি সন্তানধারণের ক্ষমতা ১.৫-এ নেমে এসেছে। জনসংখ্যা স্থিতিশীল রাখতে এটি ২.১ হওয়া উচিত বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞেরা। তরুণীদের মধ্যে মা হওয়ার প্রবণতা কমার নেপথ্যে পর্নোগ্রাফির আসক্তিকে দায়ী করেছেন তাঁরা।
সমীক্ষক সংস্থা ‘স্ট্যাটিস্টা’র সমীক্ষা অনুযায়ী, বর্তমানে পর্ন সাইটগুলির দর্শকসংখ্যা শত কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এ বছরের মে পর্যন্ত প্রতি মাসে ‘পর্নহাব’ সাইটে চোখ রেখেছেন ৫৪৯ কোটি জন। আর ‘এক্স ভিডিয়ো’র দর্শকসংখ্যা ছিল ৪০২ কোটি। ইন্টারনেট সার্চিংয়ের ক্ষেত্রেও প্রাপ্তবয়স্কদের ভিডিয়ো সর্বাধিক খোঁজার তালিকায় রয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে পর্নোগ্রাফি নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেয় ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। শিশু পর্নোগ্রাফি দেখা এবং ডাউনলোড করে রাখা— দুই-ই শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে উল্লেখ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চের দেওয়া ওই রায়কে ‘মাইলফলক’ বলে মনে করেন আইনজ্ঞেরা। এতে ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা জরিমানার কথাও বলেছে আদালত।
তবে ভারতের আইন অনুযায়ী, ব্যক্তিগত পরিসরে পর্ন ছবি বা ভিডিয়ো দেখা মোটেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। এ ক্ষেত্রে কেউ বিরক্ত বা অস্বস্তি অনুভব করছেন কি না, তা গুরুত্বপূর্ণ। প্রকাশ্যে পর্নোগ্রাফি দেখা নিয়ে কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। আবার এ ব্যাপারে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করার অধিকার রয়েছে পুলিশের।
ডিজিটাল যুগে পর্নোগ্রাফি সহজলভ্য হয়ে যাওয়ায় এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয় জনস্বার্থ মামলা। ২০১৪ সালে শীর্ষ আদালতকে এই নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেশ করে কেন্দ্র। সরকার জানায়, সারা দেশে পর্নোগ্রাফির চার কোটির বেশি ওয়েবসাইট রয়েছে। নীল ছবির রমরমা ঠেকাতে আইন-প্রযুক্তি-প্রশাসনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, তা-ও জানানো হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy