Advertisement
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪
Sheikh Hasina

হাসিনার প্রত্যর্পণ: দিল্লিকে কূটনৈতিক চিঠি পাঠানোর পর ‘ধীরে চলো’ নীতি, অপেক্ষা করতে চায় ঢাকা

দিল্লি থেকে উত্তর পাওয়ার পরই পরবর্তী পদক্ষেপ করতে চাইছে ঢাকা। আপাতত ইউনূসের সরকার দিল্লির জবাবের জন্য অপেক্ষা করতে চাইছে। একটি সময় পর্যন্ত অপেক্ষার পর পুনরায় চিঠি পাঠাতে পারে তারা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৬
Share: Save:

বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারতে কূটনৈতিক চিঠি (নোট ভার্বাল) পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। আপাতত দিল্লি থেকে এ বিষয়ে উত্তর পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে চাইছে মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশাসন। বাংলাদেশি সংবাদমাধ্যম ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, মঙ্গলবার এ কথা জানিয়েছেন সে দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র মুহাম্মদ রফিকুল আলম।

দিল্লিতে কূটনৈতিক চিঠি পাঠানোর পর এই মুহূর্তে কিছুটা ‘ধীরে চলো’ নীতিতেই এগোতে চাইছে বাংলাদেশ। ভারতের থেকে কোনও উত্তর পাওয়ার পরই হাসিনার প্রত্যর্পণের প্রসঙ্গে পরবর্তী পদক্ষেপ করার কথা ভাবছে ইউনূসের প্রশাসন। এ বিষয়ে যে কিছুটা অপেক্ষা করতে হবে বাংলাদেশকে, তা-ও বুঝতে পারছে ঢাকা। পররাষ্ট্র মুখপাত্রের কথাতেও সেই ইঙ্গিত মিলেছে। তাঁর বক্তব্য, বন্দিবিনিময় চুক্তিতে কোনও সময়সীমার কথা উল্লেখ নেই। সে ক্ষেত্রে দিল্লির উত্তর পাওয়ার জন্য তাঁদের অপেক্ষা করতে হবে। একটা সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরও কোনও জবাব না পেলে, ফের এক বার চিঠি পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন ইউনূস প্রশাসনের পররাষ্ট্র মুখপাত্র।

এ ক্ষেত্রে কতটা সময় লাগতে পারে, তা নিয়েও কোনও স্পষ্ট মন্তব্য করতে চাননি তিনি। রফিকুলের কথায়, “যতটুকু সময়ে দুই দেশের সরকার মনে করবে এটি সঠিক, সেই ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” সে ক্ষেত্রে সবে সোমবার দিল্লিতে কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছে ঢাকা। তাই আপাতত সময় ঘিরে কোনও জল্পনা চাইছে না অন্তর্বর্তী সরকার।

জুলাই-অগস্ট মাস ধরে চলা বাংলাদেশের ছাত্র আন্দোলনের গত ৫ অগস্ট জেরে পতন হয় আওয়ামী লীগের সরকারের। সেই দিনই বাংলাদেশ ছাড়েন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাময়িক ভাবে আশ্রয় নেন ভারতে। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়েছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমানের খুনের ঘটনায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ আনা হয়েছে। হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে আগেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল।

অক্টোবরের শেষের দিকে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ‘ফিনান্সিয়াল টাইম্‌স’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারেও ইউনূস তাঁর অন্তর্বর্তী সরকারের অবস্থানের কথা জানিয়েছিলেন। তাঁর বক্তব্য ছিল, এখনই হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরানোর কোনও ভাবনা নেই তাঁদের। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, “হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতা-বিরোধী অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। আদালতের রায় ঘোষণা হলে আমরা ভারতের সঙ্গে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুসারে তাঁকে দেশে ফেরানোর চেষ্টা করব।”

তবে সে দেশের আদালতের রায় ঘোষণার আগেই হাসিনাকে ফেরত চেয়ে ভারত সরকারকে কূটনৈতিক চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। ইন্টারপোলের সঙ্গেও যোগাযোগের কথা ভাবছে ইউনূসের প্রশাসন। দিল্লি ইতিমধ্যে ঢাকার কূটনৈতিক চিঠির প্রাপ্তি স্বীকার করেছে। তবে এ নিয়ে সরকারি ভাবে কোনও মন্তব্য এখনই করতে চাইছে না কেন্দ্র। তবে বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে খবর, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের পাঠানো কূটনৈতিক বার্তার ‘আইনি বৈধতা’ কতটা, খতিয়ে দেখবে নয়াদিল্লি। কোনও অন্তর্বর্তী সরকার অন্য রাষ্ট্রের নির্বাচিত সরকারের কাছে কোনও রাজনৈতিক নেতার প্রত্যর্পণ চাইলে, তার সমস্ত আইনি দিকগুলি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলেই বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে জানানো হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের কূটনৈতিক চিঠির উত্তর অবশ্যই দেওয়া হবে ‘যথাসময়ে’। কিন্তু তার জন্য কোনও তাড়াহুড়ো করা হবে না। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, সব দিক খতিয়ে দেখে জবাব দিতে কয়েক মাস লাগতে পারে।

অন্য বিষয়গুলি:

Bangladesh Sheikh Hasina Muhammad Yunus dhaka
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy