Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
India-Canada Relation

নিজ্জর-হত্যায় অভিযুক্ত ৪ ভারতীয়ের বিচার কানাডায়, প্রাথমিক তদন্ত ছাড়াই শুরু হল বিচারপ্রক্রিয়া

২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে হত্যা করা হয়। এর পরেই নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে ট্রুডো সরকার।

নিহত খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর।

নিহত খলিস্তানি নেতা হরদীপ সিংহ নিজ্জর। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪৪
Share: Save:

খলিস্তানপন্থী সন্ত্রাসবাদী হরদীপ সিংহ নিজ্জরকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত চার ভারতীয়ের ‘সরাসরি বিচার’প্রক্রিয়া শুরু করল কানাডা। প্রাদেশিক আদালতের পরিবর্তে এ বার বিচার হবে ব্রিটিশ কলম্বিয়া শীর্ষ আদালতে।

‘সরাসরি বিচার’-এর অর্থ হল, অভিযুক্তদের বিচারের আগে কোনও ধরনের প্রাথমিক তদন্ত করা হবে না। তার পরিবর্তে সরাসরি বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হবে। প্রাদেশিক আদালতের পরিবর্তে এ বার ব্রিটিশ কলম্বিয়া শীর্ষ আদালতে ওই মামলার বিচার হবে বলে সরকারি সূত্রে খবর। গত ১৮ নভেম্বর ওই মামলায় প্রথম হাজিরা ছিল। ভার্চুয়ালি আদালতে হাজির করানো হয়েছিল নিজ্জর-হত্যায় মূল অভিযুক্তদের। ২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ওই মামলায় পরবর্তী হাজিরা রয়েছে। এর পরেই শুনানির দিনক্ষণ নির্ধারিত হবে।

নিজ্জর-হত্যায় অভিযুক্তেরা সকলেই ভারতীয় কিংবা ভারতীয় বংশোদ্ভূত। তাঁদের নাম করণ ব্রার, কমলপ্রীত সিংহ, করণপ্রীত সিংহ এবং আমনদীপ সিংহ। আপাতত তাঁরা সকলেই হেফাজতে রয়েছেন। চলতি বছরে একাধিকবার প্রাদেশিক আদালতে হাজির করানো হয়েছে তাঁদের। তাঁদের বিরুদ্ধে খুন এবং খুনের পরিকল্পনার মতো একাধিক অভিযোগ রয়েছে।

খলিস্তানি নেতা নিজ্জরকে ২০২০ সালে ‘সন্ত্রাসবাদী’ বলে ঘোষণা করেছিল ভারত। তার তিন বছর পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার সারের একটি গুরুদ্বারের সামনে তাঁকে হত্যা করা হয়। এর পরেই নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে ভারতের ‘ভূমিকা’ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলে ট্রুডো সরকার। তার পর থেকেই ভারত-কানাডা সম্পর্কে চিড় ধরে। ট্রুডোর ওই অভিযোগের পর, প্রধানমন্ত্রী মোদী কানাডাকে পাল্টা দোষারোপ করেন ভারত ভাগ করতে চাওয়া মৌলবাদী শক্তি খলিস্তানপন্থীদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য। এর মাঝে নিজ্জর খুনে জড়িত সন্দেহে কয়েক জন ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে গ্রেফতার করে কানাডা পুলিশের ইন্টিগ্রেটেড হোমিসাইড ইনভেস্টিগেশন টিম (আইএইচআইটি)।

গত মাসে নিজ্জর-হত্যাকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ভারত-কানাডা সম্পর্ক। গত ১৩ অক্টোবর কানাডা সরকারের তরফে একটি বিবৃতিতে দাবি করা হয়, নিজ্জর হত্যাকাণ্ডে যাঁদের স্বার্থ জড়িত, সেই তালিকায় কানাডায় নিযুক্ত ভারতীয় হাই কমিশনার সঞ্জয়কুমার বর্মা রয়েছেন। এর পরেই সঞ্জয়-সহ কয়েক জন কূটনীতিককে দেশে ফিরিয়ে আনে ভারত। পাশাপাশি, বিদেশ মন্ত্রক ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে বহিষ্কার করে কানাডার কয়েক জন কূটনীতিককে। সেই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী সরকারের তরফে অভিযোগ তোলা হয়, কানাডার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কট্টরপন্থী খলিস্তানি গোষ্ঠীগুলির সমর্থন পাওয়ার জন্য ট্রুডো সরকার নতুন করে নিজ্জর বিতর্ক সামনে নিয়ে আসছে।

১৯৯৬ সালে পাসপোর্ট জালিয়াতি করে কানাডায় গিয়েছিলেন নিজ্জর। প্রথমে ট্রাকচালক হিসাবে কাজ করতেন তিনি। পাকিস্তানে অস্ত্র ও বিস্ফোরক তৈরির প্রশিক্ষণও নিয়েছিলেন। পঞ্জাবের জালন্ধরের বাসিন্দা নিজ্জর এর পরেই গুরনেক সিংহের ছত্রছায়ায় ক্রমশ আন্তর্জাতিক দুনিয়ার অপরাধ জগতে পরিচিতি তৈরি করেন। ১৯৮০ থেকে ’৯০-এর মধ্যে জঙ্গি সংগঠন ‘খলিস্তান কমান্ডো ফোর্স’-এর সঙ্গে যুক্ত হন। ২০১২ সাল থেকে ‘খলিস্তান টাইগার ফোর্স’-এর সঙ্গেও ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলির সঙ্গেও। এর পরেই মাদক ও চোরাচালানের পাশাপাশি নানান সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপ শুরু করেন নিজ্জর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy