‘কল্পিতা মাইক্রো ফিনান্স’ নামের সংস্থা আকাইপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস খুলেছিল। —প্রতীকী চিত্র।
চড়া সুদে জমানো টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়ে একটি ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা (মাইক্রো ফিনান্স) দু’বছর আগে অফিস খুলেছিল গোপালনগরের আকাইপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। বহু মহিলার থেকে সংস্থাটি টাকা তুলে দুর্গাপুজোর আগে অফিস বন্ধ করে দেয়। তার পরে আর অফিস খোলেনি। কর্মীদেরও কারও সঙ্গে গ্রামবাসীরা যোগাযোগ করতে পারেননি। ভুয়ো সংস্থার হাতে প্রতারিত হয়েছেন বুঝে তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তারা পলাতক।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘কল্পিতা মাইক্রো ফিনান্স’ নামে ওই সংস্থা আকাইপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস খুলেছিল। জমানো টাকা ফেরত পাওয়ার আশায় এখন গ্রামবাসীরা রোজই ওই বন্ধ অফিসের সামনে জড়ো হচ্ছেন। সংস্থাটির প্রধান অফিস ছিল নদিয়ার চাকদহে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় শাখা অফিস আছে। পুলিশ চাকদহেও তল্লাশি চালিয়েছে। সেই অফিসও বন্ধ বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গ্রাহকেরা জানান, ওই সংস্থায় টাকা জনা রাখলে ১৪ শতাংশ সুদ মিলবে বলে জানানো হয়েছিল। কৃপা বিশ্বাস নামে আকাইপুরের এক মহিলা বলেন, ‘‘আমার মোট চারটি পাশবই আছে ওই সংস্থার। প্রতিটি বইতে দৈনিক ২০ টাকা করে জমা গিয়েছি এক বছর ধরে। এখন সুদ-সহ টাকা ফেরত পাওয়ার সময় দেখছি অফিস বন্ধ। ওরা পালিয়ে গিয়েছে বুঝতে পেরে থানায় অভিযোগ করেছি।’’
যে বাড়ি ভাড়া নিয়ে অফিস করা হয়েছিল, সেই বাড়ির সদস্য ভানুমতী বালা জানান, ওই অফিস থেকে ঋণও দেওয়া হত। দৈনিক মানুষ ২০ টাকা থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত জমা করতেন। ভানুমতীর কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোর আগে কর্মীরা অফিসে তালা দিয়ে চলে যায়। আমি ফোন করলে বলা হয়, পুজোর সময় অফিস বন্ধ থাকবে। আমিও বাড়ি ভাড়ার টাকা পাইনি।’’
সুদীপ বিশ্বাস নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘আমার স্ত্রীরও ওখানে অ্যাকাউন্ট ছিল। টাকা জমা রেখেছিল। আমার স্ত্রীর মতো কয়েক হাজার মহিলা প্রতারিত হয়েছেন।’’
আকাইপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান মনোজকুমার দেওয়ানের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের অনুমতি না নিয়ে ওই সংস্থা এখানে কারবার চালাচ্ছিল বলে পরে জানা গিয়েছে। প্রতারিতের আমাদের কাছে এসেছিলেন। আমরা তাঁদের পুলিশের কাছে যেতে বলেছি।’’
বেশ কয়েক বছর আগে সারদা-সহ একাধিক বেআইনি লগ্নি সংস্থার ফাঁদে পড়ে হাজার হাজার মানুষ প্রতারিত ও সর্বস্বান্ত হয়েছেন। তার পরেও এক শ্রেণির মানুষের মধ্যে চড়া সুদের প্রলোভনের ফাঁদে পা দেওয়ার প্রবণতা বন্ধ হচ্ছে না বলে অনেকে মনে করছেন। গ্রামাঞ্চলে এ জাতীয় ভুয়ো সংস্থা আবার ফাঁদ পাততে শুরু করেছে, এমন দাবিও শোনা যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy