— প্রতীকী চিত্র।
মহারাষ্ট্রের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’— ‘লড়কি বহিন’ প্রকল্পে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে মাসে দেড় হাজার টাকার খয়রাতি ছিলই। তার সঙ্গে ‘বাঁটেঙ্গে তো কাটেঙ্গে’ থেকে ‘এক হ্যায় তো সেফ হ্যায়’-এর স্লোগান তুলে হিন্দু ভোটব্যাঙ্ককে এককাট্টা করার চেষ্টা। বিশেষত ওবিসি ভোটব্যাঙ্ককে অটুটরাখার কৌশল নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। এই অঙ্কেই একনাথ শিন্দে, অজিত পওয়ারকে সঙ্গে নিয়ে মহারাষ্ট্রে ক্ষমতা ধরে রাখার আশা করছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
একই ভাবে ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেনের নেতৃত্বাধীন জেএমএম-কংগ্রেসের জোট সরকারকে সরিয়ে ক্ষমতায় আসতে মরিয়া বিজেপির প্রধান অস্ত্র, বাংলাদেশিদের বেআইনি অনুপ্রবেশের ধুয়ো তুলে ভোটের ধর্মীয় মেরুকরণ। তার সঙ্গে হেমন্ত সোরেন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকেও অস্ত্র করছে বিজেপি।
বুধবার মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনের ২৮৮টি আসনে ভোটগ্রহণ। একই সঙ্গে ঝাড়খণ্ড বিধানসভার ৮১টি আসনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ৩৮টি আসনে ভোটগ্রহণ।
মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস তথা বিরোধী জোট মনে করছে, লোকসভা নির্বাচনের মতো বিধানসভা ভোটেও কংগ্রেস, শরদ পওয়ার, উদ্ধব ঠাকরের মহাবিকাশ আঘাড়ী বিজেপির মহায্যুতি জোটকে টেক্কা দেবে। লোকসভায় মহারাষ্ট্রের ৪৮টি আসনের মধ্যে ৩১টি আসনই আঘাড়ী জোট পেয়েছিল। বিজেপি নেতারা মানছেন, ‘লড়কি বহিন’ প্রকল্পে মহিলাদের অ্যাকাউন্টে গত পাঁচ মাসে সাড়ে সাত হাজার টাকা গিয়েছে।তার ফলে লোকসভা ভোটের পরে অনেকখানি হাওয়া ঘুরেছে। না হলে বিজেপি জোট ধুয়ে যেত। কিন্তু শুধু মহিলা ভোটে ভরসা না করে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের কৌশলও নিয়েছে বিজেপি। বিজেপিকে স্বস্তি দিয়ে আরএসএস-ও ফের সক্রিয়। ভাল বর্ষা হওয়ার ফলে কৃষকদের ক্ষোভও তেমন সমস্যা হবে না বলে বিজেপির আশা। সেই সঙ্গে রাজ্যের যে ৭৬টি আসনে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের মুখোমুখি লড়াই, তার সিংহভাগ জেতার আশা করছে বিজেপি।
বিজেপি নেতাদের একমাত্র ভয়, শরদ পওয়ারের মস্তিষ্ক। মরাঠা সংরক্ষণ আন্দোলনের সুযোগ তুলে তিনি মরাঠা ভোটের সিংহভাগ বিজেপির থেকে কেড়ে নিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে দলিত, মুসলিমের সঙ্গে মরাঠা ভোটএকজোট হলে মহাবিকাশ আঘাড়ী ফের ক্ষমতায় ফিরতে পারে। শরদ পওয়ারের শিবির মনে করছে, হরিয়ানার ভোটে কংগ্রেস হারলেও মহারাষ্ট্রে ওবিসি ভোট পুরোপুরি বিজেপির ঝুলিতে যাবে না।
ঝাড়খণ্ডে হেমন্ত সোরেন সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও বেআইনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশে মদতকে হাতিয়ার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ। মুসলিমরা ঝাড়খণ্ডের জমি দখল করে নিচ্ছে বলে প্রচার করতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের কোপের মুখে পড়তে হয়েছে বিজেপিকে। উল্টো দিকে হেমন্ত সোরেনও ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর ধাঁচে তাঁর ‘মাইয়া সম্মান যোজনা’-য় মহিলাদের মাসে এক হাজার টাকা অনুদানকে হাতিয়ার করেছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর মতো তিনিও মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা, রাজ্যের পাওনা আটকে রাখার অভিযোগ তুলছেন। তার মোকাবিলায় বিজেপি ‘গোগো-দিদি’ যোজনা চালু করে মাসে ২১০০ টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
তবে বিজেপিকে চিন্তায় ফেলেছেন ঝাড়খণ্ডের তরুণ তুর্কি জয়রাম ‘টাইগার’ মাহাতো। কুড়মি মাহাতো সম্প্রদায়ের নেতা জয়রাম ঝাড়খণ্ডের পরিচিতিসত্তার রাজনীতিকে হাতিয়ার করছেন। রাজ্যের জনসংখ্যার ২২ শতাংশ কুড়মি মাহাতো, আদিবাসীদের পরে সবথেকে বড় অংশ এটি। অন্তত ৩৫টি আসনে নির্ণায়ক ভূমিকা নিতে পারেন কুড়মি মাহাতোরা। কংগ্রেস নেতাদের মতে, জয়রাম মাহাতো সরকার-বিরোধী ভোটে ভাগ বসালে জেএমএম-কংগ্রেস জোটেরইলাভ হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy