অশান্ত বাংলাদেশে এ বার পেট্রোল বোমার নিশানা হল কলকাতা থেকে ঢাকাগামী ‘মৈত্রী এক্সপ্রেস’। আজ দুপুরে পাবনার ঈশ্বরদি স্টেশনের কাছে ঘটনাটি ঘটে। বাংলাদেশ রেলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর সায়েদুর ইসলাম জানান, ইঞ্জিনের দিকে তিনটি বোমা ছোড়া হয়েছিল। তার জেরে চাকার নীচে বিস্ফোরণ হয়। ইঞ্জিনের ‘অয়েল ট্যাঙ্ক’-এ আগুন লাগলেও নিরাপদে ছিলেন যাত্রীরা। দমকলের ছ’টি গাড়ি আগুন নেভায়। ইঞ্জিন বদলে ঘণ্টা দেড়েক পরে ট্রেনটি ঢাকা রওনা দেয়।
বাংলাদেশে বিরোধী বিএনপি-র ডাকে আজ ৭২ ঘণ্টার বন্ধ শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হিংসার খবর মিলেছে। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, কয়েক দিনের রাজনৈতিক হিংসায় কমপক্ষে ৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। গত দু’দিনে বাস, ট্রাকে একই কায়দায় পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণে তিন শিশু-সহ ন’জন পুড়ে মারা গিয়েছেন।
মাসখানেক ধরে সরকার ও বিরোধী দলের টানাপড়েনে অশান্ত বাংলাদেশ। বাড়ছে সংঘর্ষ। হামলা হয়েছে গাড়িতেও। বাংলাদেশে রাজনৈতিক অচলাবস্থার আঁচ ছড়িয়েছে ত্রিপুরাতেও। প্রতিদিন দু’দেশের মধ্যে লোকজনের যাতায়াত কমছে। প্রভাব পড়েছে বাণিজ্যেও। আগে অনেকে আগরতলা থেকে বাসে ঢাকা হয়ে কলকাতা যেতেন। তাতে বিমান টিকিটের খরচ বাঁচত। গুয়াহাটি হয়ে কলকাতা যাওয়ার দীর্ঘ রাস্তা এড়ানো যেত। আগরতলা চেক-পোস্টের ইমিগ্রেশন সেন্টারের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক কাজল দাস রায় জানান, ডিসেম্বর পর্যন্ত এখান থেকে দিনে ২২০-২২৫ যাত্রী বাংলাদেশে ঢুকতেন। এখন তা কমে হয়েছে ৩০-৪০ জন।
বাংলাদেশের ‘শ্যামলী’ সংস্থার বাস সপ্তাহে দু’দিন আগরতলা আসত। ত্রিপুরা সড়ক পরিবহণ নিগমের (টিআরটিসি) বাস সপ্তাহে দু’দিন যেত বাংলাদেশে। কৃষ্ণনগর টিআরটিসি অফিসে ‘শ্যামলী’ পরিবহণ সংস্থার স্টেশন ইনচার্জ অসীম ঘোষ জানান, মাসখানেক ধরে টিআরটিসি-র বাস বাংলাদেশে যাচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে শ্যামলীর বাস আসছিল সপ্তাহে এক দিন। গত কাল থেকে সেটির পরিষেবাও বন্ধ হয়েছে।
দু’দেশের বাণিজ্যেও সমস্যা হচ্ছে। আগরতলা চেক-পোস্টের আমদানি-রফতানি সমিতির সম্পাদক হাবুল বিশ্বাস বলেন, ডিসেম্বর পর্যন্ত রোজ প্রায় ১৭৫টি ট্রাক আখাউরা সীমান্ত থেকে আগরতলায় আসত। এখন দিনে শ’খানেক ট্রাক ঢুকছে। সেই সংখ্যাটাও কমছে। তিনি জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে ট্রাকচালক, খালাসিদের উপর আক্রমণ হচ্ছে। তাই তাঁরা রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন। আগে ঢাকা থেকে লরি দু’দিনে আগরতলায় পৌঁছে যেত। এখন লাগছে ১০-১২ দিন। সময়মতো বাংলাদেশি পণ্য না আসায় তার প্রভাব পড়ছে খুচরো বাজারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy