০৫ নভেম্বর ২০২৪
5

৫৩০০ বছরের পুরনো এই মমিই বলে দিল ওই সময় মানুষ কী খেত

সম্প্রতি ৫ হাজার ৩০০ বছর আগের এই মানুষটি মৃত্যুর আগে শেষবারের মতো যে খাবার খেয়েছিলেন তার হদিশ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৮ ১১:৩৬
Share: Save:
০১ ১৩
১৯৯১ সাল নাগাদ আল্পস পর্বতমালার ওটজ়ালে একটি প্রাকৃতিক মমির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০০ থেকে ৩১০০ শতাব্দীর মধ্যেই পৃথিবীতে বাস করেছিল এই প্রাচীন মানব। এই ‘আইসম্যান’ বা প্রাকৃতিক মমিই বিজ্ঞানীদের উৎসাহের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে বহু বছর ধরে।

১৯৯১ সাল নাগাদ আল্পস পর্বতমালার ওটজ়ালে একটি প্রাকৃতিক মমির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪০০ থেকে ৩১০০ শতাব্দীর মধ্যেই পৃথিবীতে বাস করেছিল এই প্রাচীন মানব। এই ‘আইসম্যান’ বা প্রাকৃতিক মমিই বিজ্ঞানীদের উৎসাহের অন্যতম কারণ হয়ে উঠেছে বহু বছর ধরে।

০২ ১৩
সেই মমি থেকেই গবেষকরা জানার চেষ্টা করেছিলেন, মমিটির বয়স কত। কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল এই ব্যক্তির। একে নাম দেওয়া হয় ওৎজ়ি আইসম্যান। তাঁর পশমের চামড়ার কোট, ছাগলের চামড়ার পোশাক, দাঁতের অংশ, গোড়ালি সবকিছুই  নিয়েই শুরু হয় গবেষণা। জানা যায়, মমির বয়স প্রায় ৫৩০০ বছর।

সেই মমি থেকেই গবেষকরা জানার চেষ্টা করেছিলেন, মমিটির বয়স কত। কী ভাবে মৃত্যু হয়েছিল এই ব্যক্তির। একে নাম দেওয়া হয় ওৎজ়ি আইসম্যান। তাঁর পশমের চামড়ার কোট, ছাগলের চামড়ার পোশাক, দাঁতের অংশ, গোড়ালি সবকিছুই নিয়েই শুরু হয় গবেষণা। জানা যায়, মমির বয়স প্রায় ৫৩০০ বছর।

০৩ ১৩
সম্প্রতি ৫৩০০ বছর আগের এই মানুষটি মৃত্যুর আগে শেষবারের মতো যে খাবার খেয়েছিলেন তার হদিশ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সুষম হলেও খাবারে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ছিল বলেও জানান তারা।

সম্প্রতি ৫৩০০ বছর আগের এই মানুষটি মৃত্যুর আগে শেষবারের মতো যে খাবার খেয়েছিলেন তার হদিশ পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। সুষম হলেও খাবারে উচ্চমাত্রায় ফ্যাট ছিল বলেও জানান তারা।

০৪ ১৩
ওৎজ়ি দ্য আইসম্যান মারা যান হিমবাহের পাশেই। সেখানেই হাজার হাজার বছর ধরে মৃতদেহ সংরক্ষিত ছিল।

ওৎজ়ি দ্য আইসম্যান মারা যান হিমবাহের পাশেই। সেখানেই হাজার হাজার বছর ধরে মৃতদেহ সংরক্ষিত ছিল।

০৫ ১৩
এক দল গবেষক দাবি করেন, ওৎজিকে সম্ভবত পরিচিত কেউ খুন করেছিলেন। ২০০১ সালে ওৎজির বাঁ কাঁধে একটি তিরের সন্ধান মিলেছিল যা দেখে সন্দেহ তাকে খুন করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর ক’দিন আগে ওৎজির ডান হাতে আঘাত লাগে। তবে তাতে তাঁর মৃত্যু হয়নি। যে ভাবে তিরটি এসে তাঁর গায়ে লেগেছিল সেটা আকস্মিক ও অনেকটা দূর থেকে। তা থেকে সন্দেহ, হত্যাকারী তাঁর পরিচিত ও বিশ্বাসঘাতক।

এক দল গবেষক দাবি করেন, ওৎজিকে সম্ভবত পরিচিত কেউ খুন করেছিলেন। ২০০১ সালে ওৎজির বাঁ কাঁধে একটি তিরের সন্ধান মিলেছিল যা দেখে সন্দেহ তাকে খুন করা হয়েছে। তদন্তে জানা গিয়েছে, মৃত্যুর ক’দিন আগে ওৎজির ডান হাতে আঘাত লাগে। তবে তাতে তাঁর মৃত্যু হয়নি। যে ভাবে তিরটি এসে তাঁর গায়ে লেগেছিল সেটা আকস্মিক ও অনেকটা দূর থেকে। তা থেকে সন্দেহ, হত্যাকারী তাঁর পরিচিত ও বিশ্বাসঘাতক।

০৬ ১৩
তাঁর ত্বকের প্রতিটি ভাঁজ পর্যন্ত নথিভুক্ত করা হয়। কিন্তু সমস্যা হয়েছিল অন্য জায়গায়।পাওয়া যাচ্ছিল না পাকস্থলী। পরে সেই পাকস্থলীর অবস্থান নির্ণয় করেন বিজ্ঞানীরা।

তাঁর ত্বকের প্রতিটি ভাঁজ পর্যন্ত নথিভুক্ত করা হয়। কিন্তু সমস্যা হয়েছিল অন্য জায়গায়।পাওয়া যাচ্ছিল না পাকস্থলী। পরে সেই পাকস্থলীর অবস্থান নির্ণয় করেন বিজ্ঞানীরা।

০৭ ১৩
পাকস্থলীতে পাওয়া পরজীবী থেকে তাঁদের ডিম নিয়েও প্রাচীন যুগের বাসিন্দাদের খাদ্যাভ্যাস জানার চেষ্টা করা হয়।

পাকস্থলীতে পাওয়া পরজীবী থেকে তাঁদের ডিম নিয়েও প্রাচীন যুগের বাসিন্দাদের খাদ্যাভ্যাস জানার চেষ্টা করা হয়।

০৮ ১৩
বিজ্ঞানীরা জানান, তার পাকস্থলীতে বুনো ছাগলের মাংসের চর্বি ছিল। এ ছাড়া হরিণের মাংস এবং প্রাচীন আমলের এক ধরনের খাদ্যশস্য এবং কিছুটা বিষাক্ত ফার্ন জাতীয় গাছের অংশও মিলেছে।

বিজ্ঞানীরা জানান, তার পাকস্থলীতে বুনো ছাগলের মাংসের চর্বি ছিল। এ ছাড়া হরিণের মাংস এবং প্রাচীন আমলের এক ধরনের খাদ্যশস্য এবং কিছুটা বিষাক্ত ফার্ন জাতীয় গাছের অংশও মিলেছে।

০৯ ১৩
আইসম্যানের খাবারে চর্বির পরিমাণ ছিল দেখার মতো, ৫০ শতাংশ। আধুনিক খাদ্য তালিকায় খুব বেশি হলে ১০ শতাংশ ফ্যাট থাকে।

আইসম্যানের খাবারে চর্বির পরিমাণ ছিল দেখার মতো, ৫০ শতাংশ। আধুনিক খাদ্য তালিকায় খুব বেশি হলে ১০ শতাংশ ফ্যাট থাকে।

১০ ১৩
ইতালির বোলজ়ানোর ইউর‍্যাক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর মামি স্টাডিজের বিজ্ঞানী ড. ফ্রাঙ্ক মেইক্সনার জানান, এই বরফ যুগের মানুষটির বাস যে স্থানে ছিল তা নিয়ে গবেষণা চলছে। তিনি যেখানে শিকার করছিলেন সেখানে দেহের জন্যে বাড়তি শক্তি দরকার। আর তা পেতে বাড়তি ফ্যাটও দরকার। রুক্ষ্ম পরিবেশে বেঁচে থাকতে প্রয়োজনীয় শক্তি একমাত্র ফ্যাটই দিতে পারে।

ইতালির বোলজ়ানোর ইউর‍্যাক রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর মামি স্টাডিজের বিজ্ঞানী ড. ফ্রাঙ্ক মেইক্সনার জানান, এই বরফ যুগের মানুষটির বাস যে স্থানে ছিল তা নিয়ে গবেষণা চলছে। তিনি যেখানে শিকার করছিলেন সেখানে দেহের জন্যে বাড়তি শক্তি দরকার। আর তা পেতে বাড়তি ফ্যাটও দরকার। রুক্ষ্ম পরিবেশে বেঁচে থাকতে প্রয়োজনীয় শক্তি একমাত্র ফ্যাটই দিতে পারে।

১১ ১৩
সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, তাম্র যুগে মানুষ কী খেত, তার ধারণা মেলে এই প্রাকৃতিক মমির থেকে। বছর বছর ধরে তার দেহ প্রাকৃতিকভাবেই মমিতে পরিণত হয়েছে। প্রাকৃতিক কারণেই পাকস্থলী স্থান বদল করেছিল। তবে দেহের ভেতরেই ছিল।

সম্প্রতি কারেন্ট বায়োলজিতে প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়, তাম্র যুগে মানুষ কী খেত, তার ধারণা মেলে এই প্রাকৃতিক মমির থেকে। বছর বছর ধরে তার দেহ প্রাকৃতিকভাবেই মমিতে পরিণত হয়েছে। প্রাকৃতিক কারণেই পাকস্থলী স্থান বদল করেছিল। তবে দেহের ভেতরেই ছিল।

১২ ১৩
গবেষকরা বলেন, খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট ছিল। কাজেই তা সুষম বলা যায়। শেষ খাবার ছিল মাংস। ইউরোপিয়ান আল্পসে এক ধরনের বুনো ছাগল ছিল, যার নাম আলপাইন আইবেক্স। খুব সম্ভবত এরই মাংস খেয়েছিলেন এই প্রাচীন মানুষ।

গবেষকরা বলেন, খাবারে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট ছিল। কাজেই তা সুষম বলা যায়। শেষ খাবার ছিল মাংস। ইউরোপিয়ান আল্পসে এক ধরনের বুনো ছাগল ছিল, যার নাম আলপাইন আইবেক্স। খুব সম্ভবত এরই মাংস খেয়েছিলেন এই প্রাচীন মানুষ।

১৩ ১৩
তবে তিনি ভেষজ খাবারও খেয়েছিল। চিকিৎসার কাজে কিংবা এমনিতেই। তার পাকস্থলীতে পাওয়া গেছে ব্র্যাকেন নামের এক ধরনের ফার্ন। এটা একটু বিষাক্ত। আবার এমনও হতে পারে, এই উদ্ভিদের পাতায় করে খাবার খেয়েছিলেন। আর ভুল করে কিছু ফার্নও তার পেটে চলে যায়।

তবে তিনি ভেষজ খাবারও খেয়েছিল। চিকিৎসার কাজে কিংবা এমনিতেই। তার পাকস্থলীতে পাওয়া গেছে ব্র্যাকেন নামের এক ধরনের ফার্ন। এটা একটু বিষাক্ত। আবার এমনও হতে পারে, এই উদ্ভিদের পাতায় করে খাবার খেয়েছিলেন। আর ভুল করে কিছু ফার্নও তার পেটে চলে যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:

Share this article

CLOSE