Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

পঠনপাঠন স্তব্ধ করে কর্মবিরতি মিছিল, অনশন

দিন দুয়েক আগেই ‘যা করার আপনাদের করতে হবে’ বলে শিক্ষকদের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তাঁর আবেদন যে শিক্ষকদের বিশেষ নাড়া দিতে পারেনি, ফের তা বুঝিয়ে দিলেন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের একাংশই। কোথাও নানান দাবিদাওয়ায় পার্শ্বশিক্ষকদের মিছিল-বিক্ষোভ-অনশন। কোথাও বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতায় কর্মবিরতি শিক্ষকদের। সব মিলিয়ে শুক্রবার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে বন্ধ রইল পঠনপাঠন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:০৮
Share: Save:

দিন দুয়েক আগেই ‘যা করার আপনাদের করতে হবে’ বলে শিক্ষকদের দায়বদ্ধতার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু তাঁর আবেদন যে শিক্ষকদের বিশেষ নাড়া দিতে পারেনি, ফের তা বুঝিয়ে দিলেন স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের একাংশই।

কোথাও নানান দাবিদাওয়ায় পার্শ্বশিক্ষকদের মিছিল-বিক্ষোভ-অনশন। কোথাও বা ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে জটিলতায় কর্মবিরতি শিক্ষকদের। সব মিলিয়ে শুক্রবার বিভিন্ন বিদ্যালয় ও কলেজে বন্ধ রইল পঠনপাঠন। সেই সঙ্গে বহাল রয়েছে এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকপদ প্রার্থীদের অনশনও।

পাঁচ দফা দাবিতে এ দিন হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে পার্শ্বশিক্ষকদের মিছিল আসে কলেজ স্ট্রিটে। বেলা ৩টে থেকে ওই শিক্ষকেরা সেখানে বিক্ষোভ চালিয়ে যান। মূল দাবি, পূর্ণ সময়ের কাজ দিতে হবে। সেই সঙ্গে পার্শ্বশিক্ষকদের দাবি, প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে তাঁদেরও। দিতে হবে প্রশিক্ষণ। এই সব দাবিদাওয়া আদায়ের জন্যই পথে নামতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা। অনশনও করছেন তাঁদের এক দল সঙ্গী। রাজ্য পার্শ্বশিক্ষক সমন্বয় সমিতির তরফে রোমিউল ইসলাম বলেন, “দাবি না-মেটা পর্যন্ত অনশন-আন্দোলন চলবে।” তিনি জানান, অন্তত ১৫০ জন অনশন শুরু করেছেন।

লাগাতার অনশনে তিনি যে আতান্তরে পড়েছেন, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় কয়েক দিন আগে তা কবুল করেছেন। কিন্তু তাঁর স্বস্তির উপায় দেখা যাচ্ছে না। এসএসসি-র পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষকপদ প্রার্থী ও পার্শ্বশিক্ষকদের অনশনের পাশাপাশি রামমোহন কলেজে শুরু হয়েছে শিক্ষকদের কর্মবিরতি। কিন্তু কেন?

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের তরফে গৌরীপ্রসাদ দত্ত জানান, রামমোহন কলেজের আগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষিকা শাশ্বতী দাশগুপ্ত অবসর নিয়েছেন গত ৩০ নভেম্বর। তাঁর জায়গায় কে আসবেন, তা নিয়ে টানাপড়েন চলছে। কলেজের এক শিক্ষিকাকে টিচার ইনচার্জ বা টিআইসি হিসেবে বেছে নিয়েছিল পরিচালন সমিতি। কিন্তু রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতর এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাতে আপত্তি জানিয়ে অন্য এক শিক্ষককে টিআইসি-পদে মনোনীত করে। কেন?

কারণ, টিআইসি হিসেবে মনোনীত দু’জনেরই চাকরিতে যোগদানের তারিখ এক। কিন্তু যিনি আগে অবসর নেবেন, আদালতের রায় মেনে তাঁকেই অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা। বিশ্ববিদ্যালয় এবং উচ্চশিক্ষা দফতর সেই যুক্তিতেই কলেজের নির্বাচিত শিক্ষিকাকে বাদ দিয়ে অন্য এক শিক্ষককে টিআইসি করতে বলে। মামলা করে কলেজ পরিচালন সমিতি। আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা জানান, ৬ ফেব্রুয়ারি আদালত উচ্চশিক্ষা দফতরকে একটি নির্দেশ দেয়। তাতে জানানো হয়, সরকারি নির্দেশনামা খতিয়ে দেখে ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে অচলাবস্থা কাটিয়ে দ্রুত ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। তার ভিত্তিতে ১০ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষকের নাম পাঠায় উচ্চশিক্ষা দফতর। কিন্তু তার পরেও ওই পদে কোনও নিয়োগ না-হওয়ায় শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মীরা সঙ্কটে পড়েছেন।

গৌরীবাবু জানান, ডিসেম্বর থেকে কেউ বেতন পাননি। অন্তত ১১ জন অবসর নেবেন। তাঁদের অবসরের প্রক্রিয়াও থমকে গিয়েছে। কলেজ সার্ভিস কমিশন (সিএসসি) থেকে আসা প্রার্থীদের নিয়োগও করা যাচ্ছে না। তাই পথে নেমেছেন তাঁরা।

রামমোহন কলেজের চেয়ারপার্সন সুমিতা দাস বলেন, “উচ্চশিক্ষা দফতরের নির্দেশের বিরুদ্ধে আমরা আইনি পথে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিক্ষকদের বেতন-সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”

শিক্ষামন্ত্রী বুধবার শিক্ষকদের অবসর, নিয়োগ বিষয়ে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়েছিলেন। বলেছিলেন, অবসরের অন্তত কয়েক মাস আগে থেকে সেই প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। কিন্তু কলকাতারই একটি গুরুত্বপূর্ণ কলেজের এই অচলাবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, কলেজগুলি শিক্ষামন্ত্রীর নির্দেশ আদৌ পালন করছে কি?

অন্য বিষয়গুলি:

teacher appointment agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy