বুধবার ভোরে তিনটি গাড়িতে করে এক দল লোক ওই সংবাদপত্রের সাভারের প্রতিনিধি শামসুজ্জামান শামসের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। প্রতীকী ছবি।
রবিবার স্বাধীনতা দিবসে বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রের অনলাইন সংস্করণে ঢাকার উপকণ্ঠে সাভারের একটি ছবি এবং ক্যাপশনে অনেকে আপত্তি জানিয়েছিলেন। মিনিট ১৮ পরেই ছবিটি সরিয়ে নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করা হয়। তার পরে বুধবার ভোরে তিনটি গাড়িতে করে এক দল লোক ওই সংবাদপত্রের সাভারের প্রতিনিধি শামসুজ্জামান শামসের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাঁকে তুলে নিয়ে যায়। শামসের মোবাইল ফোন, কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক এবং কয়েকটি পেনড্রাইভ-ও বাজেয়াপ্ত করে তারা।
কিছু ক্ষণ পরে ফের ওই দলটি ওই সাংবাদিকের বাড়িতে এসে বাড়িওয়ালার কাছে সিআইডি পরিচয় দিয়ে সিজ়ার তালিকায় স্বাক্ষর করিয়ে নিয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘক্ষণ পুলিশ শামসকে আটক করার কথা অস্বীকার করে। দুপুরে বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামাল অন্য একটি অনুষ্ঠানে প্রশ্নের জবাবে ইঙ্গিত দেন— ওই সাংবাদিকের ছবিটি দেখে কেউ মামলা করার পরে সিআইডি ব্যবস্থা নিয়ে থাকতে পারে। তবে কোন মামলা, কী ব্যবস্থা— তার স্পষ্ট জবাব মন্ত্রী দেননি। বিকেলে পুলিশ জানায়, তেজগাঁও থানায় শামসের বিরুদ্ধে ডিজ়িটাল আইনে অভিযোগ হয়েছে।
সংবাদপত্রটির অনলাইন সংস্করণে রবিবার সাভারের স্বাধীনতা স্মারকের দিকে তাকিয়ে থাকা এক কিশোরের ছবি ছেপে ক্যাপশনে দাবি করা হয়, সে বলেছে “পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগব।” এর পরেই একটি টিভি চ্যানেল দেখায়, ওই কিশোরের পরিবারের আর্থিক পরিস্থিতি এমন নয় যে সে ভাত পায় না। তার পরেই সংবাদপত্রটি ছবিটি প্রত্যাহার করে দুঃখপ্রকাশ করে। কিন্তু, শাসক দলের নেতারা দাবি করেন, ওই ছবিতে ‘মহান স্বাধীনতা দিবস’কে শুধু যে খর্ব করা হয়েছে তাই নয়, সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তৈরির চক্রান্ত করা হয়েছে।
তার পরে বুধবার ভোরে সাংবাদিক শামসকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ভাবে অভিযান চালিয়ে সাংবাদিককে আটক করার বিরুদ্ধে সরব হয়েছে সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ এবং গণতন্ত্র মঞ্চ নামে একটি অধিকার সংগঠন। তাদের দাবি, সরকারের মনোমত সংবাদ প্রকাশ না করলে এর আগেও সাংবাদিককে আটক, গ্রেফতার ও হেনস্থা করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy