সিবিআইয়ের দফতরে ঢোকার মুখে মদন মিত্র।—নিজস্ব চিত্র।
ক্রীড়ামোদীদের মঞ্চ এখন দলের মহা দায়!
তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রের মুক্তির দাবিতে ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির তলায় সকাল দশটা থেকে পাঁচটা ধর্না তো শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই ধর্নামঞ্চে ক্রীড়াবিদদের হাজির করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে দলের নেতাদের। মঞ্চে লোক জড়ো করার দায়িত্ব নিয়েছেন দলের ম্যানেজারেরাই। তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “আমরা নিজেরা দায়িত্ব ভাগ করে নিয়েছি। কত দিন যে ধর্না চলবে, তা তো বুঝতে পারছি না। তাই প্রতিদিন পৃথক এলাকার কোনও একটি সংগঠনকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে মঞ্চ ভরানোর।”
ওই নেতা জানান, বৃহস্পতিবার মঞ্চ ভরানোর দায়িত্বে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তিনি বারাসত, বসিরহাট, কামারহাটি থেকে মহিলা কর্মীদের নিয়ে এসেছেন। আজ, শুক্রবারের দায়িত্ব বিধাননগরের বিধায়ক সুজিত বসুর। বিধাননগর, দমদম আর দক্ষিণ দমদম থেকে লোক আনা হবে বলে নেতাটি জানিয়েছেন। জ্যোতিপ্রিয়বাবু অবশ্য এ-সব নিয়ে কোনও মন্তব্যেই গেলেন না। তাঁর যাবতীয় বক্তব্য বিজেপির বিরুদ্ধে। তিনি বললেন, “বিজেপি এ রাজ্যে নাবালক। জানে না, সিবিআই-টিবিআই বাংলার মাটিতে চলবে না। মানুষই জবাব দিয়ে দেবে।” তবে ধর্না মঞ্চের থেকে জবাব দেওয়ার জন্য ক্রীড়াবিদ কোথায়? এ দিন মঞ্চে ক্রীড়াবিদ বলতে তৃণমূলের ঘরের ফুটবলার গৌতম সরকার, গৌরাঙ্গ বন্দ্যোপাধ্যায়, সাইক্লিস্ট প্রণতি সাহা, ব্যায়ামবিদ তুষার শীল ছাড়া তেমন কাউকে দেখা গেল না। তবে ক্রীড়াবিদ হিসেবে মুখ্যমন্ত্রীর ছোটভাই বাবুন বন্দ্যোপাধ্যায় বক্তৃতা দেন। মঞ্চ ভরাতে ও সভায় লোক জড়ো করতে তৃণমূল ছাত্র এবং মহিলা সংগঠনের শ’দুই কর্মীকে আসতে হয়। পরিস্থিতি এমনই, ধর্নামঞ্চ শুরু করতে জ্যোতিপ্রিয়বাবুকে নিজে হাতে শতরঞ্চিও পাততে হয়েছে।
বেলা তিনটে নাগাদ মঞ্চ থেকে নেমে আসছিলেন দু’জন মহিলা কর্মী। সঙ্গে সঙ্গে নীচে দাঁড়িয়ে থাকা এক মহিলার কড়া নির্দেশ, “মঞ্চ থেকে নেমো না। বালুদা (খাদ্যমন্ত্রী) নিষেধ করেছেন।” বিকেল চারটে নাগাদ মঞ্চ প্রায় ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে দেখে এক বক্তা তো বলেই ফেললেন, “অনেকেই বনগাঁ, সন্দেশখালির প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে এসেছেন। তাই হয়তো একটু তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছেন। তাই বলে ভাববেন না, আমাদের উৎসাহ, উদ্দীপনায় ঘাটতি পড়েছে।” শেষমেশ মহিলাকর্মীরা অবশ্য চারটেতেই ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ গেয়ে সভা শেষ করে দিলেন। বাধ্য হয়ে ফের আসরে নামলেন বাবুন, গৌতম, গৌরাঙ্গরা। আরও এক ঘণ্টা তাঁদের বক্তৃতা দিয়ে সভা শেষ হল বিকেল পাঁচটায়। তখন অবশ্য শ্রোতার সংখ্যা নগণ্য।
ধর্নামঞ্চ সাজাতে ব্যস্ত দলীয় কর্মীরা। হাত লাগিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও।
বৃহস্পতিবার কলকাতার ময়দানে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
তৃণমূলের ধর্না মঞ্চে যখন ভাঙা হাট, তখন রাজ্যে রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে উত্তর কলকাতা জেলা কংগ্রেস পথে নামল। সারদা-কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রীকে সিবিআইয়ের জেরার দাবিতে অমিতাভ চক্রবর্তী, সুমন সিংহের নেতৃত্ব হেদুয়া থেকে মানিকতলা পর্যন্ত মিছিল করে কংগ্রেস। পেশোয়ারে তালিবানি হামলায় নিহত স্কুল ছাত্রদের স্মৃতিতে এ দিন জেলায় জেলায় তাঁরা মানব বন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক মনোজ চক্রবর্তী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy