আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
“আমরা সর্বগ্রাসী দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারদের হাতের পুতুল। আমেরিকার সরকার ও তার মিত্র দেশগুলি খুব দ্রুত বিশ্বজুড়ে একনায়কতান্ত্রিক ধ্বংসাত্মক অভ্যুত্থান ঘটাবে।” গায়ে আগুন দেওয়ার আগে এটাই ছিল তাঁর শেষ বার্তা। তার পরেই দাউদাউ করে জ্বলে উঠল আগুন, প্রাণ হারালেন বছর ৩৫-এর ম্যাক্স অ্যাজ়ারেলো। নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটন ক্রিমিনাল কোর্টের বাইরে শুক্রবার গায়ে আগুন দিয়েছেন তিনি। যে কোর্টে চলছে আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে মুখ বন্ধ রাখার জন্য ঘুষ দেওয়ার মামলা। পর্নতারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে এক লক্ষ ৩০ হাজার ডলার ‘ঘুষ’ দেওয়ার ফৌজদারি মামলায় গত বছরের মার্চে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছিল নিউ ইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরি।
কোর্ট হাউসের বাইরে তখন সাংবাদিকদের ভিড়, সার বাঁধা টিভি ক্যামেরা। সেই সব মানুষ ও যান্ত্রিক চোখের সামনে প্রায় কয়েক মিনিট ধরে আগুনে পুড়েছেন ওই যুবক। তার পরেই অবশ্য কোর্ট কর্মী, সাধারণ মানুষ ও পুলিশ পৌঁছে যায় তাঁর কাছে। আগুন নেভানোর চেষ্টা করা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে ওই যুবককে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শুক্রবার আদালতের সামনে হাতে প্ল্যাকার্ড, পিঠে ব্যাকপ্যাক নিয়ে এসে দাঁড়ান ম্যাক্স। ইস্তাহার বার করে ছড়িয়ে দেন। তার পর, হঠাৎ করে গায়ে আগুন দেন তিনি। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পরেও আদালত চত্বরে মৃদু পোড়ো ঘ্রাণ রয়ে গিয়েছে। ম্যাক্সের পোড়া ব্যাকপ্যাক ও একটি রাসায়নিকের ক্যানিস্টার উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ম্যাক্স অ্যাজ়ারেলো ফ্লোরিডার সেন্ট অগাস্টিন শহরের বাসিন্দা। কাউকে কিছু না বলে নিউ ইয়র্ক আসেন তিনি। আত্মঘাতী হওয়ার আগে একটি নিউজ়লেটার প্ল্যাটফর্মে প্রায় ২৭০০ শব্দের প্রতিবেদন লেখেন। তাতে দাবি করেছেন, আমেরিকার এই উত্তরসত্য সময়কালটি আসলে মানুষকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। নিজের সিদ্ধান্তের জন্য আত্মীয়-পরিজনের কাছে ক্ষমাও চান। প্রতিবেদনটি শুরু এ ভাবে, ‘আমার নাম ম্যাক্স অ্যাজ়ারেলো, আমি এক জন তদন্ত সংক্রান্ত গবেষক যে ট্রাম্পের মামলা চলাকালীন গায়ে আগুন দিল।’
তবে, ট্রাম্পের বিরুদ্ধে তাঁর কোনও ক্ষোভ রয়েছে, এমন কিছু তদন্তে খুঁজে পায়নি পুলিশ। ফলে, তাদের দাবি, আত্মঘাতী যুবক সম্ভবত চক্রান্তের তত্ত্বে বিশ্বাস করেন (কনস্পিরেসি থিয়োরিস্ট)। তার সমাজমাধ্যমের লেখালিখিও সেই দিকেই ইঙ্গিত করে। পুলিশের এ-ও ধারণা, মানসিক ভাবে সুস্থ ছিলেন না ম্যাক্স। এর আগেও নানা ঘটনায় প্রায় ১৮০ দিন পুলিশের হেফাজতে ছিলেন তিনি।
ঘটনার ঘনঘটাপূর্ণ এই দিনে আদালতের ভিতরে তখন ট্রাম্প মামলার জুরি নির্বাচিত সম্পন্ন হয়েছে। শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খোলার জন্য ট্রাম্প ঘুষ দিয়েছিলেন কি না, এবং তা ফৌজদারি মামলা হিসাবে গ্রহণযোগ্য কি না, তা স্থির করবে ওই জুরি বোর্ড।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy