কৃষ্ণাঙ্গ মাইকেল ব্রাউন ও এরিক গারনারের হত্যা নিয়ে ক্ষোভের আগুন এখনও নেভেনি মার্কিন মুলুকে। হত্যায় অভিযুক্ত পুলিশ অফিসাররা নির্দোষ ঘোষিত হওয়ায় প্রতিবাদে পথে নেমেছেন আমেরিকার মানুষ। এই আবহে মঙ্গলবার অ্যারিজোনায় ফের এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসারের গুলিতে প্রাণ হারালেন কৃষ্ণাঙ্গ রুমেন ব্রিসবন। অভিযোগ, ব্রিসবনের কাছে অস্ত্র থাকতে পারে, এই আশঙ্কাতেই তাঁকে গুলি চালিয়ে মেরে ফেলেন ফিনিক্সের এক পুলিশ অফিসার।
পুলিশের সাফাই, মঙ্গলবার বাধ্য হয়েই আত্মরক্ষার্থে গুলি চালিয়েছিলেন ওই অফিসার। কেন? ফিনিক্স পুলিশের মুখপাত্র ট্রেন্ট ক্লাম্পের যুক্তি, ঘটনার সময় একটি কালো বড় গাড়ির ভিতর বসে মাদক পাচারের জন্য দরাদরি করছিলেন ব্রিসবন। ওই অফিসার কাছে গেলে গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন ওই কৃষ্ণাঙ্গ যুবক। সেই সময়ই ওই অফিসার দেখেন গাড়ির পিছন থেকে কিছু একটা বার করে হাতে নিচ্ছেন ব্রিসবন। খটকা লাগে তাঁর। ব্রিসবনের কাছে জিনিসটি চাইলে তিনি তাড়াতাড়ি সেটি প্যান্টের পিছনে গুজে ফেলেন। সন্দেহ আরও বাড়ে অফিসারের। বন্দুক বার করে ফেলেন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে দৌড় মারেন ব্রিসবন। পিছু ধাওয়া করে তাঁকে ধরে ফেলে ওই অফিসার। সেই সময়েই ব্রিসবনের পকেটে বন্দুকের বাটের মতো কিছু জিনিসের অস্তিত্ব টের পান অফিসার। ব্রিসবন পকেটে নিজের বাঁ হাতটি পুরে ফেলায় শুরু হয় ধস্তাধস্তি। সেই সময়ই গুলি চালিয়ে দেন অফিসার।
পর পর দু’টো গুলি। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ৩৪ বছরের ব্রিসবন। পরে ওই অফিসার আবিষ্কার করেন, বন্দুক নয়, চার সন্তানের বাবা, ওই যুবকের পকেটে ছিল ওষুধের বোতল।
পুলিশের রেকর্ড বলছে, অতীতেও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়েছেন ব্রিসবন। তাঁকে হত্যা করেন যিনি, সেই পুলিশ অফিসারের ধারণাও খুব একটা ভ্রান্ত ছিল না। পরে তদন্তকারীরা তাঁর গাড়িটি থেকে একটি আধা স্বয়ংক্রিয় বন্দুক ও মাদকের প্যাকেট উদ্ধার করে। কিন্তু হত্যার মুহূর্তে ব্রিসবন ছিল একেবারে নিরস্ত্র। শুধুমাত্র পুলিশের সন্দেহেই প্রাণ যায় তাঁর।
আর এখানেই প্রশ্ন তুলেছেন ব্রিসবনের আইনজীবী। তাঁর কথায়, “যদি কোনও পুলিশ ওষুধের বোতলকে বন্দুক ভাবলেন। আর তার মাসুল দিতে মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। কী ভাবে একটা ওষুধের বোতল বন্দুকের সমান বড় হতে পারে?” তবে কী মাইকেল ব্রাউন ও এরিক গারনারের মতোই বর্ণবিদ্বেষের শিকার ব্রিসবনও? বর্ণবিদ্বেষের অভিযোগকে সামনে রেখে নিরস্ত্র ব্রিসবনের হত্যা ঘিরেও শুরু হয়েছে প্রতিবাদ। তবে বাকিদের মতো এ ক্ষেত্রেও অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারকে বেকসুর রায় দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা বিক্ষোভকারীদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy